অনলাইন ডেস্ক : জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ইরানের বিরুদ্ধে সব নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের যে আবেদন জানিয়েছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাতে ঘোর বিরোধীতা করেছে স্থায়ী ও অস্থায়ী ১৩টি সদস্য দেশ। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডোমিনিকান রিপাবলিক ছাড়া বাকি ১৩ দেশ সংস্থাটির সভাপতির কাছে আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠিয়ে তাদের বিরোধিতার কথা জানিয়েছেন।

পরমাণু সমঝোতার ভিত্তিতে চলতি বছরের অক্টোবর মাসে ইরানের ওপর জাতিসংঘের আরোপিত অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবে। আগামী অক্টোবর মাস থেকে বহির্বিশ্বের সাথে সমরাস্ত্র বেচাকেনা করতে পারবে তেহরান।সম্প্রতি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ভোটে ইরানের বিরুদ্ধে অস্ত্র নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখার মার্কিন প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।

২০১৫ সালের চুক্তিতে ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হয়েছিল। মাকিন যুক্তরাষ্ট্র ২০১৮ সালে এই সমঝোতা থেকে বেরিয়ে গেলেও ওই সব নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়ানোর কথা বলছেন ট্রাম্প। সম্প্রতি তিনি বলেছেন, ‘ইরানের বিরুদ্ধে ইতোপূর্বে যত নিষেধাজ্ঞা স্থগিত রয়েছে সেগুলো আমরা আবার চালু করতে চাই।’

ট্রাম্প জানিয়েছেন, ‘একে বলে স্ন্যাপব্যাক মেকানিজম। যা আদৌ বিরল ঘটনা নয়।’ ঘটনা হলো, আমেরিকার বন্ধু দেশগুলোই ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত অনুমোদন করছে না। যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স তো বটেই, নিরাপত্তা পরিষদের বাকি দুই স্থায়ী সদস্য রাশিয়া ও চীনও চায় ২০১৫ সালের চুক্তি বহাল থাক। এই চুক্তিতে নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সব সদস্য সই করেছিল। এই চুক্তিতে ঠিক হয়েছিল, ইরান তার পরমাণু কর্মসূচিতে কাটছাঁট করবে, বিনিময়ে তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হবে। এই চুক্তিতে একটা স্ন্যাপব্যাক মেকানিজমের কথা বলা হয়েছে। সেটা হলো, তেহরান যদি চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে, তা হলে আবার তাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি হবে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞাগুলো পুনর্বহালের জন্য জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে আনুষ্ঠানিক আবেদন জমা দেন। তার ওই আবেদনের পর নিরাপত্তা পরিষদের বেশিরভাগ দেশ তাদের বিরোধিতার কথা ঘোষণা করল।

ট্রাম্পের বিরোধিতা করে নিরাপত্তা পরিষদের ১৩ টি সদস্য রাষ্ট্র বলছে, যুক্তরাষ্ট্র ২০১৮ সালে পরমাণু সমঝোতা থেকে একতরফাভাবে বেরিয়ে যাওয়ার কারণে দেশটি এই সমঝোতা বা নিরাপত্তা পরিষদের ২২৩১ নম্বর প্রস্তাবের ধারাগুলো ব্যবহারের অধিকার হারিয়েছে।

তিন ইউরোপীয় দেশ ফ্রান্স, ব্রিটেন ও জার্মানি আলাদা চিঠি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ‘স্ন্যাপব্যাক ম্যাকানিজম’ চালুর প্রস্তাবের ঘোর বিরোধিতা করেছে। চীন এবং রাশিয়াও বলেছে, ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহালের আবেদন জানানোর কোনো অধিকার যুক্তরাষ্ট্রের নেই।

সূত্র : রয়টার্স।