Home জাতীয় দুর্ভিক্ষের কবলে যেন পড়তে না হয়, সতর্ক হওয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

দুর্ভিক্ষের কবলে যেন পড়তে না হয়, সতর্ক হওয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর

অনলাইন ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশে যাতে দুর্ভিক্ষ না আসে সেজন্য এখন থেকেই আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। আমরা এখনই বিপদে পড়েছি তা নয়। কিন্তু আগাম ব্যবস্থাটা নিতে হবে, যেন ভবিষ্যতে দেশ কোনো বিপদে না পড়ে। আমাদের সেই সতর্কতাটা একান্তভাবে দরকার এবং সেই সতর্ক বার্তাটাই আমরা দিচ্ছি।

আজ রোববার নিজ কার্যালয়ে আনুষ্ঠানিক সচিব সভায় সূচনা বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রেক্ষিতে দেশকে যাতে দুর্ভিক্ষের কবলে পড়তে না হয় সেজন্য জনগণকে সচেতন করার পাশাপাশি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিতে সচিবদের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। খবর- বাসস

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বলা হচ্ছে যে, বিশ্বে দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে। বিশ্ব অর্থনীতি যখন করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে বিপর্যস্ত, তখন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, নিষেধাজ্ঞা এবং পাল্টা নিষেধাজ্ঞা বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দা তৈরি করেছে। একটি বা দুটি দেশ এই সংকটের সুবিধা পাচ্ছে এবং উন্নত দেশসহ বাকি দেশগুলো কষ্টে রয়েছে।

তিনি বলেন, উন্নত দেশগুলোও গুরুতর সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে, যার জন্য তাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং রিজার্ভ অর্থ হ্রাস পাচ্ছে। বিশ্বজুড়ে মূল্যস্ফীতি বহুগুণ বেড়েছে। আমাদের দেশ এর আওতার বাইরে নয় এবং এটি আমাদের দেশেও আঘাত করেছে।

প্রধানমন্ত্রী বেশ কয়েকটি প্রস্তাব বাস্তবায়নের পরামর্শ দিয়েছেন, যার মধ্যে রয়েছে- সরকারি ব্যয়ে সাশ্রয়ী হওয়া, অগ্রাধিকার ভিত্তিক উন্নয়ন প্রকল্প নির্ধারণ, রপ্তানি বহুমুখীকরণ, বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের জন্য দক্ষ জনশক্তি তৈরি করা এবং প্রতি ইঞ্চি পতিত জমি চাষের অধীনে নিয়ে আসার জন্য জনগণকে সচেতন করা এবং বিদ্যুৎ ও গ্যাস ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়া।

শেখ হাসিনা বলেন,আমাদের যারা রেমিটেন্স পাঠায় তাদের জন্য বিভিন্ন ধরনের সুযোগ ও প্রণোদনা আমরা দিয়েছি। পাশাপাশি আমাদের ভাল রিজার্ভ রয়েছে। আমাদের তিন মাসের খাদ্য কেনার মতো রিজার্ভ থাকলেই যথেষ্ট। সেখানে আমাদের ৫/৬ মাসের রিজার্ভ আছে। তারপরও আমাদের এখন যা অবস্থা তাতে আমাদের একটু সাশ্রয়ী হতে হবে, আরেকটু সচেতন হতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, প্রত্যেকটা মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রমের তথ্য তাদের ওয়েবসাইটে থাকার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে যাতে যেকেউ যেকোনো তথ্য ওখান থেকে জানতে পারে, নিতে পারে। সেখানে আমাদের সাফল্যগুলো তুলে ধরতে হবে।

খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার কথা উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, আমাদের অনেক জিনিস এখনো কিনতে হয়। যে সমস্ত জিনিস আমাদের বাইরে থেকে কিনতে হয় তারমধ্যে যে সব জিনিস আমরা দেশে উৎপাদন করতে পারি সেই দিকে আমাদের এখন দৃষ্টি দিতে হবে যেন দেশীয় উৎপাদনের মাধ্যমে আমরা আমাদের চাহিদা পূরণ করতে পারি। অন্তত বাইরের উপর নির্ভরশীলতা যতটা কমাতে পারি।

বিদ্যুৎ মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হলেও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য জ্বালানি তেলের দাম বা গ্যাসের দাম বেড়ে যাওয়ায় এক্ষেত্রেও বাংলাদেশে কিছুটা সমস্যা হয়েছে বলেও জানান তিনি।

আগামীতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র চলে আসলে সংকট অনেকাংশে কেটে যাবার আভাস দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তবে আমাদের গ্রিড লাইন নির্মাণ কাজ আরও দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে।

শেখ হাসিনা সকলকে বিদ্যুৎ ও জ্বালানির ব্যবহারে সাশ্রয়ী হওয়ার জন্য তাঁর আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করেন।

Exit mobile version