Home লিড নিউজ দুই মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়নহীনতায় আটকে আছে টিকার ট্রায়াল

দুই মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়নহীনতায় আটকে আছে টিকার ট্রায়াল

অনলাইন ডেস্ক : চীনের উহান শহর থেকে ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) প্রতিদিন দেশে মৃত্যু ও আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছেই। আজও ২৪ ঘণ্টায় ৩৮ জনের মৃত্যু ও দুই হাজার ৫২০ জনের খবর জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। এদিকে দুই মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়নহীনতায় আটকে আছে চীনের আবিস্কৃত করোনা টিকার ট্রায়াল।

গত ১৯ জুলাই বাংলাদেশে চীনের সিনোভেক কোম্পানির তৈরি নতুন করোনাভাইরাসের টিকার তৃতীয় ধাপের পরীক্ষার (ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল) নৈতিক অনুমোদন দেয় বাংলাদেশ মেডিকেল রিসার্চ কাউন্সিল (বিএমআরসি)। আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) এই পরীক্ষা চালাবে। দেশের সাতটি হাসপাতালের মোট ২ হাজার ১০০ জন স্বাস্থ্যকর্মীর ওপর এ টিকার পরীক্ষা চালানোর কথা। কিন্তু পরীক্ষা চালাতে এখনো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পায়নি বিএমআরসি।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্ত লাগবে। দুটি দেশের মধ্যকার বিষয় হওয়ায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি প্রয়োজন। অপরদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, এটি স্বাস্থ্যের নিজস্ব বিষয়।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, চীন থেকে যারা এসেছে তারাও যোগাযোগ করেছে। এটা যেখানে ভালো হয় আমরা সেটাই গ্রহণ করবো। অনুমোদন তো সরকারের প্রসেসিং।

স্বাস্থ্য সচিব আব্দুল মান্নান বলেন, আমরা সার্বক্ষণিক যোগাযোগের মধ্যে রেখেছি। যেন আমরা বঞ্চিত না হই।

তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে স্বাস্থ্য। চীনের টিকার ট্রায়ালের বিষয়ে এখন পর্যন্ত তাদের সাথে কোনো যোগাযোগও করা হয়নি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আলোচনা নেই। এখনো আসেনি আমাদের কাছে প্রোপোজালটা। এটা তো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিষয়। তারা ঠিক করে আমাদের জানাবে, এই ব্যাপারে আমার জানা নেই।

এর আগে বিএমআরসির পরিচালক মাহমুদ উজ জাহান জানান, তৃতীয় ধাপের এই পরীক্ষা সর্বশেষ ধাপ। এটা সম্পন্ন হলে জানা যাবে যে করোনা প্রতিরোধে এই ভ্যাকসিন মানবদেহে কার্যকর হবে কিনা। আমাদের কাছে আইসিডিডিআর,বি প্রটোকল জমা দিয়েছিল। ন্যাশনাল এথিকস কমিটি এথিক্যালি অনুমোদন দিয়েছে। কিন্তু এখনো আরো কিছু অনুমোদন লাগবে। তার মধ্যে রয়েছে ওষুধ প্রশাসন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, আর যে হাসপাতালগুলোতে কাজ হবে তাদের অনুমোদন।

চীনা টিকার এটা তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা। এতে দেখা হবে টিকাটি কতটা নিরাপদ ও কতটা কার্যকর। সিনোভেকের এ টিকার তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষা ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকায় শুরু করার প্রস্তুতি শেষ। এ পরীক্ষার জন্য করোনার সামাজিক সংক্রমণ পরিস্থিতি বজায় থাকা দরকার হয়। বাংলাদেশসহ এই পাঁচটি দেশে সামাজিক সংক্রমণ চলছে। চীনে বর্তমানে সেই পরিস্থিতি নেই।

ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর অনুমতি দিলে চীন থেকে টিকা আনবে আইসিডিডিআরবি। সেটি কবে নাগাদ হবে, তা কেউ বলতে পারছেন না।

যেখানে বৈশ্বিক টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ফাইজার ও বায়োএনটেকের সাথে এর মধ্যে ২০০ কোটি মার্কিন ডলারের চুক্তি করেছে আমেরিকা। ইউরোপের পক্ষ থেকে টিকা গবেষণায় ৮০০ কোটি ডলার খরচ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সেখানে বাংলাদেশে চলছে ট্রায়াল নিয়েই জটিলতা কাটছে না।

Exit mobile version