অনলাইন ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জন বোল্টন নিজের নতুন বইতে দাবি করেছেন, দ্বিতীয় দফায় দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবার জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাহায্য পেতে চেষ্টা করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রে শিগিগরই প্রকাশিত হতে যাওয়া বইটিতে বোল্টন দাবি করেছেন, ট্রাম্প চেয়েছিলেন মার্কিন কৃষকদের উত্পাদিত পণ্য কিনুক চীন। ‘দ্য রুম হোয়্যার ইট হ্যাপেনড’ নামে বইটি আগামী ২৩ জুন প্রকাশ হবার কথা রয়েছে।

জানুয়ারিতে হোয়াইট হাউজ বলেছিল, বইটিতে ‘টপ সিক্রেট’ তথ্য এবং বর্ণনা রয়েছে, যা অবশ্যই বাদ দিতে হবে। তবে বোল্টন সেসময় তা নাকচ করে দিয়েছিলেন। ট্রাম্পের অভিশংসন বিচারের ক্ষেত্রে যেসব প্রশ্ন উঠেছিল, তা বোল্টনের বইটিতে স্থান পেয়েছে।

জিনপিংকে নিয়ে কী রয়েছে : অভিযোগটি উঠেছে মূলত জাপানের ওসাকায় গত বছরের জুনে জি-২০ সম্মেলনের ফাঁকে ট্রাম্প এবং শি জিনপিংয়ের মধ্যে হওয়া এক বৈঠক নিয়ে। নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত নতুন বইটির সারসংক্ষেপে বোল্টন দাবি করেছেন, ‘চীনের প্রেসিডেন্ট অভিযোগ করেছিলেন, কিছু মার্কিন সমালোচক চান চীনের সঙ্গে যাতে নতুন করে স্নায়ুযুদ্ধ শুরু হয়। ট্রাম্প ভেবেছিলেন জিনপিং হয়তো তার ডেমোক্র্যাটিক প্রতিপক্ষের কথা বলছেন। এরপর বিস্ময়করভাবেই ট্রাম্প আলোচনা ২০২০ সালে অনুষ্ঠিতব্য প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দিকে ঘুরিয়ে দেন। চীনের অর্থনৈতিক সামর্থ্যের কথা উল্লেখ করে ট্রাম্প নির্বাচনে জেতার জন্য জিনপিংয়ের সাহায্য চান। তিনি কৃষকদের গুরুত্বের ওপর এবং দেশটি থেকে চীনের সয়াবিন ও গম ক্রয়ের বর্ধিত হারের ওপর বারবার জোর দিচ্ছিলেন। এরপর চীনা প্রেসিডেন্ট যখন বাণিজ্য আলোচনায় কৃষি উত্পাদনের ওপর জোর দেওয়া হবে বলে মন্তব্য করেন, ট্রাম্প তখন তাকে ‘চীনের ইতিহাসে শ্রেষ্ঠ নেতা’ বলে মন্তব্য করেন।’

বই বিতর্ক : নতুন বইয়ের তথ্য ট্রাম্পের ইমপিচমেন্টের ঘটনা মনে করিয়ে দেবে। ট্রাম্প প্রশাসন ইতিমধ্যেই আইনি ব্যবস্থার মাধ্যমে বইটির প্রকাশনা আটকে দেবার চেষ্টা করছে। ডিপার্টমেন্ট অব জাস্টিজের অভিযোগ, বইটিতে ‘ক্লাসিফায়েড’ অর্থাত্ ‘রাষ্ট্রীয়’ গোপনীয় তথ্য রয়েছে। এদিকে, বইটি নিয়ে ইতিমধ্যেই নানা ধরনের বিতর্ক তৈরি হয়েছে।

অস্বীকার : এদিকে, মার্কিন ট্রেড রিপ্রেজেন্টেটিভ রবার্ট লাইথিজার এক প্রতিক্রিয়ায় বোল্টনের বক্তব্যকে নাকচ করে দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে ঐ আলোচনায় দ্বিতীয় দফা নির্বাচনে জেতার ব্যাপারে কোনো আলোচনা হয়নি।’

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের এপ্রিলে হোয়াইট হাউজে যোগ দেন বোল্টন। একই বছরের সেপ্টেম্বরে তিনি জানান যে, তিনি জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার পদ ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সংবাদমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাম্প বলেছিলেন, প্রেসিডেন্টের সঙ্গে মতানৈক্য হবার কারণে তাকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।—বিবিসি