অনলাইন ডেস্ক : আজ সোমবার (১২ রবিউল আউয়াল) পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (স.)। প্রায় দেড় হাজার বছর আগে ৫৭০ সালের এই দিনে আরবের মক্কা নগরীর সম্ভ্রান্ত কোরাইশ বংশে মা আমিনার গর্ভ থেকে জন্ম নিয়েছিলেন মানবজাতির জন্য রহমত হিসেবে প্রেরিত মহানবী হজরত মুহাম্মদ (স.)। তাই দিনটি মুসলিম উম্মাহর কাছে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (স.) নামে পরিচিত। দিনটি উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ সাহাবুদ্দিন ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
গতকাল রবিবার দেওয়া বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, “সত্য ও ন্যায়ের প্রশ্নে হজরত মুহাম্মদ (স.) ছিলেন প্রস্তর কঠিন; কিন্তু ক্ষমা ও দয়ায় ছিলেন পানির মতো সরল। তার প্রতিটি কথা ও কর্মই মানবজাতির জন্য অনুকরণীয় ও অনুসরণীয়। এ জন্য পবিত্র কোরআনে তাঁর জীবনকে বলা হয়েছে ‘উসওয়াতুন হাসানাহ্’ অর্থাৎ সুন্দরতম আদর্শ। দিনটি উপলক্ষে আমি দেশবাসীসহ মুসলিম উম্মাহকে জানাই শুভেচ্ছা ও মোবারকবাদ।”
এদিকে প্রধান উপদেষ্টা তার বাণীতে বলেন, ‘বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব, বিশ্বমানবতার মুক্তির দিশারি, মহানবীর (স.) জন্ম ও ওফাতের পবিত্র স্মৃতি বিজড়িত পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (স.) বিশ্ববাসী, বিশেষত মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত মহিমান্বিত দিন। এ উপলক্ষে আমি বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল মুসলিম উম্মাহকে আন্তরিক মোবারকবাদ জানাচ্ছি।’
মহানবীর জন্মের আগে গোটা আরব অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল। আরবের সর্বত্র দেখা দিয়েছিল অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলা। এ যুগকে বলা হতো ‘আইয়ামে জাহেলিয়াত’-এর যুগ। তখন মানুষ হানাহানি ও কাটাকাটিতে লিপ্ত ছিল এবং মূর্তিপূজা করত। এই অন্ধকার যুগ থেকে মানবজাতিকে আলোর পথ দেখাতে মহানবীকে (স.) দুনিয়ায় প্রেরণ করেন আল্লাহ। অতি অল্প বয়সেই আল্লাহর প্রেমে অনুরক্ত হয়ে পড়েন মহানবী (স.) এবং প্রায়ই হেরা পর্বতের গুহায় ধ্যানমগ্ন থাকতেন। ২৫ বছর বয়সে মহানবী বিবি খাদিজার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। মাত্র ৪০ বছর বয়সে তিনি নব্যুয়ত লাভ করেন।
পবিত্র কোরআনে বর্ণিত আছেÑ ‘মহানবীকে সৃষ্টি না করলে আল্লাহ পৃথিবীই সৃষ্টি করতেন না।’ এসব কারণে এবং তৎকালীন আরব সমাজের বাস্তবতায় এ দিনের তাৎপর্য অনেক বেশি। তাই বাংলাদেশসহ বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায় এ দিনটি ঈদে মিলাদুন্নবী হিসেবে পালন করে থাকে।
দিনটি উদযাপন উপলক্ষে পক্ষকালব্যাপী নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন। গতকাল রবিবার বাদ মাগরিব বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের পূর্ব গেটে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন এ অনুষ্ঠানমালার উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানগুলোর মধ্যে রয়েছেÑ ওয়াজ, মিলাদ ও দোয়া মাহফিল, সেমিনার, ইসলামি সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা, আরবি খুতবা লিখন প্রতিযোগিতা, কিরাত মাহফিল, হামদ-নাত, স্বরচিত কবিতা পাঠের মাহফিল, ইসলামি ক্যালিগ্রাফি প্রদর্শনী, ইসলামি বইমেলা, বিশেষ স্মরণিকা ও ক্রোড়পত্র প্রকাশ। এ ছাড়া ফাউন্ডেশনের সব বিভাগীয় ও জেলা কার্যালয়, ৫৪টি ইসলামিক মিশন ও আটটি ইমাম প্রশিক্ষণ একাডেমিতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।