অনলাইন ডেস্ক : নতুন দায়িত্বে চ্যালেঞ্জ দেখছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নতুন মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম। তিনি বলেন, আমার জন্য এই দায়িত্ব চ্যালেঞ্জের। তবে সবার সহযোগিতায় তা ওভারকাম করতে পারব।
বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের এক আদেশে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমকে অবিলম্বে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের দায়িত্বে যোগ দিতে বলা হয়েছে। ডা. খুরশীদ আলম স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক পদে অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদের স্থলাভিষিক্ত হলেন, যাকে নানা কেলেঙ্কারি আর বিতর্কের মধ্যে সম্প্রতি ঐ পদ ছাড়তে হয়েছে।
বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) মহাসচিব ডা. ইহতেশামুল হক চৌধুরী দুলাল বলেন, নতুন ডিজি সবার প্রত্যাশার জায়গাগুলো চিহ্নিত করে কাজ করবেন, এটাই আমরা চাই। তার জন্য তিনটি চ্যালেঞ্জ—দুর্নীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও সমন্বয়হীনতা দূর করা। এটা ওভারকাম করতে পারলে উনি ভালো করবেন।
স্বাধীনতা চিকিত্সক পরিষদের (স্বাচিপ) সভাপতি অধ্যাপক ডা. ইকবাল আর্সালান বলেন, নতুন ডিজি খুবই মেধাবী এবং ঠান্ডা মেজাজের চিকিত্সক। মন্ত্রণালয় ও অধিদপ্তরের মধ্যে যে সমন্বয়হীতা রয়েছে, সেটি সমাধান করার পরামর্শ দেন তিনি। তবে মন্ত্রণালয় যদি খবরদারি বাদ দিয়ে তাকে সহযোগিতা করে তাহলে তিনি সফল হবেন বলে তিনি উল্লেখ করেন।
স্বাধীনতা চিকিত্সক পরিষদের (স্বাচিপ) মহাসচিব ডা. এম এ আজিজ বলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাসার মোহাম্মদ খুরশীদ আলমকে নিয়ে কোনো সময় আলোচনা-সমালোচনা নেই। উনি ভালো চিকিত্সক, ভালো সার্জন। সরকার তাকে বৈরী পরিবেশে নিয়োগ দিয়েছে। অধিদপ্তরের সবার সহযোগিতা, বিশেষ করে মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতা পেলে তিনি সফল হবেন। ১৬ কোটি মানুষের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের ক্ষেত্রে সফল হবেন বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দুর্নীতি ও অনিয়মের সঙ্গে অর্ধশতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী জড়িত। তাদের মধ্য থেকে সম্প্রতি দুই জনকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সিন্ডিকেটের বাকি সদস্যরা রয়েছেন বহাল তবিয়তে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেন, নতুন মহাপরিচালকের বড় চ্যালেঞ্জ হলো, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সিন্ডিকেট ভেঙে দেওয়া। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘শীর্ষ দুই কর্মকর্তাকে সরিয়ে দেওয়া, দুদক, ডিবির যাতায়াত এবং অধিদফতরের কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদে এক অস্থির এবং আতঙ্কিত সময় কাটাচ্ছি। কেউ কাউকে বিশ্বাস করতে পারছেন না, না জানি আবার কার বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে, তদন্ত শুরু হয়—সেই আতঙ্ক চলছে। কে কাকে কী বলবে, কথা বলতেই তো সবাই ভয় পাচ্ছে।’
প্রসঙ্গত, করোনা পরীক্ষায় অনুমোদনহীন বেসরকারি হাসপাতাল রিজেন্ট ও জেকেজির (জোবেদা খাতুন হেলথ কেয়ার) প্রতারণার খবর প্রকাশের পর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং স্বাস্থ্য অধিদফতরের সমন্বয়হীনতা প্রকাশ পায়। রিজেন্ট এবং জেকেজির শীর্ষ ব্যক্তিরা বর্তমানে কারাগারে, চলছে মামলা। তবে অনুমোদনহীন রিজেন্ট হাসপাতাল কীভাবে করোনা পরীক্ষার সরকারি তালিকাতে এলো—তা নিয়ে মন্ত্রণালয় এবং অধিদফতর একে অপরকে দোষারোপ করে। গত ১৯ জুলাই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নতুন ভবনে যায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধান টিম।