অনলাইন ডেস্ক : রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর পাল্টে গেছে পৃথিবীর চিত্র। বিশ্ব এখন মূলত ২ ভাগে ভাগ হয়ে পড়েছে। প্রায় সব ক্ষেত্রে একই অবস্থা। ব্যাবসা-বাণিজ্য ও ভ্রমণের ক্ষেত্রে একই অবস্থা বিরাজ করছে।

বর্তমানে নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়ার ধনকুবেরা ইউরোপ-আমেরিকাসহ বিশ্বের অনেক দেশ সফর করতে পারছেন। করতে পারছেন না ব্যবসা।

এদিকে মধ্যপ্রাচ্যের উপসাগরীয় অঞ্চলের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতের সবচেয়ে ধনী আমিরাত বা রাজ্য ইতোমধ্যে বৈশ্বিক অর্থনীতির অন্যতক কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। বলা চলে কোটিপতিদের মেলার শহর দুবাই।

বিশ্বের কোটিপতি ধনকুবেরদের অনেকেই দুবাইয়ে বিলাসবহুল বাসভবন, জমি, আবাসন ভবন কিনছেন, ফলে রিয়েল এস্টেট ব্যবসাও ফুলে-ফেঁপে উঠছে আমিরাতের এই রাজ্যটিতে।

জানা যায়, এই ধারাবাহিকতার মধ্যেই গত ১৯ এপ্রিল দুবাইয়ের সংলগ্ন ছোটো একটি কৃত্রিমভাবে তৈরি দ্বীপ বিক্রি হয়েছে ৩ কোটি ৪০ লাখ ডলারে বা বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩৬০ কোটি ৭৪ হাজার টাকায়।

দুবাইয়ের রিয়েল এস্টেট ব্যবসায় দ্বীপ বিক্রির এই ব্যাপারটিকে বিবেচনা করা হচ্ছে একটি মাইলফলক হিসেবে। কারণ, এর আগে এত বেশি দামে কোনো রিয়েল এস্টেট সম্পদ বিক্রি হয়নি সেখানে। তবে সামনে এরকম ঘঠনা ঘটতেই থাকবে বলে ধারণা অনেকের।

আমেরিকার সংবাদমাধ্যম ব্লুমবার্গের বরাত দিয়ে ভারতের গণমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ মাসের ১৯ এপ্রিল বিক্রি হওয়া দ্বীপটির নাম জুমেরিয়াহ বে আইল্যান্ড, আয়তন মাত্র ২৪ হাজার বর্গফুট। সামুদ্রিক প্রাণী ‘সী হর্স’ আকৃতির এই দ্বীপটির সঙ্গে দুবাইয়ের মূল ভূমির সঙ্গে সেতু সংযোগ আছে।

দ্বীপটি যিনি কিনেছেন, তার নাম-পরিচয় জানা জায়নি। তবে এটুকু জানা গেছে— তিনি আমিরাতের মানুষ নন এবং সেখানে থাকেনও না। এটি আগে যার মালিকানায় ছিল, তিনি অবশ্য আমিরাতের মানুষ। তবে তার নামও গোপন রেখেছে দুবাইয়ের সরকার।নিরাপত্তার কারণে তাদের নাম প্রকাশ করা হয়নি।

জানা গেছে দুবাইয়ের ভূমি দপ্তরসূত্রে, আমিরাতের ওই ব্যক্তি দু’বছর আগে দুবাইয়ের প্রশাসনের কাছ থেকে ৩ কোটি ৬০ লাখ ৫০ হাজার দিরহাম বা ১০৪ কোটি ১৪ লাখ ৮৪ হাজার ৫০০ টাকায় কিনেছিলেন জুমেরিয়া বে আইল্যান্ড। দু’বছর পর প্রায় তিনগুণ দামে দ্বীপটি ব্রিক্রি করে দিলেন তিনি।

জুমেরিয়া বে আইল্যান্ডের সাম্প্রতিক ব্রিক্রিতে ব্রোকারের দায়িত্ব পালন করছে আন্তর্জাতিক রিয়েল এস্টেট সংস্থা নাইট ফ্র্যাঙ্ক। এই সংস্থার দুবাই শাখার প্রধান অ্যান্ড্রু কামিংস ব্লুমবার্গকে বলেন, ‘কৃত্রিম এই দ্বীপটিতে বালু ছাড়া আর কিছুই নেই। তবে এটির ভিত্তি বহুতল ভবন নির্মাণ করার মতো দৃঢ়। যে দামে দ্বীপটি বিক্রি হয়েছে, তা রীতিমতো রেকর্ড।’

কামিংস জানান, করের নিম্নহার, উন্নত জীবনযাত্রা, অপরাধের মাত্রা নিম্ন থাকা এবং সম্পত্তি ক্রয় সম্পর্কিত শর্তগুলো সহজ হওয়ার কারণে গত কয়েক বছর ধরেই দুবাইয়ে সম্পত্তি কেনার ব্যাপারে আগ্রহ বাড়ছে বৈশ্বিক কোটিপতি ধনকুবেরদের। এই মাত্রা আরও বেড়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে।

‘নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়ার ধনকুবেরদের অনেকেই যুক্তরাষ্ট্র-ইউরোপে সম্পত্তি কিনতে পারছেন না। এ কারণে তারা দুবাইকে বেছে নিচ্ছেন,’ ব্লুমবার্গকে বলেন কামিংস।