সোনা কান্তি বড়ুয়া : মুসলমান যে মানব, আদিবাসী জুম্ম জাতি এবং অখন্ড মানব জাতি সেই মানব! গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ কী ধর্মান্ধ মৌলবাদী গোষ্ঠী অবৈধভাবে দখল করছে? ইসলাম ধর্মে রিপুর তাড়নায় মানুষ যেন বিভ্রান্তি, অসত্য, অনৈতিক কর্মে প্রবৃত্ত না হয়, সুপথ যেন পরিত্যাগ না করে কখনো, পবিত্র কুরআন শরীফের শিক্ষা মূলত ইহাই। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশে পাঁচ লক্ষ হিন্দুবৌদ্ধ খৃষ্ঠান সেটেলাররা ছিল নষ, সরকার মুসলমান সেটেলার নিয়ে আসে কেন? ইসলাম ধর্মের নামে কাপ্তাই বাঁধে সব হারানো পাহাড়ীদের ভিটে-মটি কেড়ে নিয়ে ধ্বংস করতে পার্বত্য চট্টগ্রামে ইসলামীকরণ! ধারাবাহিকভাবে করতে ১৯৭৮ থেকে ১৯৮১ সালের মধ্যে পাহাড়ীদের বেঁচে থাকার অধিকার ধ্বংস করতে জেনারেল জিয়াউর রহমান সরকার সমতল জেলা থেকে প্রায় পাঁচ লক্ষ মুসলমান বাঙালি সেটেলার পাহাড়ি অঞ্চলেনিয়ে আসে, যেখানে আদিবাসী জুম্ম জাতি কয়েক শতাব্দী ধরে বসবাস করছে এবং এই সেটেলাররা আদিবাসীদের ব্যাপক ভূমি অবৈধভাবে দখল করে চলেছে।
ফলে দুর্নীতি দমন কমিশন শ্বেতপত্রে বাংলাদেশ নিয়ে মৌলবাদী গোষ্ঠীর এতো উলঙ্গ দর্প বাংলাদেশে কেন? সকল ধর্মের বিশ্বমৈত্রীতে মুসলমান রাজনীতির বিদ্বেষটাই ধর্মান্ধদের অধর্ম! পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমির সমস্যা আরও জটিল হয়ে ওঠে। বাংলাদেশে মুসলমান রাজনীতির ভীতির কবলে হিন্দু, বৌদ্ধ ও চাকমা, মারমাসহ ১৪ উপজাতি! পার্বত্য চট্টগ্রামে আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জানমালের নিরাপত্তা বিধানে কার্যকর ও দৃশ্যমান উদ্যোগ করতে হবে। বাংলাদেশের রাজনীতিকে পাকিস্তানিকরণ! মনুষ্যত্ব কেড়ে নিতে পাহাড়ীদের ভিটে-মটিতে পাঁচ লক্ষ মুসলমান সেটেলার!
১৯৬০ সালে কোন আইনে পাকিস্তান সরকার পাহাড়ীদের বেঁচে থাকার অধিকার ধ্বংস করতে পুরানো রাঙামাটি শহর পানির নীচে ডুবিয়ে দিয়ে কাশ্মীরের ও প্যালেষ্ঠাইনের মানুষের অধিকারের জন্য কুমিরাশ্র“ বর্ষন করে! বাংলাদেশী আদিবাসী জুম্ম জাতি এবং বৌদ্ধগণ বিষাদ সিন্ধু বুকে নিয়ে বিরাজমান; একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হবার ১০ বছর আগে পাকিস্তান সরকার ইচ্ছা করে গুঁড়িয়ে দিয়েছে চাকমা রাজবাড়ীসহ পুরানো রাঙামাটি শহর! মারমা, মুরং, খ্যাং সকল পাহাড়ীদের মাথার উপরে থাকা এক চিলতে টিনের ছাউনি দেয়া বসত বাড়ি। পানির অতল তলে তলিয়ে দিয়েছে গ্রাম্য বাজার, লোকালয়। কিশোরির চিরচেনা স্কুল, বুদ্ধমন্দির, বিভিন্ন ধর্মের উপাসনালয় এবং স্বপ্নের সিঁড়ি সব কিছু সলিল সমাধি।
আমাদের অন্তরের সকল ক্লেদ, কালিমা, হিংসা-দ্বেষ দূর হইয়া যাক। আমাদের জীবন-মরণ, নামাজ ও কোরবানি- সকল কিছুই এক আল্লাহর জন্য নিবেদিত হউক। ত্যাগ ও একনিষ্ঠতার শিক্ষাই চারিদিকে ছড়াইয়া পড়ুক। সকলকে জানাই পবিত্র ঈদুল আজহার অনাবিল শুভেচ্ছা- ঈদ মোবারক! কী দুর্ভাগ্য! উন্নয়ন-অগ্রগতির পথকে রুদ্ধ করতে ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করে বাঙালির ইচ্ছাশক্তিকে পঙ্গু করে দেওয়া হয়। মুজিব হত্যার মূল চক্রী অনৈতিক কর্মে প্রবৃত্ত খন্দকার মোশতাক, জেনারেল জিয়াউর রহমান ও জেনারেল এরশাদ- এই তিন শাসক মিলে ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশের রাজনীতিকে পাকিস্তানিকরণ করেছেন। বঙ্গবন্ধুর রক্তের উত্তরাধিকারী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা বেঁচে যান সৃষ্টিকর্তার অপার মহিমায়। ’৭৫-পরবর্তী ছয় বছর বিদেশে বিপন্ন জীবন অতিক্রম করে স্বদেশের মাটিতে ফিরে এসে বাঙালিকে নতুন করে জাগিয়ে তোলেন। ইচ্ছাশক্তির নবউত্থান ঘটে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে।
বর্তমান সরকার ১৯৯৭ সালে স্বাক্ষরিত পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার রাজনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ সমাধানের পরিবর্তে সামরিক সমাধানের নীতি গ্রহণ করেছে।
জুম্ম নারীকে ধর্ষণে ধর্মান্ধ ইসলামি রাজনীতির এতো উলঙ্গ দর্প বাংলাদেশে কেন? ইসলাম ধর্মে রিপুর তাড়নায় মানুষ যেন বিভ্রান্তি, অসত্য, অনৈতিক কর্মে প্রবৃত্ত না হয়, সুপথ যেন পরিত্যাগ না করে কখনো, পবিত্র কুরআন শরীফের শিক্ষা মূলত ইহাই। মানিকছড়িতে বাঙালি মুসলমান সেটেলার কর্তৃক এক জুম্ম নারীকে ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে হত্যার চেষ্টা (হিল ভয়েস, ১০ জুলাই ২০২২ খাগড়াছড়ি)! খাগড়াছড়ির মানিকছড়িতে মুসলমান মো. নূর হোসেন (২২) নামে সেটলার বাঙালি কর্তৃক ২ সন্তানের জননী এক জুম্ম নারীকে (২৭) ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে লাঠি দিয়ে আঘাত করে হত্যার চেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল শনিবার (৯ জুলাই ২০২২) ২.৩০ টার সময় মানিকছড়ির যোগ্যছলা ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের আচালং পাড়ায় এই ঘটনা ঘটে। অভিযুক্ত মো. নূর হোসেন একই ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের আচালং পাড়ার গোরফান ডাক্তার-এর ছেলে বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গতকাল দুপুরে আচালং পাড়ার বাসিন্দা ওই নারী কুয়া থেকে পানি আনতে যান। এ সময় তিনি কুয়ার পাশে ছড়ায় মাছ ধরার জন্য গেলে মুসলমান মো. নূর হোসেন হঠাৎ সেখানে উপস্থিত হয়ে তাকে ঝাপটে ধরে জোরপূর্বক ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। এতে উভয়ের মধ্যে ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। পরে সেটলার নূর হোসেন ধর্ষণ করতে ব্যর্থ হয়ে তাকে লাঠি দিয়ে মাথায় ও হাত দিয়ে সজোরে মুখে আঘাত করলে ওই নারী আহত হয়ে মাটিতে পড়ে গেলে সেখানেও দুর্বৃত্ত মো. নূর হোসেন ওই নারীকে ধর্ষণের চেষ্টা চালায়। এ সময় ওই নারী নূর হোসেনকে ধাক্কা দিয়ে চিৎকার করতে করতে কোন রকম নিজেকে রক্ষা করে বাড়িতে ফিরে ঘটনাটি গ্রামবাসীদের জানান। তার মাথায়, মুখে ও শরীরে বিভিন্নস্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
এলাকাবাসীরা জানান, ঘটনার পর তারা আহত ওই নারীকে প্রথমে মানিকছড়ি হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক মনে করে সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। বর্তমানে তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তারা আরও জানান, ‘গতকাল আমরা মামলা করতে ভিকটিমসহ মানিকছড়ি থানায় গেলে থানার ওসি বলেছেন আগে ভিকটিমকে বাঁচাতে হবে। তাকে চিকিৎসা করিয়ে সুস্থ করেন তারপর আমি অবশ্যই মামলা গ্রহণ করব’।”
সমতলের অনেক লোকজনই হয়তো এটা বিশ্বাস করবেন না, কিন্তু স্বাধীন গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে এটা অবিশ্বাস্য মনে হলেও – এটাই সত্যি ! এমনকি লেখাপড়া শেখানোর লোভ দেখিয়ে আদিবাসী ছেলেমেয়েদেরকে তাদের মাতা-পিতা থেকে নিয়ে (Like the Canadian Residential School) ঢাকা, গাজীপুরসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় পিতা-মাতার অজান্তে মাদ্রাসায় ভর্তি করানো এবং ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত করার ঘটনা ২০২০ সালে সংঘটিত হয়েছে। অন্যদিকে জুম্ম নারীদেরকে ফুসলিয়ে কিংবা ভালবাসার প্রলোভন দেখিয়ে বিয়ে করা এবং ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত করার অনেক ঘটনা সংঘটিত হয়েছে। যার সর্বশেষ বলি হয়েছে উখিয়া উপজেলার ৭ম শ্রেণির ১৫ বছরের ছাত্রী লাকিংমে চাকমা। এই অপ্রাপ্ত কিশোরীকে জানুয়ারিতে অপরহণ করে নিয়ে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তর করে বিয়ে করার পর ডিসেম্বরে খুন করা হয়। পুলিশের পক্ষ থেকে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
জামায়াত দেশের স্বাধীনতা ও বুদ্ধিজীবী হত্যা করল! কোরান অবমাননার ভীতির কবলে হিন্দু ও বৌদ্ধ নির্যাতন! জামায়াত চাকমাদেরকে জোর করে মুসলমান করেছে এবং ফিলিস্তিনের মতো বাংলাদেশে পাহাড়ী জনতার হত্যাযজ্ঞ! বাংলাদেশে ধর্মান্ধ ইসলাম রাজনীতির বৌদ্ধ হত্যাযজ্ঞের ইতিহাস লেখা হলে পাঠকগণ দেখবেন,তা হলোকাষ্টের চেয়ে কম বীভৎস নয়। উল্লেখ্য, এর পূর্বেও হিল ভয়েসের একাধিক রিপোর্টে বান্দরবানে আদিবাসী জুম্মদের দারিদ্র্যতা, অর্থনৈতিক সুবিধা ও শিশুদের শিক্ষার প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন জুম্ম পরিবার ও শিশুদের ইসলামে ধর্মান্তরিত করার ষড়যন্ত্রের সাথে এই ডা: ইউসুফ আলীর শুধু জড়িত থাকার কথা নয়, এই ধর্মান্তরকরণে তিনি নেতৃত্ব দিচ্ছেন বলেও উঠে এসেছে।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশে ধর্মভিত্তিক মুসলমান রাষ্ট্র কেন? মুসলমান যে মানব, আদিবাসী জুম্ম জাতি এবং অখন্ড মানব জাতি সেই মানব! আজকের বাংলাদেশে আমরা যে মুসলমান জঙ্গিবাদ দেখছি তা হলো বাংলাদেশকে অসা¤প্রদায়িকতার পথ থেকে সরিয়ে ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ষড়যন্ত্রের পরিণতি। আবার এই কট্টর মৌলবাদী জামায়াতে ইসলামী নিষিদ্ধ হওয়ার পরে তারা নিঃসারে ঢুকে পড়ছেন শাসক দলের ছত্রছায়ায়, অবশ্যই অন্য নামে। পার্বত্য চট্টগ্রামে আদিবাসীদের মুসলমান করে ইচ্ছাশক্তিকে পঙ্গু করতে পাকিস্তানিকরণ এবং আদিবাসীদের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলা শুরু হয়ে গেল।
বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে (হিল ভয়েস, ৮ জুলাই ২০২২,) “স¤প্রতি খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়ির মাইসছড়ি ইউনিয়নের জয়সেন পাড়ায় স্থানীয় বাঙালী সেটেলার কর্তৃক আদিবাসী বসতিতে হামলা-ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নি সংযোগের ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ রয়েছে, ৫ জুলাই সকালে আদিবাসী পুরুষরা যখন পাশের বাজারে গেছেন তখন সেটেলারদের ২শ জনের একটি দল ধারালো অস্ত্রশস্ত্র ও লাঠিসোটা নিয়ে জয়সেন পাড়ায় আদিবাসী নারী ও বসতিতে হামলা চালায়। এ সময় আদিবাসিদের বাড়ি-ঘরে লুটপাট করে অন্তত ৩৭টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত আদিবাসীদের বর্ণনা অনুযায়ী ঘটনার সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলের কাছাকাছি থাকলেও তারা হামলাকারীদের প্রতিহত করতে এগিয়ে আসেনি। পরবর্তীতে হামলাকারীদের সাথে স্থানীয় আাদিবাসী জনগোষ্ঠীদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে এবং হামলাকারীরা চলে যায়। এ ঘটনায় কয়েকজন আদিবাসী ব্যক্তি আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।”
“মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশের কোনো অঞ্চলে এ ধরনের ঘটনা খুবই দুঃখজনক। এ ঘটনায় আমরা খুবই ব্যথিত এবং ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছি। আদিবাসী নির্যাতন নিপীড়ন কিংবা আদিবাসীদের অধিকার বঞ্চনার ঘটনা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। রাষ্ট্রীয় সেবা বঞ্চনা থেকে শুরু করে জান-মালের নিরাপত্তাহীনতা এখানে সবর্দাই বিরাজ করছে। কিন্তু সা¤প্রতিক ঘটনাটি একটি ভিন্ন বার্তা দিচ্ছে। এটি চরমভাবে মানবাধিকার ও মৌলিক অধিকারের পরিপন্থি।”
জুম্ম জনগণের জাতীয় পরিচিতি একেবারে বিলুপ্ত করার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম সামরিকায়ন জোরদার করেছে! মৌলবাদী ও জুম্ম বিদ্বেষী কিছু ইসলামী গোষ্ঠী কর্তৃক সুপরিকল্পিতভাবে জুম্মদেরকে ইসলামে ধর্মান্তরিত করার কার্যক্রম জোরদার হয়েছে। ফলে বিগত ২৩ বছরেও পার্বত্য সমস্যার কাক্সিক্ষত সমাধান হওয়া তো দূরের কথা, সমস্যা আরও জটিল থেকে জটিলতর হয়ে উঠেছে। বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রামের সার্বিক পরিস্থিতি অনেকটা চুক্তি-পূর্ব অবস্থায় পদার্পণ করেছে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ে আদিবাসী স্থায়ী ফোরামের সুপারিশ গত ৭ জুলাই ২০২২-এ জেনেভায় অনুষ্ঠিত এজেন্ডা! হিল ভয়েস, ৭ জুলাই ২০২২, আন্তর্জাতিক ডেস্ক: পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (পিসিজেএসএস) প্রতিনিধি অগাস্টিনা চাকমা পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন সম্পর্কিত ২০১১ সালের অধিবেশনে গৃহীত জাতিসংঘের আদিবাসী বিষয়ক স্থায়ী ফোরাম (পিএফআইআই) এর সুপারিশ বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি গত ৭ জুলাই ২০২২-এ জেনেভায় অনুষ্ঠিত এজেন্ডা আইটেম ১০: ভবিষ্যত বিষয়ভিত্তিক গবেষণা সম্পর্কে ফোকাস সহ বিশেষজ্ঞ কর্মব্যবস্থার ভবিষ্যত কাজ (আদিবাসীদের সাথে রুদ্ধদ্বার বৈঠক)-এ অংশগ্রহণ করে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের আদিবাসীদের অধিকার সংক্রান্ত বিশেষজ্ঞ কর্মব্যবস্থার ১৫তম অধিবেশনে এই আহ্বান জানান। অগাস্টিনা চাকমার বক্তব্যের সম্পূর্ণ পাঠ নিচে দেওয়া হল: আমাকে বলতে দেওয়ার জন্য চেয়ারকে ধন্যবাদ।
এমরিপ’এর বর্তমান অধিবেশনে দেওয়া বিবৃতিতে, আমরা, বাংলাদেশের আদিবাসী প্রতিনিধিরা উল্লেখ করেছি যে, বর্তমান সরকার ১৯৯৭ সালে স্বাক্ষরিত পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার রাজনৈতিক ও শান্তিপূর্ণ সমাধানের পরিবর্তে সামরিক সমাধানের নীতি গ্রহণ করেছে।
এই ক্ষেত্রে, আমি পার্বত্য চট্টগ্রামে ৫ই জুলাই ২০২২ তারিখে ঘটে যাওয়া একটি ঘটনার উদাহরণ দিচ্ছি। খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়ি উপজেলায় আদিবাসী জুম্ম গ্রামবাসীর ৩৭টি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট ও ভাংচুর করেছে বাঙালি সেটেলাররা। হামলাকারীদের প্রতিহত করতে গিয়ে অন্তত দুই জুম্ম গ্রামবাসী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এই অগ্নিসংযোগের সময় সেনাবাহিনী ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও হামলাকারী সেটলারদের প্রতিরোধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
আমরা অনুমান করতে পারি যে, সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ সহায়তায় এই অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। জুম্ম গ্রামবাসীদের বাড়িতে আগুন দেওয়ার মূল উদ্দেশ্য হল জুম্ম জনগণকে উচ্ছেদ করা এবং তাদের জমি দখল করা।
প্রকৃতপক্ষে, সরকারের প্রশ্রয়ে সেনাবাহিনী পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়ন এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যার রাজনৈতিক সমাধানের প্রধান বাধা হিসেবে ভূমিকা পালন করে চলেছে। তাই পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যা সমাধানে ‘অপারেশন উত্তরণ’ নামক একপ্রকার সামরিক শাসনসহ পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনাবাহিনীর সকল অস্থায়ী ক্যাম্প প্রত্যাহার করা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।
এমতাবস্থায়, আমি আদিবাসী ইস্যুতে জাতিসংঘের স্থায়ী ফোরামের সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশ সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করার জন্য বিশেষজ্ঞ কর্মব্যবস্থা এবং মানবাধিকার কাউন্সিলের কাছে আবেদন জানাতে চাই। এটি ২০১১ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির বাস্তবায়ন এবং জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে কাজ করার আগে সামরিক কর্মীদের এবং ইউনিটের মানবাধিকার রেকর্ডের যাচাইয়ের জন্য সুপারিশ গৃহীত হয়েছিল। আবার আমাকে বলার সুযোগ দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।”
দুর্নীতি দমন কমিশন শ্বেতপত্রে বাংলাদেশ নিয়ে ইসলামীকরণ ও মৌলবাদী গোষ্ঠী! জঙ্গিবাদ ছড়াতে জামায়াত ধর্ম ব্যবসায়ী গোষ্ঠীকে অর্থায়ন করে- এমন তথ্য পাওয়া গেছে। তাদের সন্ত্রাসী তৎপরতা ও দুর্নীতির তথ্য দুদকে জমা দেওয়া হয়েছে। শ্বেতপত্রে উল্লেখ করা ১১৬ জনকে ওয়াজ ও ধর্ম ব্যবসায়ী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। দেশের বিভিন্ন স্থানের ডিসি, এসপি, ইউএনওসহ যারা এই গোষ্ঠীকে উস্কানি দিচ্ছেন শ্বেতপত্রে তাদের নামও উল্লেখ করা হয়েছে (SAMAKAL, ২১ ঔটঘঊ ২০২২)।
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলাধীন মহালছড়িতে আদিবাসী জুম্ম বসতিতে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে দ্রুত বিচার আইনে জড়িত অপরাধীদের শাস্তির দাবিতে যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ২৫ বিশিষ্ট নাগরিক (হিল ভয়েস, ৮ জুলাই ২০২২, খাগড়াছড়ি:)। আজ (৮ জুলাই ২০২২) সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক সালেহ আহমেদ স্বাক্ষরিত এক প্রেস বার্তায় এই বিবৃতি প্রদানের কথা জানানো হয়েছে। বিবৃতিতে ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে দ্রæত বিচার আইনে জড়িত অপরাধীদের শাস্তিসহ ৫ দফা দাবি জানানো জানানো হয়েছে। মহালছড়িতে আদিবাসী বসতিতে হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার বিচারের দাবি ২৫ বিশিষ্ট নাগরিকের!
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “আমরা মনে করি, বৈচিত্রময়তা ধ্বংস করে সেটেলারদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠার যে সংস্কৃতি শুরু হয়েছে, তা মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে চলতে পারে না। এ ধরনের প্রবণতা দেশে এবং দেশের বাইরে বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করাসহ জাতীয় সংহতি বিনষ্ট করবে। কাজেই দ্রুততম সময়ে ঘটনার প্রভাবমুক্ত তদন্ত করে দায়িদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে।”
বিবৃতিতে নিম্নোক্ত পাঁচটি দাবি উত্থাপন করা হয়:
১। ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্ত করে তদন্ত প্রতিবেদন জনসমক্ষে প্রকাশ করতে হবে;
২। জয়সেন পাড়ায় আদিবাসী বসতিতে হামলকারীদের চিহ্নিত করে দ্রæত বিচারের আওতায় আনতে হবে;
৩। দ্রæত বিচার আইনে অপরাধীদের বিচার ও শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে;
৪। ক্ষতিগ্রস্তদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে এবং
৫। আদিবাসী জনগোষ্ঠীর জানমালের নিরাপত্তা বিধানে কার্যকর ও দৃশ্যমান উদ্যোগ করতে হবে।
বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী বিশিষ্ট নাগরিকগণ হলেন- অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, তত্ত¡াবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা; পঙ্কজ ভট্টাচার্য, সভাপতি, ঐক্য ন্যাপ; রাশেদা কে. চৌধুরী, তত্ত¡াবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা; রামেন্দু মজুমদার, সভাপতিমন্ডলীর সদস্য, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন; ডা. সারওয়ার আলী, ট্রাস্টি, মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর ও সভাপতিমন্ডলীর সদস্য, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন; অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত, সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ; ডা. ফওজিয়া মোসলেম, সভাপতি, মহিলা পরিষদ; ড. নুর মোহাম্মদ তালুকদার, সদস্য সচিব, সা¤প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদ বিরোধী মঞ্চ; এস.এম.এ সবুর, সভাপতি, বাংলাদেশ কৃষক সমিতি; খুশী কবির, মানবাধিকার কর্মী; রোকেয়া কবির, উন্নয়ন কর্মী; এম. এম. আকাশ, অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; রোবায়েত ফেরদৌস, অধ্যাপক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; সালেহ আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক, সম্মিলিত সামাজিক আন্দোলন; ড. জোবাইদা নাসরীন, শিক্ষক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়; ডা. লেনিন চৌধুরী, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ; অ্যাডভোকেট পারভেজ হাসেম, আইনজীবী, বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্ট; আবদুল ওয়াহেদ, কার্যকরী সভাপতি, জাতীয় শ্রমিক জোট; ড. সেলু বাসিত, গবেষক ও সংস্কৃতি কর্মী; আব্দুর রাজ্জাক, সাধারণ সম্পাদক, ইমারত নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়ন বাংলাদেশ (ইনসাব); অ্যাডভোকেট জীবনানন্দ জয়ন্ত, সংগঠক, গণজাগরণ মঞ্চ; এ কে আজাদ, সংস্কৃতি কর্মী; অলক দাস গুপ্ত, সংস্কৃতি কর্মী; দীপায়ন খীসা, তথ্য ও প্রচার সম্পাদক, বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম ও সেলিম রেজা, আহবায়ক, সংস্কৃতি মঞ্চ।
বাঙালি সংস্কৃতির মূল কথা হলো অসা¤প্রদায়িকতা ও স¤প্রীতি। বর্তমান বাংলাদেশে হাজার বছর ধরে মুসলমান, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান, চাকমা, সাঁওতালসহ সব ধর্ম-বর্ণের মানুষ এবং ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী এক সঙ্গে স¤প্রীতি বজায় রেখে বসবাস করে আসছে বলেই সব স্রোত এক ধারায় এসে মিলিত হয়ে বাঙালি সংস্কৃতিকে করেছে সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী। আমাদের মুক্তিসংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধ এবং একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর অভূতপূর্ব বিজয় অর্জনে এককভাবে যে উপাদানটি ! ব্রাহ্মণ্য ধর্মের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দিতায় ‘বৌদ্ধ মুক্তিযুদ্ধে চর্যাপদের উৎপত্তি এবং সন্ত্রাসী তুর্কি ইসলাম (বখতিয়ার খিলজি) ধর্মের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দিতায় ‘বৌদ্ধ মুক্তিযুদ্ধে রামষই পন্ডিতের লেখা “শূন্য পুরান “ শীর্ষক বইয়ের উৎপত্তি।
বাংলাদেশে রাজনীতির ইসলামীকরণ পার্বত্য চট্টগ্রামেকে গ্রাস করতে লক্ষ লক্ষ মুসলমান সেটেলার নিয়ে আসে ! বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “আমরা মনে করি, বৈচিত্রময়তা ধ্বংস করে, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশে জুম্ম জনগণের জাতীয় পরিচিতি একেবারে বিলুপ্ত করার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম মুসলমান সেটেলারদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠার যে সংস্কৃতি শুরু হয়েছে, তা মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশে চলতে পারে না। কী দুর্ভাগ্য! সরকার ইচ্ছা করে মুসলমান সেটেলার নিয়ে আসে কেন?
বাংলাদেশে সুপরিকল্পিতভাবে একের পর এক পাহাড়ী আদিবাসী বৌদ্ধ জুম্ম নাগরিকদের মন্দির এবং হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বসতবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা-খুন-লুটপাট ও নির্যাতনের প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউজের সামনে সহস্রাধিক যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশী প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন! পার্বত্য চট্টগ্রামে জামায়াত মৌলবাদী ও জুম্ম বিদ্বেষী কিছু ইসলামী গোষ্ঠী কর্তৃক সুপরিকল্পিতভাবে আদিবাসী জুম্মদেরকে ইসলামে ধর্মান্তরিত করার ষড়যন্ত্র বাস্তবায়িত হচ্ছে। পবিত্র কুরআন শরীফের বিভিন্ন আয়াতে (৬ : ১০৯) অমুসমানদের সাথে মানবিক মর্যাদা রক্ষা এবং মন্দির, বিহার এবং গীর্জা না ভাঙার নির্দেশ বিরাজমান (২২ : ৩৮)। মানবজাতির হৃদয়াসনে পবিত্র কুরআন শরীফের মানবতা চির দেদীপ্যমান হয়ে ছিল, আছে এবং থাকবে।
বিশ্ববৌদ্ধ পুরস্কার প্রাপ্ত প্রখ্যাত মানবতাবাদী লেখক সোনা কান্তি বড়ুয়া (Bachelor of Arts, University of Toronto), The AuthorÕs World famous and glorious New Book entitled ÒPRE – VEDIC MOHENJODARO BUDDHISM & MEDITATION IN THE NUCLEAR AGE , (516 Pages)“ সাবেক সভাপতি, বাংলা সাহিত্য পরিষদ, টরন্টো, খ্যাতিমান ঐতিহাসিক, কথাশিল্পী, বিবিধগ্রন্থ প্রনেতা প্রবাসী কলামিষ্ঠ, লাইব্রেরীয়ান, বিশ্ববৌদ্ধ সৌভ্রতৃত্ব পত্রিকার সহ সম্পাদক এবং জাতিসংঘে বিশ্ববৌদ্ধ প্রতিনিধি!