Home কানাডা খবর দুর্বল হচ্ছে কানাডার অর্থনীতি, সামনে কঠিন দিনের সতর্কতা অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ডের

দুর্বল হচ্ছে কানাডার অর্থনীতি, সামনে কঠিন দিনের সতর্কতা অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ডের

অনলাইন ডেস্ক : আসন্ন মাসগুলোয় কানাডার অর্থনীতিতে অস্থিরতা দেখা দেয়ার আশঙ্কায় নাগরিকদের সতর্ক করেছেন অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড। কারণ ক্রমবর্ধমান সুদের হার এক সময়ের উত্তপ্ত অর্থনীতিকে দুর্বল করে দেবে এবং কিছু লোককে তাদের চাকরি হারাতে বাধ্য করবে।

ব্যাংক অব কানাডা মূল্যস্ফীতির লাগাম টেনে ধরার চেষ্টা করছে। কর্তৃপক্ষ মূল্যস্ফীতি ২ শতাংশে নামিয়ে আনার চেষ্টা করছে। তবে এ সুদহার বৃদ্ধির প্রভাব বুঝতে কিছুটা সময় লাগবে। উচ্চ সুদহার আবাসন খাতে ধস নামাবে। গত ফেব্রæয়ারিতে বাড়ির দাম বেড়ে যাওয়ার পর এ খাতে স্থবিরতা চলছে। ব্যবসা ও ভোক্তাদের ঋণ নেয়ার হার বেড়ে যাচ্ছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে অর্থনীতি।

অন্টারিও প্রদেশের উইন্ডসর শহরে গাড়ি শিল্পের এক সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী বলেন, মর্টগেজ বা বন্ধকী ঋণ ও বেকারত্বের হার বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আমাদের অর্থনীতির গতি ধীর হবে। এমন কেউ থাকবে না যার বন্ধকী ঋণ বাড়বে। ব্যবসা বিকশিত হবে না। বেকারত্বের হার রেকর্ড বাড়বে। কানাডা এ ধরনের অভিজ্ঞতা প্রত্যক্ষ করতে যাচ্ছে।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বেলায় এমন ঘটনা ঘটেছে। বিশ্বের ছোট বড় সব অর্থনীতি এমন প্রতিক‚ল পরিস্থিতিতে পড়েছে বলে জানান তিনি। সর্বশেষ কনজ্যুমার প্রাইস ইনডেক্স বা ভোক্তা মূল্য সূচক (সিপিআই) প্রতিবেদন অনুসারে, কানাডার পরিসংখ্যান বিভাগ জানিয়েছে, গত আগস্টে ৭ দশমিক শূন্য শতাংশ মূল্যস্ফীতি থেকে সেপ্টেম্বরে কিছুটা কমেছে। মূলত গ্যাসের দাম ৭ দশমিক ৪ শতাংশ কমার কারণে এ সময় মূল্যস্ফীতি কমেছে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি ও ইউক্রেনে পুতিনের আগ্রাসনের কারণে বেড়ে যাওয়া মূল্যস্ফীতি থেকে আমরা সব নাগরিকদের জন্য ভর্তুকি দিতে পারব না। তবে গরিব ও দুর্বল নাগরিকদের খাদ্য পণ্যের বাড়তি দাম ও আবাসন সমস্যা কাটিয়ে উঠতে সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। আইন অনুযায়ী নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য বরাদ্দ বিতরণ করা হবে।

সরকারের পূর্বাভাস অনুসারে, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি থেকে মুক্তি দিতে নিঃসন্তান দম্পতিদের প্রত্যেককে ২৩৪ কানাডিয়ান ডলার ও দুই সন্তান রয়েছে এমন দম্পতিদের প্রত্যেককে ৪৬৭ ডলার দেয়া হবে। সন্তানদের দাঁতের চিকিৎসা বাবদ ও আবাসনের জন্য আলাদা চেক দেয়া হবে।

অর্থমন্ত্রী বলেছেন, অর্থনৈতিক দুরবস্থার কারণে চাকরিচ্যুত মানুষদের সামাজিক কর্মসূচি যেমন কর্মী বিমার (ইআই) আওতায় আনা হবে।

অপরদিকে কনজারভেটিভ নেতা পিয়েরে পোইলিভরে বলেন, শুধু মহামারির কারণে সরবরাহ শৃঙ্খলে ঘটা বিঘ্ন কিংবা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে কানাডায় মূল্যস্ফীতি বাড়েনি। এ সরকারের ব্যয় বেড়ে যাওয়াও মূল্যস্ফীতির অন্যতম কারণ বলে মনে করেন তিনি। হাউস অব কমন্সে গত সপ্তাহে তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় লিবারেল সরকারের প্রায় অর্ধ ট্রিলিয়ন ডলারের ঘাটতি গত দুই অর্থবছরের মূল্যস্ফীতির প্রধান কারণ।

তার অভিযোগ বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ও তার সরকার সংখ্যাগরিষ্ঠ নি¤œ আয়ের মানুষের জন্য সরকার কিছুই করছে না। এমনকি কম সংখ্যক সচ্ছল পরিবারকেও (মূল্যস্ফীতির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত) ভর্তুকি কিংবা সহায়তার আনা হয়নি। ব্যাংক অব কানাডার প্রতিবেদন তুলে ধরে তিনি বলেন, জ্বালানির দায় মেটানোর জন্য এবং ঋণ পরিশোধের জন্য এক একটি পরিবারকে গড়ে অতিরিক্ত ৩ হাজার কানাডিয়ান ডলার খরচ করতে হবে। এ কারণে সরকারকে ভর্তুকি বরাদ্দ ও বাড়ানোর দাবি করেছেন পিয়েরে পোইলিভরে।
অর্থনৈতিক সমস্যা সমাধানের উপায় বের করতে গত সপ্তাহে কানাডার লিবারেল পার্টির সংসদ সদস্য র‌্যাচেল বেনদাইয়ান, কনজারভেটিভ পার্টির সংসদ সদস্য স্টিফেনি কুসি ও এনডিপি পার্টির সংসদ সদস্য পিটার জুলিয়ান যৌথ আলোচনায় বসেন। এতে তারা দেশের সর্বশেষ মূল্যস্ফীতি ও আসন্ন মন্দা কাটিয়ে ওঠা নিয়ে আলোচনা করেন। এ সময় তারা সরকারি সহায়তা বাড়ানোর ব্যাপারে একমত হন। খাদ্যপণ্য ও জ্বালানি তেলের দাম কমাতে উদ্দীপনা দেয়া এবং কর্মসংস্থান বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দেন। সূত্র : সিবিসি নিউজ

Exit mobile version