অনলাইন ডেস্ক : টানা দ্বিতীয় বছর কমেছে চীনের জনসংখ্যা। মূলত জন্মহার রেকর্ড পরিমাণ কমে যাওয়া এবং করোনাভাইরাসে মৃত্যুর কারণে জনসংখ্যা কমেছে বলে জানিয়েছে দেশটি। চীনের জাতীয় পরিসংখ্যান দপ্তর (এনবিএস) আজ বুধবার (১৭ জানুয়ারি) জনসংখ্যার হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করে। সংস্থাটি বলছে, গত বছরে (২০২৩ সাল) দেশটির জনসংখ্যা কমে ১৪০ কোটি ৯০ লাখে নেমে এসেছে, যা আগের বছরের তুলনায় ২০ লাখ ৮০ হাজার কম। খবর সিএনএন।
এদিকে, ভারতের পর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনসংখ্যার দেশটিতে এমন পরিবর্তন দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতির এই দেশটিতে তাৎপর্যপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে। এনবিএস নিশ্চিত করেছে, গত বছর চীনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ছিল ৫ দশমিক ২ শতাংশ। দেশটির সরকার ২০২৩ সালে ৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিল। ২০২২ সালের তুলনায় গত বছর চীনের অর্থনীতিতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে। ওই বছর মাত্র ৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধির দেখা পেয়েছিল চীনা অর্থনীতি। যদিও গত ৩০ বছরের বেশি সময়ের মধ্যে বর্তমানে চীনের অর্থনীতি সবচেয়ে নাজুক অবস্থায় রয়েছে।
দেশটিতে শিশু জন্মের হার রেকর্ড পরিমাণে কমে গেছে। এনবিএসের তথ্যানুযায়ী, গত বছর দেশটিতে প্রতি এক হাজার জনের বিপরীতে জন্মহার ৬ দশমিক ৩৯। ২০২২ সালেও এ হার ছিল ৬ দশমিক ৭৭। ১৯৪৯ সালে চীনা কমিউনিস্ট পার্টি প্রতিষ্ঠার পর থেকে দেশটিতে এটিই সবচেয়ে কম জন্মহারের রেকর্ড। গত বছরজুড়ে চীনে ৯০ লাখ ২০ হাজার শিশুর জন্ম হয়েছে। এর আগের বছর ২০২২ সালে দেশটিতে ৯৫ লাখ ৬০ হাজার শিশুর জন্ম হয়েছিল।
দেশটির অর্থনীতির জন্য বড় উদ্বেগের বিষয় শ্রমশক্তি কমতে থাকা। দেশটিতে ১৬ থেকে ৫৯ বছর বয়সী শ্রমশক্তি ২০২২ সালের তুলনায় গত বছর এক কোটি ৭ লাখ ৫০ হাজার কমেছে। অন্যদিকে ৬০ বছরের বেশি বয়সীদের সংখ্যা ২০২২ সালের তুলনায় বেড়েছে এক কোটি ৬৯ লাখ ৩০ হাজার।
গত কয়েক দশকে মধ্যে ২০২২ সালে প্রথমবারের মতো চীনের জনসংখ্যা কমতে শুরু করে। বিশ্লেষকদের মতে, ১৯৬১ সালে মাও সে-তুংয়ের আমলের দুর্ভিক্ষের পর ২০২২ সালে দেশটির জনসংখ্যা প্রথমবার কমে যায়। এ ছাড়া গত বছর ভারতের কাছে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যার দেশ হিসেবে দীর্ঘ দিনের তকমা হারিয়েছে চীন।