অনলাইন ডেস্ক : ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তৃতীয়বারের মতো দায়িত্ব নিতে যাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি। শনিবার (৮ জুন) তার শপথ নেওয়ার কথা ছিল। তবে এই শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান পিছিয়ে যাচ্ছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বৃহস্পতিবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, শনিবারের বদলে মোদি পরদিন রোববার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন।

বুধবার নরেন্দ্র মোদিকে বিজেপির নেতৃত্বাধীন জোট এনডিএ-এর প্রধান হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। যার মাধ্যমে মোদির প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পথ সুগম হয়। আগামী রোববার যখন মোদি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবেন তখন তিনি জওহরলাল নেহরুর পর দ্বিতীয় ভারতীয় হিসেবে টানা তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হওয়ার অনন্য কীর্তি গড়বেন।

মোদির শপথ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দক্ষিণ এশিয়ার বেশ কয়েকটি দেশের প্রধানমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্টকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমাসিংহে ইতোমধ্যে নিশ্চিত করেছেন তারা মোদির শপথ অনুষ্ঠানে থাকবেন।

গত মঙ্গলবার ভারতের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়। ফলাফল ঘোষণা শেষে দেখা যায় মোদির বিজেপি এবারের নির্বাচনে ২৪০টি আসনে জয় পেয়েছে। যেখানে ২০১৯ সালে তারা একাই ৩০৩টি আসন পেয়েছিল।

বিজেপি ২৪০টি আসন পাওয়ার অর্থ হলো তারা লোকসভায় এবার আর সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। ফলে মোদি এবার এনডিএ জোটের প্রার্থী হিসেবে প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন।

বিজেপির এ এনডিএ জোটের সবচেয়ে বড় শরিক হলেন নীতিশ কুমার এবং চন্দ্রবাবু নাইডু। তাদের দল যথাক্রমে ১৬ এবং ১২টি আসন পেয়েছে। সরকার গঠনে এই দুইজনের দল মোদিকে বড় সমর্থন দিচ্ছেন। এর বদলে অবশ্য নীতিশ চার পূর্ণমন্ত্রী ও একটি প্রতিমন্ত্রী পদ এবং চন্দ্রবাবু তিনটি পূর্ণমন্ত্রী ও দুটি প্রতিমন্ত্রীর পদ চেয়ে তদবির করেছেন। শুধু তাই নয়, স্পিকার পদও চাইছেন চন্দ্রবাবু।

বিজেপির সমস্যা বাড়িয়ে বিহারের চিরাগ পাসোয়ানের এলজেপি, জিতনরাম মাঁঝির হাম, উত্তরপ্রদেশের আপনা দল, মহারাষ্ট্রের একনাথ শিন্দের নেতৃত্বাধীন শিবসেনা নিজেদের প্রাপ্য বুঝে নিতে শুরু করেছে। লক্ষ্য বিজেপিকে চাপে রেখে বেশি সংখ্যক মন্ত্রিত্ব আদায় করে নেওয়া।

ভোটের আগে নীতিশের সঙ্গে বিজেপির যে সমঝোতা হয়েছিল, তাতে এনডিএ ক্ষমতায় এলে নীতিশকে তিনটি পূর্ণমন্ত্রীর পদ দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পরিস্থিতি বুঝে সংখ্যাগরিষ্ঠতার অভাবে হাঁসফাঁস করা বিজেপির কাছে চারটি পূর্ণমন্ত্রীর পদ চেয়েছেন নীতিশ। সূত্রের মতে, মূলত পরিকাঠামো সংক্রান্ত মন্ত্রণালয়গুলোর দিকে নজর নীতিশের। যার মধ্যে রয়েছে রেল, গ্রামোন্নয়ন, জলসম্পদের মতো মন্ত্রণালয়। এছাড়া বিশেষ আর্থিক প্যাকেজের পাশাপাশি ২০২৩ সালে বিহারে নীতিশ আর্থ-সামাজিক সমীক্ষার পরে রাজ্যের প্রায় ৯৫ লাখ পিছিয়ে থাকা পরিবারকে দুই লাখ টাকা করে আর্থিক সাহায্য করার কথা ঘোষণা করেছেন। আগামী বছর বিহারে নির্বাচন। তাই পাঁচ বছরের ওই প্রকল্পে কেন্দ্র যাতে চলতি অর্থবর্ষে নিজেদের অংশের টাকা বাড়ায়, সেই দাবি জানিয়েছেন নীতিশ।

অন্যদিকে চন্দ্রবাবুর দাবি, তিনটি পূর্ণমন্ত্রী ও দুটি প্রতিমন্ত্রী পদ। নীতিশের মতোই জলসম্পদ, গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রণালয়কে নিজেদের এমপিদের দেখতে চাইছেন চন্দ্রবাবু। তালিকায় রয়েছে সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ও। এছাড়া অন্ধ্রপ্রদেশ ভেঙে তেলঙ্গানা হওয়ায় রাজ্যের আর্থিক চাপ সামলাতে বিশেষ আর্থিক প্যাকেজের দাবি করে প্রায় এক দশক ধরে সরব নাইডু। সূত্রের মতে, এই মুহূর্তে রাজ্যের মাথায় সাড়ে তিন লাখ কোটি টাকার দেনা। যা মেটাতে বিশেষ আর্থিক প্যাকেজের দাবি জানিয়েছেন তিনি।

সূত্র: এনডিটিভি