ডঃ বাহারুল হক : (পূর্ব প্রকাশিতের পর)
এলিস আইল্যান্ডের গুরুত্ব আবার অন্যরকম। ১৮৯২ থেকে ১৯৫২ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ ৬০ বছর এই আইল্যান্ড ছিল আমেরিকার সব থেকে বড় ইমিগ্র্যাশন ষ্টেশন। নিজ মাতৃভুমি ছেড়ে লক্ষ লক্ষ মানুষ আমেরিকায় বসবাস করবার আশায় ইমিগ্র্যান্ট হওয়ার লক্ষে এই আইল্যান্ডে পা রেখেছিল। ১৯৫৪ সনে এই ইমিগ্র্যাশন অফিস বন্ধ হয়ে যায়। এই বিশাল ইমিগ্র্যাশন অফিস ভবনটিকে পরে মিউজিয়ামে রুপান্তরিত করা হয় এবং নাম দেয়া হয় এলিস আইল্যান্ড ন্যাশনাল মিউজিয়াম অব ইমিগ্র্যাশন। এই মিউজিয়াম দেখার জন্য এখন সবার এলিস আইল্যান্ডে যাওয়া। প্রত্যেকটি ফেরি দর্শনার্থীদের নিয়ে প্রথমে আইল্য়ান্ড অব লিবার্টিতে যায়। ভিজিটররা নেমে পড়ে। যে সকল ভিজিটর সেই আইল্যান্ডে দেখার কাজ শেষ করেছে তার নিউ ইয়র্ক ফিরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে খালি ফেরিতে উঠে পড়ে। ফেরি ভিজিটরদের নিয়ে যায় এলিস আইল্যান্ডে। ভিজিটররা নামে এবং মিউজিয়াম অব ইমিগ্র্যাশন দেখতে ভিতরে যায়। ফেরি কোথাও যায় না। সেখানেই দাঁড়িয়ে থাকে। সময় বেঁধে দেয়া হয়। ভিজিটরদের কেউ ঐ সময়ের মধ্যে ফেরিতে ফিরে না এলে তার পরবর্তি ফেরির জন্য অপেক্ষা করা ছাড়া আর কোন গত্যান্তর নাই। আমাদের ফেরি ঘাটে ভিড়লে আমরা নেমে পড়লাম। তার পর সোজা ঢুকে গেলাম মিউজিয়ামে। দেখার কত কিছু। মিউজিয়ামটি ঘুরে দেখে বুঝলাম কেন এই আইল্যান্ডকে বলা হয় আইল্যান্ড অব হোপ এন্ড টিয়ার্স। ইমিগ্র্যান্ট হতে আগত প্রত্যেক ব্যাক্তির শারীরিক মানসিক অবস্থা পরীক্ষা করা হতো এই আইল্যান্ডে অবস্থিত একটি হাসপাতালে। যারা অযোগ্য বলে বিবেচিত হতো তাদের কান্নায় ভারি হয়ে উঠতো আইল্যান্ডের বাতাস। যারা টিকে যেত তাদেরকেও রাখা হতো পশুর আস্তাবলের মত বিশ্রী জায়গায়। তারাও কাঁদতো। কষ্টে কেউ কেউ মরে যেত। ১৮৯২ থেকে ১৯৫২ পর্যন্ত এই ৬০ বছরে ১,২০০০০ জনকে ইমিগ্র্যান্ট স্ট্যাটাস না দিয়ে এলিস আইল্যান্ড থেকে তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে আর নানা রকম কষ্ট সহ্য করতে না পেরে ৩৫০০ জন মৃত্যু বরণ করেছে। বর্তমানে যারা আছে আমেরিকায় তাদের ৪০% এর পুর্ব পুরুষ এই এলিস আইল্যান্ড ছুঁয়ে ইমিগ্র্যান্ট হয়েছিল। ছবি আর ছবি। মিউজিয়ামে ঘুরে মনের প্রফুল্লতা হারিয়ে ফেলেছিলাম। চার দিকে সব কষ্টের ছবি। বিপন্ন সব মানুষের ছবি। এলিস আইল্যান্ডে এসে প্রথম যে ইমিগ্র্যান্টের মর্যাদা পেয়েছিল তার নাম এনি মুর। এনির বয়স তখন মাত্র ১৭ বছর। পরবর্তিকালে এনি মুর একজন ইতিহাসবিদ হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন। এনি মুরের একটি মূর্তি মিউজিয়ামে সংরক্ষিত আছে। সে এসেছিল আয়ারল্যান্ড থেকে। তারপর শত শত, হাজার হাজার, লক্ষ লক্ষ। এই অগণিতদের কেহ কেহ সাহিত্যে, কেহ কেহ বিজ্ঞানে, কেহ কেহ ব্যাবসায়, কেহ কেহ সমাজ বিজ্ঞানে এবং অন্য অনেক কিছুতে অসামান্য অবদান রেখে আমেরিকার সন্মান-মর্যাদা বৃদ্ধি করেছে। সে রকম অনেকের একজন মহা বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনেস্টাইন। আমেরিকায় যারা পরে বরেণ্য বলে চিহ্নিত হয়েছেন সে সব ইমিগ্র্যান্টদের তালিকায় আরো আছেন আরভিং বার্লিন, ক্যারি গ্র্যান্ট, বব হোপ, জোশেফাইন বেকারের মত বিখ্যাত ব্যাক্তি। বার্লিন আমেরিকার সব চেয়ে বেশি খ্যাতনামা গীতিকার। তার লেখা গানের সংখ্যা ১৫০০ – এর বেশি। “ইস্টার প্যারেড”, “হোয়াইট খ্রীসমাস”, “গড বেøস আমেরিকা” এ সকল গানের রচয়িতা হিসেবে বার্লিন আমেরিকায় অমর হয়ে থাকবেন। বার্লিন যখন ইজরাইল থেকে এসে এই আইল্যান্ডে পা রাখেন তখন তিনি ছিলেন ১৪ বছরের এক বালক। এলিস আইল্যান্ডের ইমিগ্র্যাশন মিউজিয়ামে একটি ছোট থিয়েটার আছে। সেখানে দর্শনার্থীদেরকে স্বল্প দৈর্ঘের একটি মুভি দেখানো হয়। এই মুভি আমাদের চমকে দিয়েছে। বুঝতে পারলাম পৃথিবী নামক এই গ্রহের ভৌগলিক চেহারা এবং আবহাওয়া সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে ক্রমাগত পরিবর্তিত হচ্ছে। পৃথিবীতে বসবাসরত মানবকুলও নিশ্চিত নশ্চিহ্ন হয়ে যাওয়ার হাত থেকে বাঁচতে সেই অনাধিকাল থেকে বিরুপ পরিবেশ সৃষ্টি হলে স্থান পরিবর্তন করে যাচ্ছে। যাচ্ছে উত্তম কোন স্থানে। হোক সে স্থান হাজার মাইল দুরে। তাই বলা যায় মানুষের ইতিহাস মাইগ্র্যাশনের ইতিহাস। শুধু পথ চলা শুধু পথ খোঁজা। আমেরিকান নেটিভদের পুর্ব পুরুষরা প্রায় ২০০০০ বছর আগে সাইবেরিয়া হয়ে দুরবর্তি পুর্বাঞ্চল থেকে এসেছিল বলে মানব বিজ্ঞানীদের ধারনা। আবহাওয়ার পরিবর্তনের ফলে এতদঅঞ্চলে খরা ও প্রকট খাদ্যাভাব দেখা দেয়। এর থেকে নিস্কৃতি পাওয়ার জন্য মানুষ দলে দলে ক্রমাগত পশ্চিম দিকে সরতে থাকে। একসময় তারা পৌঁছে যায় সাইবেরিয়া (যা বর্তমানে রাশিযার অংশ)। তারপর সাইবেরিয়া থেকে ছুটতে থাকে আরো পশ্চিমে। এবার একেবারে বেরিং প্রনালী তীরে। একসময় যে বেরিং প্রনালী ছিল জলে ভরা তার বৈশিষ্ট বদলে গেল। গøাসিয়ারের প্রভাবে বেরিং প্রনালীর গভীরতা কমে গেল একসময় আর জলই রইলোনা তাতে। সেটি হয়ে গেল শক্ত বরফের এক ব্রীজ যা পুর্বের সাইবেরিয়াকে সংযুক্ত করলো পশ্চিমের আলাস্কার সাথে। উন্মুক্ত এ ব্রীজ পেয়ে মানুষ ছুটলো আরো পশ্চিমে। যেতে যেতে পৌঁছে গেল আলাস্কা। এবার প্রশান্ত মহাসাগরের কিনার ধরে ক্রমাগত দক্ষিনে। এভাবে মানুষ ছড়িয়ে পড়লো সারা আমেরিকায়। আমেরিকান নেটিভদের পুর্ব পুরুষরা এই মাইগ্র্যান্টদের দল ভুক্ত ছিল বলে মানব বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস। ছবিটা দেখতে দেখতে আমি যেন নিথর হয়ে যাচ্ছিলাম। মানুষ কি একটা সময় পার করেছে শুধু বেঁচে থাকার জন্য শুধু টিকে থাকার জন্য! আজকে আমরা তাদের তুলনায় কত সৌভাগ্যবান, কত সহজিয়া আমাদের জীবন! মিউজিয়ামটা সময়ের অভাবে ভালো করে দেখতে পারলাম না। তাড়া তাড়ি ঘাটে ফিরে এলাম এবং ফেরিতে উঠে পরলাম। ফেরি যথা সময়ে ছেড়ে দিল এবং আমরাও যথা সময় নিউ ইয়র্ক সিটির ফেরি ঘাটে চলে এলাম। ফেরি থেকে নেমে ঘাটের এপাশ ওপাশ একটু দেখলাম। তারপর টেক্সি নিয়ে আবার সেখানে যেখানে নাছির ভাই গাড়ি পার্ক করে রেখে এসেছেন। আমরা নাছির ভাইর গাড়িতে উঠে বসলাম। হাতে এখনও অনেক বেলা। নাছির ভাই বললেন- কোথাও যাই, বাসায় গিয়ে কি করবো। নাছির ভাই একটু ভাবলেন, তারপর বললেন- যাই, টাইমস স্কয়ারে যাই। আমি বললাম- ঠিক আছে, চলেন। টাইমস স্কয়ারে যাচ্ছি; বেশ আনন্দ অনুভব করছি। বিশ্ব নন্দিত দৈনিক ‘দি নিউ ইয়র্ক টাইমস’ পত্রিকার নামে এই স্কয়ারের নাম। সে স্কয়ারে পা রাখবো আজ, এতো ভারি আনন্দেরই। নিউ ইয়র্ক টাইমস দৈনিক নিয়ে একটু বলি। নিউ ইয়র্ক টাইমস দুনিয়া বিখ্যাত একটি দৈনিক পত্রিকা যা আমেরিকার নিউ ইয়র্ক থেকে প্রকাশিত হয়। এর প্রথম সংখ্যা প্রকাশিত হয় ১৮৫১ সনের ১৮ সেপ্টেম্বর। তার পর থেকে বিরতিহীনভাবে প্রতি দিন প্রকাশিত হচ্ছে এই দৈনিক। টাইমস স্কয়ার নিউ ইয়র্কের সব চেয়ে বেশি পরিচিত একটা এলাকা। এটি নিউ ইয়র্কের সব চেয়ে বড় ব্যাবসা কেন্দ্র। এখান থেকেই নিয়ন্ত্রিত হয় বিশ্ব বানিজ্যের সকল ধারা উপ ধারা, গতি প্রকৃতি। সে জন্য নিউ ইয়র্কের টাইমস স্কয়ারকে বলা হয় পৃথিবীর হৃদপিন্ড। টাইমস স্কয়ার বিশ্বের ক্রসরোড বা এড়ো পথ হিসেবে সুপরিচিত। ব্রডওয়ে, সপ্তম এভিনিউ, ৪২তম স্ট্রীট এবং ডাফি স্কয়ারের মিলনের ফলে ম্যানহাটনে সৃষ্টি হয়েছে এই জগৎ বিখ্যাত স্কয়ার। টাইমস স্কয়ারকে বলা হয় ব্রডওয়ে থিয়েটার ডিস্ট্রিক্টের হাব। এই থিয়েটার ডিস্ট্রিক্ট- এ বিপুল সংখ্যক থিয়েটারের অবস্থান। থিয়েটার ছাড়াও বিনোদনের আরো নানা রকম সামগ্রী এবং পন্থা আছে এই টাইমস স্কয়ারে। সে জন্য টাইমস স্কয়ার অন্যতম গুরুত্ত¡পুর্ণ একটি বিনোদন শিল্প কেন্দ্র হিসেবে সারা বিশ্বে সুপরিচিত। পথচলা পথযাত্রীদের ভিড়ে সারা দিন অভাবনীয়রকম মুখর থাকে বিশ্বের যে কয়েকটি এলাকা টাইমস স্কয়ার সে গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি। পৃথিবীতে শহরের অভাব নাই। কিন্তু টাইমস স্কয়ারের মত এলাকা বুকে ধারন করা নিউ ইয়র্কের মত শহর খুব কম। টাইমস স্কয়ার চুম্বকের মত টুরিস্ট আকর্ষণ করে। প্রতি বছর প্রায় ৫০ মিলিয়ন টুরিস্ট টাইমস স্কয়ার পরিদর্শনে আসে। প্রতি দিন প্রায় ৩৩০০০০ মানুষ (কাজে – অকাজে আসা) টাইমস স্কয়ারের উপর দিয়ে হেঁটে যায়। ফ্যাস্টবল থাকলে সেদিন টাইমস স্কয়ারে পা রাখে ৪৬০০০০ – এর বেশি পথচারি। ফ্যাস্টিবল দিনগুলোতে টাইমস স্কয়ার পদ যাত্রীদের পদভারে কিভাবে প্রকম্পিত হয় তা শুধু নিজ চোখে দেখলেই বিশ্বাস হবে। টাইমস স্কয়ারের পুর্ব নাম ছিল লঙেকর স্কয়ার। ‘দি নিউ ইয়র্ক টাইমস’ এখানে নতুন ভবন নির্মান করে এবং ১৯০৪ সনে এর প্রধান দপ্তর নতুন ভবনে স্থানান্তর করে। মোটা মুটি সেই ১৯০৪ সনে লঙেকর স্কয়ারের নতুন নাম হলো টাইমস স্কয়ার যে স্কয়ার এখন বিশ্বব্যাপি প্রায় সব মানুষের চেনা।

উন্নত বিশ্বের একটি শহরের কোন এলাকায় মানুষের এতটা ভিড় ভাট্টা লেগে থাকতে পারে তা আমি কখনো ভাবিনি। একে বারে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে হাঁটা। কেন এত লোক, এত লোক কি করে এখানে তা বুঝে উঠতে পারছিলাম না। শহরের কোথাও এত বিল বোর্ডের ছড়াছড়ি আমি জীবনে দেখি নাই। এ সব বিল বোর্ড দেখে হাঁটতে গেলে আমারা মত মানুষ যে হারিয়ে যাবে আমার ছেলে বুঝে গিয়েছিল। আমার ছেলে দুইদিন পর টরন্টো থেকে এসে নিউ ইয়র্কে আমাদের সাথে যোগ দিয়েছিল। এসেই সে তার সাথে করে টরন্টো থেকে আনা আল্ট্রা- সাউন্ড পজিশন সেনসর আমাকে দিল যা আমি প্রতিদিন ঘর থেকে বের হওয়ার সময় প্যান্টের বেল্টের সাথে আটকে দিতাম। এটা রাখতাম এ জন্য যে আমি হারিয়ে গেলে যাতে ছেলে আমার পজিশন সহজে বুঝতে পারে এবং আমাকে খুঁজে পায়। টাইমস স্কয়ারে ইন্টারসেকশনগুলো খুব ঘন ঘন। তবে অবস্থা ভালো না। পথচারিরা সিগনাল সেরকম সিরিয়াসলি মানে না। গাড়ি ওয়ালারাও বেশ সহনশীল। হর্ণ বাজিয়ে বিরক্ত করে না। পথচারিদের মনের খেয়ালি ভাবকে মেনে নেয়, ধীরে চলে। টাইমস স্কয়ারে হাঁটতেছি। নাছির ভাই আমাদের সব বুঝায়ে দিচ্ছিলেন। এভাবে হাঁটতে হাঁটতে বুঝতেই পারিনি দিবস কখন রজনীতে রুপান্তরিত হয়েছে। রাতের স্কয়ার আরো সুন্দর আরো মুখর। আমরা বাসায় ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। গাড়িতে উঠে বসলাম। চালকের আসনে সেই নাছির ভাই। কিছু দুর চলার পর নাছির ভাই হঠাৎ বিরক্তি সূচক একটি শব্দ করলেন। আমি বললাম- “কি হয়েছে নাছির ভাই”? “রাস্তা বন্ধ”, নাছির ভাইর উত্তর। নাছির ভাই গাড়ি ঘুরালেন। এই পথ সেই পথ বহু পথ ঘুরে শেষে বাসায়। নাছির ভাই বললেন – আজতো উইক ডে, তাতেই এই অবস্থা, এখন বুঝেন উইক এন্ডে কি অবস্থা হয়। রাতে খাবার খেতে বসলাম। এলাহি কান্ড! রান্না করা,নানান পদের খানা মেহমানকে খাওয়ানো এসব হলো ভাবির হবি বা শখ। কিন্তু নানা রকম খানা খাওয়াতো ষাটোর্ধ একটা মানুষের যে হবি বা শখ হতে পারে না তা ভাবিকে কিভাবে বুঝাই! এত সংসারী, এত নিবেদিত প্রান, এত ধৈর্যশীল গৃহিনী খুব কম ঘরেই আছে। নাছির ভাই খুব ভাগ্যবান।

আজ ঘুম থেকে একটু দেরিতেই উঠলাম। জানালা দিয়ে বাহিরে তাকাতেই মনের সব ভালো লাগা মিলিয়ে গেল। বাহিরে বৃষ্টি আর বাতাস। আজ যে এরকম দিন আসবে সে খবর অজানা ছিল কাল। যাক, ভাবলাম খারাপ কি! বাসায় থাকবো আজ। সবাই মিলে গল্প সল্প করে সময় কাটিয়ে দেব। দিন ভরতো আর বৃষ্টি থাকবে না। নিশ্চয় পরিস্কার আকাশের দেখা মিলবে বিকালে। বিকাল নিয়ে আমি একটু চিন্তিত। কারণ বিকালে আমার ভাগিনা আসবে কুইনস থেকে আমাদের সাথে দেখা করতে। ভাগিনা একা থাকে নিউ ইয়র্কে। চাকুরি করে। ওর মা বাবা থাকে অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ণ শহরে। ফলে ছেলেটিকে দেখার জন্য মন আনচান করছিলো। ভাবনা চিন্তা বাদ দিয়ে এবার ল্যাপটপ নিয়ে বসলাম। ইনবক্স খুলেতো আমি অবাক। একি ! স্টাচু অব লিবার্টি-এলিস আইল্যান্ড ফাউন্ডেশন, লিবার্টি আইল্যান্ড, নিউ ইয়র্ক থেকে আমার কাছে মেইল। স্টাচু অব লিবার্টি মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষ মিউজিয়াম পরিদর্শনের জন্য আমাকে ধন্যবাদ জানিয়েছে আর পাঠিয়েছে স্টাচু অব লিবার্টি মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষের তৈরি করা আমার একটা ব্যক্তিগতকৃত স্যুভেনির (স্টাচু অব লিবার্টি মিউজিয়াম এর নিজস্ব ফ্রেমে বাঁধানো আমার একটা মুখচ্ছবি)। অনাবিল আনন্দে মনটা আমার হঠাৎ ভরে গেল।