অনলাইন ডেস্ক : প্রবাসীরা যাতে আরও সহজে এবং বৈধভাবে তাদের কষ্টার্জিত অর্থ দেশে পরিবারের কাছে পাঠাতে পারেন, সে সুবিধা সৃষ্টির নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আজ বৃহস্পতিবার ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সেন্টেনিয়াল কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র’সহ দেশের বিভিন্ন উপজেলায় নির্মিত ২৪টি কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবন থেকে যুক্ত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়কে উদ্দেশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘বিভিন্ন দেশে আমাদের যারা কর্মরত শ্রমিক, তাদের অর্থ প্রেরণে যাতে সুবিধা হয়, সেই সুবিধাটা সৃষ্টি করে দিতে হবে। কারণ আমি জানি, অনেক জায়গায় তারা কাজ করে, কিন্তু সেখানে কোনো মানি এক্সচেঞ্জ বা ব্যাংকের সুবিধা তারা পায় না যে ব্যাংকের মাধ্যমে তারা টাকা পাঠাবে। তাদের নির্ভর করতে হয় হুন্ডির ওপর।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এর ওপর আমাদের দেশের কিছু লোক আছে, বিদেশে এবং আমাদের বিরোধী দলেরও কিছু এজেন্ট আছে, তারা নানাভাবে মানুষকে উসকায়। যেখানে যেখানে আমাদের কর্মীরা কাজ করে, তাদের উসকায় যেন ব্যাংকের মাধ্যমে না পাঠিয়ে হুন্ডির মাধ্যমে পাঠায়। তাতে তাদের লাভ হয়।এই যে আমাদের শ্রমিকদের কষ্টার্জিত অর্থ, এই অর্থটা আসলে তারাই পকেটস্থ করে এবং তাদের কিছু টাকা দেশে পাঠায়।’

ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা পাঠানো নিরাপদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘হয়তো ১/২ পয়সা বা ২/১ টাকা কম-বেশি থাকতে পারে, কিন্তু টাকাটা নিরাপদে তার ব্যাংকে জমা হয়, সেই ব্যাংক থেকেই তার পরিবারকে প্রয়োজনীয় অর্থ সরবরাহ করতে পারবে। বাকি টাকা তার ব্যাংকে জমা থাকবে।’

প্রবাসীদের টাকা পাঠানেসা সহজ করতে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংককে উদ্যোগ নেওয়ার নির্দেশনা দিয়ে তিনি বলেন, ‘তাদের (প্রবাসীদের) অর্থ প্রেরণের সুবিধার জন্য প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক… বিভিন্ন দেশে যেখানে আমাদের শ্রমঘন দেশ, সেখানে বিভিন্ন শাখা অথবা মানি এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থা করা হবে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করতে হবে এবং ব্যাংকের সাথেও আলোচনা করতে হবে।’

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কেও ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রত্যেকটা কূটনৈতিক মিশনে আমাদের যে দূতাবাস আছে, তাদের একটা নির্দেশ দেওয়া… এটা আমরা আগে একবার করেছিলাম, কিন্তু এটা আরো ভালোভাবে করতে হবে। অন্তত একজন অফিসার নিয়োগ করে দেবেন সেখানে, আমাদের যারা শ্রমিক কল্যাণের জন্য কর্মরত, তারা, অর্থাৎ প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যৌথভাবে কাজ করবেন। সেখান থেকে যেসব এলাকায় আমাদের শ্রমিকরা কাজ করে, তাদের জন্য একজন এজেন্ট নিয়োগ করে দিতে হবে।’

প্রবাসীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘যারা তাদের অর্থটা যথাযথভাবে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের মাধ্যমে অথবা আমাদের অন্য শিডিউলড ব্যাংকের মাধ্যমে প্রেরণ করতে পারেন, তাদের টাকা প্রেরণের যে দুঃশ্চিন্তাটা, সেটা থাকবে না।’

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ, সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আনিসুল ইসলাম মাহমুদ উপস্থিত ছিলেন।