অনলাইন ডেস্ক : আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে সরগরম আমেরিকা। জোর কদমে চলছে ভোট প্রচার। এবার লড়াই ডেমোক্রেটিক প্রার্থী কমলা হ্যারিসের সঙ্গে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের। ইতিমধ্যেই কয়েকটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে ট্রাম্পকে পিছনে ফেলে এগিয়ে গিয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভুত কমলা। নির্বাচনে তাকে কুপোকাত করতে রিপাবলিকান নেতার হাতিয়ার এবার ‘মোদির বন্ধু’ তুলসী গাবার্ড।

আমেরিকায় নির্বাচনের দামামা বাজতেই ডেমোক্রেটদের প্রার্থী হিসাবে একপ্রকার নিশ্চিত ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। ফলে তার সঙ্গে ‘প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেটে’ অংশ নিয়েছিলেন ট্রাম্প। সেখানে রিপাবলিকান নেতার কাছে বেকায়দায় পড়েন বাইডেন। তার পর নানা বিতর্ক, জল্পনার পর ভোটের লড়াই থেকে সরে দাঁড়ান বাইডেন। এবার প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেটে ট্রাম্প মুখোমুখি দাঁড়াবেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলার সামনে।

সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে খবর, আগামী ১০ সেপ্টেম্বর প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেটে অনুষ্ঠিত হবে এবিসি নিউজের স্টুডিওতে। সেখানে কমলাকে বিপাকে ফেলতে তুলসী গাবার্ডের সাহায্য নিচ্ছেন ট্রাম্প। জানা গিয়েছে, ট্রাম্পের বাড়িতে রীতিমত মহড়া চলছে। প্র্যাকটিস সেশনে রিপাবলিকান নেতার সঙ্গে যোগ দিয়েছেন তুলসী। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ট্রাম্পের এক মুখপাত্র ক্যারোলিন লিভিট। সংবাদমাধ্যমে তিনি জানিয়েছেন, “ডিবেটের জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্পের কোনও প্রস্তুতির প্রয়োজন নেই। তবে তিনি তুলসি গ্যাবার্ডের মতো নীতি উপদেষ্টাদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাবেন। ২০২০ সালের এক ডিবেটের মঞ্চে কমলা হ্যারিসকে জোর টক্কর দিয়েছিলেন তুলসী গাবার্ড।” ফলে কীভাবে কথার প্যাঁচে কমলাকে তর্কে ধরাশায়ী করা যায়, সেনিয়ে ট্রাম্পকে উপদেশ দিচ্ছেন তুলসী।

কিন্তু এখন প্রশ্ন কে এই তুলসী গাবার্ড? এক সময়ে ডেমোক্র্যাটিক পার্টিতেই ছিলেন তুলসী। ২০২০ সালে জো বাইডেনের সঙ্গে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদের দৌড়ে শামিল হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে যান তুলসী। তার পর বাইডেন সরকার ও দলীয় সহকর্মীদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তোলেন তিনি। তার দাবি ছিল, বর্তমান সরকার প্রতিটি ইস্যুতে বর্ণ বিচার করে কাজ করে। শ্বেতাঙ্গ-বিরোধী প্রতিবাদ, বিক্ষোভকে ইন্ধন জোগায়। ডেমোক্র্যাটিক পার্টিকে ‘যুদ্ধবাজ ও বর্ণবিদ্বেষী’ বলেও তোপ দেগেছিলেন। এদিকে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গেও তুলসীর পরিচয় বহুদিনের। মোদির সঙ্গে তাঁর সাক্ষাতের ছবি হাতিয়ার করে দেশপ্রেম নিয়ে প্রশ্ন তুলে আমেরিকার একটি মহল ও বেশ কিছু সংবাদপত্র৷ তুলসীকে ‘হিন্দু জাতীয়তাবাদী’ বলে কটাক্ষ করে।

বিশ্লেষকদের মতে, প্রথমে ১০ সেপ্টেম্বরের ডিবেটে অংশ নিতে চাইছিলেন না ট্রাম্প। অনেকেই বলছিলেন কমলার সামনে দাঁড়াতে নাকি ভয় পাচ্ছেন তিনি। তাই এবার তুলসীকে হাতিয়ার করে আটঘাট বেঁধে নামতে চাইছেন রিপাবলিকান নেতা। তুলসীর ডেমোক্র্যাটিক পার্টির বিরুদ্ধে ক্ষোভকেই কাজে লাগাতে চান তিনি। এতে বাইডেন প্রশাসনের নানা ত্রুটি তুলে ধরে প্রশ্নবাণে বিদ্ধ করতে পারবেন কমলাকে। ফলে এই ডিবেটে একে অপরকে কতটা টক্কর দিতে পারেন দুই প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী সেদিকেই নজর থাকবে সকলের।