অনলাইন ডেস্ক : ম্যারি ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভাতিজি। তিনি একটি বই লিখছেন যেটি চাচা সম্পর্কে নানা কেচ্ছা-কাহিনিতে ভরপুর থাকবে বলে মনে করা হচ্ছে। ২৮ জুলাই ম্যারি তার আত্মজীবনী প্রকাশ করতে যাচ্ছেন।
আত্মজীবনী বইটির শিরোনামের বাংলা অনুবাদ হচ্ছে : ‘হয় খুব বেশি, নয় তো খুব কম : আমার পরিবার থেকে কীভাবে তৈরি হলো বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক এক মানুষ’। বইটির প্রকাশনা সংস্থা সাইমন অ্যান্ড সুস্টার একথা জানিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে ক্ষমতাসীন রিপাবলিকান পার্টির জাতীয় সম্মেলনের কয়েক সপ্তাহ আগে বইটি প্রকাশিত হতে যাচ্ছে। নভেম্বরে সাধারণ নির্বাচনের জন্য এই ন্যাশনাল কনভেনশন থেকেই ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য দলীয় অনুমোদন পাবেন বলে মনে করা হচ্ছে। বলা হচ্ছে-ম্যারি ট্রাম্পের ওই আত্মজীবনীতে বর্ণনা করা হবে কীভাবে তিনি ট্রাম্পের ব্যক্তিগত টাকা-পয়সা সম্পর্কে গোপন দলিলপত্র তিনি নিউ ইয়র্ক টাইমস পত্রিকাকে সরবরাহ করেছিলেন।
রিপোর্টটি যুক্তরাষ্ট্রে সাংবাদিকতার সেরা পুরস্কার পুলিত্জার পায়। এতে দেখানো হয় কীভাবে ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘জালিয়াতি’ করে কর ফাঁকি দেন এবং তার বাবার রিয়েল এস্টেট ব্যবসা থেকে বর্তমান মূল্যে ৪০ কোটি ডলারেরও বেশি অর্থ লাভ করেন।
অ্যামাজন থেকে এই আত্মজীবনীর যে সারসংক্ষেপ প্রকাশ করা হয়েছে তাতে বলা হয়েছে, তার চাচা ‘কীভাবে বিশ্বের স্বাস্থ্য, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক নিরাপত্তা বিরুদ্ধে হুমকি হয়ে উঠলেন সেই ব্যাখ্যা লেখিকা তার লেখনিতে দেবেন।’
প্রেসিডেন্টের বাবা ফ্রেড ট্রাম্পের সঙ্গে তার বড়ো দুই ছেলে-ফ্রেড ট্রাম্প জুনিয়র এবং ডোনাল্ডের অদ্ভুত এবং ক্ষতিকর সম্পর্কসহ এই পরিবারের ইতিহাসের নানা গল্প এই বইতে থাকবে বলে প্রকাশক সংস্থা জানিয়েছে। ফ্রেড ট্রাম্প আলঝাইমার্স রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর ডোনাল্ড তার বাবার সঙ্গে কী রকম দুর্ব্যবহার করেছেন সেই প্রসঙ্গও বইটিতে থাকতে পারে।
উল্লেখ্য, ম্যারি ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্টের বড়ো ভাই ফ্রেড ট্রাম্প জুনিয়রের মেয়ে। চাচা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর থেকে ম্যারি ট্রাম্প অনেকটাই নিজেকে নিভৃতে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন।
এই দুই পরিবারের মধ্যে সম্পর্ক খারাপ হতে শুরু করে বিশ বছর আগে একটি মামলার পর থেকে। ম্যারি ট্রাম্প এবং তার ভাই তৃতীয় ফ্রেড ট্রাম্প ২০০৪ সালে ওই মামলা দায়ের করে অভিযোগ করেছিলেন যে, তাদের দাদার সম্পত্তি থেকে তাদের বঞ্চিত করা হয়েছে। তারা জানান, তাদের দাদা যখন ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত হন তখন ১৯৯১ সালে ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার বোনেরা মিলে ‘টাকা দিয়ে এবং প্রভাব খাটিয়ে’ তার উইলটি বদলে দিয়েছিলেন। নিউ ইয়র্ক ডেইলি নিউজ পত্রিকা এ সম্পর্কে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল।
ম্যারি ট্রাম্প সে সময় ওই পত্রিকাকে বলেছিলেন, ওই মামলা নিয়ে তার চাচা এবং ফুপুরা যেসব কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন ‘সে জন্য তাদের লজ্জা হওয়া উচিত।’ দৃশ্যত ওই মামলার প্রতিশোধ হিসেবে ট্রাম্প কোম্পানি যখন ম্যারি ট্রাম্প এবং তার ভাইয়ের মেডিকেল ইনসিওরেন্স বাতিল করে দেয় তখন তারা ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আরেক দফা মামলা দায়ের করেন। পরে আদালতের বাইরে মামলাটির মীমাংসা করা হয়। কিন্তু এ সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানা যায় না। ট্রাম্প যেদিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন সেদিন ম্যারি একটা টুইটে লিখেছিলেন, এটা আমার জীবনের এক কালো রাত। সূত্র: বিবিসি।