শাহ আহমদ, নিউইয়র্ক : তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিউইয়র্কে বাংলাদেশিদের মধ্যে সংঘর্ষ, ভাঙচুর ও সহিংসতার ঘটনা ঘটছে। ১ আগস্ট জ্যাকসন হাইটসে গাড়ি পার্কিং নিয়ে বাংলাদেশিদের দুই পক্ষের মধ্যে এই ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানান, ১ আগস্ট রাত সাড়ে ১০টার দিকে ৭৩ স্ট্রিট ও নিকটবর্তী ৩৭ অ্যাভিনিউয়ে একটি গাড়ি পার্ক করতে গিয়ে পার্ক করা আরেকটি গাড়িতে ধাক্কা দেন চালক। দুই গাড়ির মালিকই বাংলাদেশি। এ সময় দুজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। এর মধ্যে একজন তাঁর পক্ষের লোকজনকে ঘটনাস্থলে আসার জন্য ফোন করেন। এতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। লোকজন ৯১১-এ কল করেন। কিছুক্ষণের মধ্যে জ্যাকসন হাইটস এলাকায় প্রায় ১০-১২টি পুলিশের গাড়ি অবস্থান নেয়। একপর্যায়ে পুলিশের সামনেই দুই পক্ষের মারামারির ঘটনা ঘটে। এতে পার্কিং করা গাড়ির কাচ ভাঙচুর করা হয়।
পরে পুলিশ দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে ঘটনার নিষ্পত্তি করে। কিন্তু এর কয়েক ঘণ্টা পরই রাত একটার দিকে আবারও কয়েকটি গাড়ি ও মোটরসাইকেল ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
ভাঙচুরের ওই ঘটনার দৃশ্য দেখে স্থানীয় কয়েকজন ৯১১-এ ফোন করলে পুলিশ আবারও ঘটনাস্থলে আসে।
প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানান, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এমন সহিংসতা প্রায়ই ঘটছে। প্রবাসীরা নিউইয়র্কে খুব আতঙ্কে আছি। নিউইয়র্কে ৯১১ কল দিলে পুলিশ আসে, কিন্তু পুলিশের কিছুই করার নেই। এর জন্য সিটি মেয়র দায়ী। এভাবে চললে যেকোনো সময় তুচ্ছ ঘটনার কারণে আরও বড় দুর্ঘটনা, এমনকি প্রাণহানির মতো ঘটনা ঘটবে।
কয়েক মাস ধরে নিউইয়র্ক নগরী অপরাধের কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়েছে। হত্যা, চুরি-ডাকাতি, রাহাজানি, ধর্ষণ, বন্দুকযুদ্ধসহ হেন অপরাধ নেই, যা এই নগরে ঘটছে না। নিউইয়র্ক এখন রীতিমতো আতঙ্কের নগরে পরিণত হয়েছে। হঠাৎ করে অপরাধ বেড়ে যাওয়ার পেছনে আমেরিকার রক্ষণশীল নেতারা নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্য ও নগরের ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতৃত্বকে দায়ী করছেন।
প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, এ বছরের ২৬ জুলাই পর্যন্ত প্রায় ৭ মাসে নিউইয়র্ক সিটিতে ৭৪৫টি গুলির ঘটনা ঘটেছে। আগের বছরের একই সময়ে সে সংখ্যা ছিল ৪৩১ অর্থাৎ বেড়েছে ৭৩ শতাংশ। খুনের ঘটনা গত বছরের এ সময়ে ছিল ১৭৬। এ বছরে এ পর্যন্ত খুন হয়েছে ২২৭টি।