অনলাইন ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক সিটির কাউন্সিলর পদে লড়বেন বাংলাদেশি আইনজীবী সোমা সায়ীদ। আগামী ২০২১ এর সিটি কাউন্সিল নির্বাচনে ডিস্ট্রিক্ট-২৪ এ কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।

অ্যাটর্নি সোমা কুইন্স কাউন্টি ওমেন্স বার অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট, নিউইয়র্ক স্টেট বার অ্যাসোসিয়েশনের রেফারেল অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের চেয়ারপারসন। তার এ ঘোষণার পর নির্বাচনী প্রচারণা কাজের অংশ হিসেবে ওয়েবসাইট উন্মোচন করেছেন। ইতোমধ্যে তিনি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য রেজিস্ট্রেশন করেছেন।

অ্যাটর্নি সোমা সায়ীদ বলেন, অনেকগুলি লক্ষ্য সামনে নিয়ে তিনি অংশ নিচ্ছেন। এর মধ্যে রয়েছে হেলথ জাস্টিস, ইকোনমিক জাস্টিস, পুলিশ রিফর্ম, অ্যাফোর্ডেবল হাউজিং, শিক্ষা ইত্যাদি। এছাড়াও জাস্টিস ও ইক্যুয়ালিটির বিষয়টিকে তিনি প্রাধান্য দিচ্ছেন।

হেলথ জাস্টিসের ব্যাপারে তিনি বলেন, সিঙ্গেল পেয়ার হেলথ কেয়ার আমাদের নিউইয়র্কবাসীদের দীর্ঘদিনের প্রত্যাশা। আমি সিঙ্গেল পেয়ার হেলথ কেয়ারের জন্য ফাইট করব।

ইকোনমিক জাস্টিসের ব্যাপারে সোমা সায়ীদ বলেন, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য অর্থনৈতিক ন্যায় বিচার এখনই দরকার। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সহায়তা না করা পর্যন্ত সিটি কখনো অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারবে না। করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য প্রতিমাসে ১০০০ ডলারের একটি গ্রান্ট বা প্যানডাামিক ভাতা এবং যে সব ব্যবসায়ী ২০০ হাজারের নিচে আয় করেন তাদের জন্য গ্র্যান্ট বরাদ্দের জন্য তিনি একটি বিল আনবেন।

পুলিশ রিফর্ম বিষয়ে তিনি বলেন, সিভিলিয়ান কমপ্লেন রিভিউ বোর্ডকে ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি অফিসের সঙ্গে একীভূত বা অধিভুক্ত করতে হবে। পুলিশ প্রশাসন এবং সমাজের সকল শ্রেণির মানুষের মধ্যে সহযোগিতার মাধ্যমে অনেক ভালো সম্পর্ক ও পারস্পরিক আস্থা গড়ে তোলা সম্ভব। কমিউনিটি পুলিশিংয়ের জন্য বাজেট বরাদ্দ করতে হবে। পাশাপাশি ভালো এডুকেশন প্রোগ্রাম নিয়ে আসতে হবে।

হাউজিংয়ের ব্যাপারে অ্যাটর্নি সোমা সায়ীদ বলেন, অ্যাফোর্ডেবল হাউজিং একটি মানবাধিকার ও মৌলিক অধিকার। আমাদের সিটি এই মৌলিক অধিকার পূরণে এবং প্রয়োজনীয় সংখ্যক অ্যাফোর্ডেবল হাউজিং বরাদ্দ দিতে ব্যর্থ হয়েছে। নিউইয়র্ক সিটিতে হোমলেসদের জন্য আরও অনেক হোমলেস শেল্টার প্রয়োজন। সেটা করতে হবে।

তিনি বলেন, অ্যাফোর্ডেবল হাউজিংয়ের জন্য যেসব লুপ-হোল আছে আমি সেগুলো বন্ধের জন্য ফাইট করব। স্বল্প আয়ের পরিবার এবং সিনিয়রদের জন্য হাউজিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।

শিক্ষা সম্পর্কে তিনি বলেন, আমাদের স্কুলগুলো থেকে পুলিশ বের করতে হবে। স্কুলগুলো আমরা প্রিজনের মতো আর দেখতে চাই না। স্কুলে প্যানডামিক মোকাবিলা করার জন্য পিপিপিই এবং অন্যান্য ইক্যুইপমেন্ট সরবরাহ ও আপডেট করতে হবে। ডিপার্টমেন্ট অব এডুকেশনের সাথে কাজ করে রিমোর্ট লার্নিং প্ল্যাটফর্মকে আরও মজবুত ও সহজ করতে হবে।

তিনি বলেন, পাবলিক হায়ার এডুকেশনের জন্য আরও ফান্ড বরাদ্দ করতে হবে। কিউনিকে সম্পূর্ণ ফ্রি করতে হবে। ভোকেশনাল ও টেকনিক্যাল শিক্ষাকে আমাদের স্কুল ও কলেজগুলোতে স্থায়ী করতে হবে। আমি সব সময় ফেয়ার এডুকেশনের জন্য কাজ করছি।

উল্লেখ্য, অ্যাটর্নি সোমা সায়ীদ প্রথম একজন মুসলিম ও দক্ষিণ এশিয়ান নারী অ্যাটর্নি, যিনি ৯০ বছরের পুরোনো একটি সংগঠনের প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচন করে জয়ী হয়েছেন। এটা অন্তত মুসলিম কমিউনিটি, দক্ষিণ এশিয়া তথা বাংলাদেশের কমিউনিটিকে রিপ্রেজেন্ট করেছে। তিনি জানান দিতে পেরেছেন যে আমরাও এগিয়ে আছি।

সোমা সায়ীদ একজন সংগ্রামী নারী। নিজের নামে গড়ে তুলেছেন অ্যাটর্নি সোমা সায়ীদ অ্যান্ড অ্যাসোসিয়েটস। তিনি কাজ করেন নিজের ফার্মে। তিনি সিভিল ও ক্রিমিনাল দুই ধরনের মামলাই পরিচালনা করেন। সোমা ২০০৪ সালে নিউইয়র্ক বারের সদস্য হন। ১৬ বছর ধরে নিউইয়র্কে আইন পেশায় জড়িত।

তিনি কাজ করেন সাউদার্ন ডিস্ট্রিক্ট অব নিউইয়র্ক, ইস্টার্ন ডিস্ট্রিক্ট অব নিউইয়র্ক, সাউদার্ন ডিস্ট্রিক্ট ব্যাংকক্রাপসি কোর্ট, ইস্টার্ন ডিস্ট্রিক্ট ব্যাংকক্রাপসি কোর্ট, ইউএস ট্যাক্স কোর্ট এবং সেকেন্ড সার্কিট কোর্ট অব আপিলসে। আইন পেশা ও অন্যান্য কর্মতৎপরতার জন্য তিনি একাধিক পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন।