অনলাইন ডেস্ক : ইসরায়েলের সঙ্গে এক বছরের যুদ্ধে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পরেও হামাস ফিনিক্স পাখির মতো ধ্বংসস্তূপ থেকে পুনরায় উঠে দাঁড়াবে। এখনো ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠনটি যোদ্ধা নিয়োগ ও অস্ত্র উৎপাদন অব্যাহত রেখেছে। সোমবার (০৭ অক্টোবর) গাজা যুদ্ধের বর্ষপূর্তিতে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সঙ্গে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেছেন হামাসের নির্বাসিত নেতা খালেদ মেশাল।
হামাসের সাবেক এই প্রধান বলেন, ফিলিস্তিনি ইতিহাস বেশ কয়েকটি চক্র নিয়ে গঠিত। আমরা এক একটি পর্যায় দিয়ে যাই যেখানে আমরা শহিদদের হারাই এবং সামরিক সক্ষমতার কিছু অংশ হারাই। কিন্তু আল্লাহর রহমতে, ফিলিস্তিনি চেতনা ফিনিক্স পাখির মতো পুনরায় উজ্জীবিত হয়।
ফিনিক্স একটি পৌরাণিক পাখি। অনেক বছর বেঁচে এই পাখি আগুনে পুড়ে মৃত্যুবরণ করে এবং এরপর নিজের ছাই থেকেই আবার নতুন করে জন্ম নেয়। যুগ যুগ ধরে নবউদ্যমে পুনর্জন্মের প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে এই ফিনিক্স পাখি।
১৯৯৬ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত হামাসের সর্বোচ্চ নেতা ছিলেন খালেদ মেশাল। ১৯৯৭ সালে ইসরায়েল তাকে বিষ প্রয়োগ করে মারার চেষ্টা করলেও বেঁচে যান তিনি। হামাসের নেতৃত্বে প্রায় তিন দশক ধরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের কারণে মেশাল এখনো এই দলে প্রভাবশালী। বর্তমানে তাকে হামাসের কূটনৈতিক মুখপাত্র হিসেবে দেখা হয়।
মেশাল জানান, এখনো ইসরায়েলি সৈন্যদের বিরুদ্ধে গুপ্ত হামলা চালাতে সক্ষম হামাস যোদ্ধারা। সোমবারও সকালে গাজা থেকে ইসরায়েলের দিকে চারটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে হামাস। যদিও এর সবগুলো ঠেকিয়ে দেয় ইসরায়েল।
তিনি বলেন, আমরা আমাদের গোলাবারুদ ও অস্ত্রের একটি অংশ হারিয়েছি। তবে হামাস এখনো তরুণদের নিয়োগ করছে এবং গোলাবারুদ ও অস্ত্রের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ তৈরি করা অব্যাহত রেখেছে।
ইসরায়েলি হামলায় যত ক্ষতিই হোক না কেন হামাস লড়াই চালিয়ে যাবে, খালেদ মেশালের বক্তব্যে এমন আভাসই দেখছেন মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশ্লেষকরা। আন্তর্জাতিক ক্রাইসিস গ্রুপের মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা প্রোগ্রামের পরিচালক জোস্ট আর. হিল্টারম্যান বলেন, মোটের উপর আমি বলব (হামাস) এখনো জীবিত এবং সক্রিয়। সম্ভবত গাজায় কোনো না কোনোভাবে আবার ফিরে আসবে।
তিনি বলেন, ইসরায়েল যুদ্ধ শেষ হলে গাজার জন্য একটি পরিকল্পনা নির্দিষ্ট করেনি। এই সুযোগে হামাস পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হতে পারে। যদিও সম্ভবত আগের মতো শক্তিশালী বা একই রূপে নয়।