অনলাইন ডেস্ক : পদ্মা সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সরকারের আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেছে বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, পদ্মা সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিএনপি যাবে না।
বুধবার বিকালে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
পদ্মা সেতু উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বিএনপিকে আমন্ত্রণের বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যারা মানুষ হত্যা করে, যারা এদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, জনপ্রিয় নেত্রী দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে পদ্মায় ডুবিয়ে মারতে চায়, যারা এদেশের সবচেয়ে প্রতিথযশা এবং এদেশের জন্য সবচেয়ে বড় সম্মান অর্জন করে আনা ব্যক্তি গোটা পৃথিবীতে যিনি নন্দিত মানুষ ড. মুহাম্মদ ইউনূস তাকে চুবিয়ে চুবিয়ে মারতে চায় তাদের আমন্ত্রণে বিএনপির কোনো নেতা বা কোনো কর্মী কখনোই যেতে পারে না।’
এর আগে পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিএনপির মহাসচিবসহ ৭ নেতাকে আমন্ত্রণ জানায় সরকারের সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সেতু বিভাগ। সকাল ১১টায় সেতু বিভাগের উপসচিব দুলাল চন্দ্র সূত্রধর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গিয়ে দলের সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর কাছে আমন্ত্রণপত্রগুলো পৌঁছে দেন। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান ও ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদের নামে আমন্ত্রণ কার্ড দেওয়া হয়।
কার্ড হস্তান্তরের সময় বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আবদুল খায়ের ভুঁইয়া, খায়রুল কবির খোকন, আবদুস সালাম আজাদ, আবদুস সাত্তার পাটোয়ারি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে বুধবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে পদ্মা সেতু নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী পূর্বের মতোই তার যে স্বভাবসূলভ বক্তব্যের মধ্যে তিনি যে মিথ্যাচার করেন তার আবার প্রমাণ রেখেছেন। তিনি বলেছেন, ‘ক্ষমতায় এসে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার মাওয়া প্রান্তে সেতুর কাযর্ক্রম বন্ধ করে দেয় এবং জাপান সরকারকে পুনরায় মানিকগঞ্জের আরিচা প্রান্তে সেতুর জন্য সমীক্ষা করতে বলে’। মিথ্যাচার করেছেন। বিএনপি সরকারের ফিজিবিলিটি রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করেই তারা পরবর্তিকালে কাজ করেছেন। তখনই এডিবি, বিশ্বব্যাংক ও জাপান যোগাযোগ করে যে ফান্ড তার জন্য আলোচনা করা হয়েছিল। কিন্তু সময়ের অভাবে সেটা করা আমাদের পক্ষে সম্ভব হয়নি। এটা হচ্ছে বাস্তবতা। অথচ তিনি (প্রধানমন্ত্রী) সমানে বলে যাচ্ছেন বিএনপি সরকার এটা বন্ধ করে দিয়েছিল।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সমস্যাটা হচ্ছে অন্য জায়গায়। কাজ শুরু করার পরে দুর্নীতির কথা বলে বিশ্বব্যাংক যখন ফান্ড বন্ধ করে দিল, তখন থেকেই সমস্যাটা হয়েছে। সেটার জন্য তিনি বিএনপিকে দায়ী করেন, ড. ইউনূসকে দায়ী করেন। কোথায় পেলেন তিনি? তিনি কীভাবে দেখলেন যে, বিএনপি বা ড. ইউনূস দুর্নীতির কথা তুলেছে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক দুর্নীতির কথা তোলার পর দেশবাসী জানল, আমরা জানলাম সেখানে দুর্নীতি হচ্ছে। আজকে এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকার প্রজেক্ট এখন ৩০ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছেছে। সুতরাং প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য সত্যের অপলাপ এবং বিএনপিকে জনগণের সামনে হেয়-প্রতিপন্ন করার চেষ্টা। এগুলোর কোনোটাই কাজ হবে না। কারণ আমাদের কাছে তথ্য-প্রমাণ আছে।’