আকতার হোসেন : বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে একদিন একটি কবিতা লিখবো। তার আগে একবার তাঁকে দেখতে যাব। তাঁর কথা এত শুনেছি। বত্রিশ নম্বর পথটাও চিনি। এই তো, ওয়াই ওয়াই জেড বিমানবন্দর পর্যন্ত যেতে পারলে সেখান থেকে বসে বসে যাওয়া যবে।
কোলকাতা থেকে ঢাকার আরমানিটোলা, ফরিদপুর থেকে রংপুর সর্বত্র নাকি গ্রিন গ্রিন গ্রাস শিশির ভেজা অপেক্ষায় থাকে তাঁর জন্য। শুনেছি নদীর পানিও কিছুটা উষ্ণতা ধরে রাখে যদি তিনি আবারো ঝাঁপ দেন নদী খালে কিংবা বিলে।
এত কথা শোনার পরেও কেউ কি প্যারিসে গিয়ে আইফেল টাওয়ার দেখতে চাইবে। না মস্কোর ঘণ্টা? আচ্ছা! আজকাল কি তিনি রেসকোর্সে যান? এরিনমোর টোব্যাকোর ঘ্রাণ ছড়িয়ে সেই পাইপটা টানেন? এখনো কি তাঁকে দেখার জন্য পিতার হাত ধরে শিশুরা এসে দাঁড়িয়ে থাকে লেকের পাড়ে?
শুনেছি বাংলাদেশের সব মানুষ গেছে বত্রিশ নম্বর। যারা এখনো যায়নি তারা ছাকনিতে আটকে গেছে। বলতে ভয় হয়, তবু বলি। খুব ইচ্ছে হয় বঙ্গবন্ধুর মত আমারও একটা হাত থাকুক। যেমন খুশি দুলিয়ে দেখবো স্বাধীনতা শব্দটি তর্জনীর আগায় বাজাতে পারি কিনা। খুব সখ হয় বুকটা যেন বঙ্গবন্ধুর মত মজবুত হয়। যাতে বলতে পারি বুকের ওপর গুলি চালাবার চেষ্টা করো না।
এবার আসল কথায় আসি। যদি নিজের ভেতর একটি সিঁড়ি বানাতে পারি তাহলে বলবো এসো পিতা, ভেজা পতাকায় তোমায় ঢেকে রাখি শত আয়ু দিয়ে। যদি চাঁদা দিয়ে ক্ষমতায় যেতে পারি। হতে পারি মন্ত্রী বাহাদুরের মত হুকুমদার। তবে তোমার নামে যত স্থাপনা পথঘাট অট্টালিকার নামকরণ হয়েছে সেগুলো মুছে দিব।
শুধু একটি নদীর নাম রাখবো তোমার নামে। তোমার কথা শুনতে শুনতে শুনতে… মুখস্থ হয়ে গেছে এবং সে কারণেই বুঝতে পারি যেখানে জলের অভাব সেখানে বঙ্গবন্ধুর নাম চিকচিক করে না। তাই জল চাই, হোক সে ফোঁটা ফোঁটা কিংবা গড়িয়ে পড়া।
তোমার বত্রিশ নম্বরই বাঙালির মস্কোর ঘণ্টা, প্যারিসের টাওয়ার, নায়াগ্রার জলপ্রপাত। এরচেয়ে বেশি কিছু গড়ে যারা, তারা ভাঙ্গার জন্য গড়ে। তারা জানে না তাজমহলের চেয়ে উজ্জ্বল একটি নদী আছে আমাদের। নদীটির নাম বত্রিশ নম্বর।