অনলাইন ডেস্ক : দক্ষিণ কোরিয়ার জিওলা প্রদেশের মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৬৭ জনে পৌঁছেছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত দুইজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের ধারণা, উড়োজাহাজটিতে এ দুইজন ছাড়া বাকি আর কেউ বেঁচে নেই। দক্ষিণ কোরিয়ার বার্তা সংস্থা ইয়োনহাপের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
আজ রবিবার সকাল নয়টার দিকে থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংকক থেকে জেজু এয়ারের ৭সি২২১৬ ফ্লাইটটি ১৭৫ জন যাত্রী এবং ছয়জন ক্রু নিয়ে দেশের দক্ষিণে সিউল থেকে প্রায় ২৮৮ মাইল দূরে মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করার সময় দুর্ঘটনাটি ঘটে। জীবিত উদ্ধারকৃত ওই দুই ব্যক্তির একজন যাত্রী এবং অন্য এক ফ্লাইট অ্যাটেনডেন্ট বলে অন্য এক প্রতিবেদনে জানা গেছে।
মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, এটি দক্ষিণ কোরিয়ার মাটিতে এ যাবতকালের সবচেয়ে মারাত্মক বিমান দুর্ঘটনা এবং প্রায় তিন দশকের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ ঘটনা।
ধারণা করা হচ্ছে, ল্যান্ডিং গিয়ারের ত্রুটির কারণে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। তবে প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত চলছে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের প্রধান লি জিয়ং-হুন।
স্থানীয় বার্তা সংস্থা ইয়োনহাপের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। আজ রবিবার দক্ষিণ কোরিয়ার মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উড়োজাহাজটি চাকা ছাড়াই অবতরণ করে।
এরপর রানওয়ে থেকে ছিটকে গিয়ে পাশের দেওয়ালের সঙ্গে সংঘর্ষ হয় বিমানটির এবং আগুন ধরে যায়। ল্যান্ডিং গিয়ারে পাখি ঢুকে পড়ায় এই দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এদিকে উদ্ধারকারীরা ধ্বংসাবশেষে অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে এবং নিহতদের পরিবার বিমানবন্দরে জড়ো হতে দেখা যাচ্ছে।
ঘটনার পরপরই দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন দেশটির ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট চোই সুং-মোক। তিনি মুয়ান বিমানবন্দরকে বিশেষ দুর্যোগ এলাকা বলে ঘোষণা করেছেন।
একইসঙ্গে তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের তহবিল থেকে সহায়তার ঘোষণা দিয়েছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিকভাবে টালমাটাল অবস্থায় চোই উদ্ধার প্রচেষ্টায় সহায়তা করার নির্দেশনা দিয়েছেন দেশটির সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে বিধ্বস্ত উড়োজাহাজটির বিভিন্ন অংশে আগুন জ্বলতে ও ধোঁয়া বের হতে দেখা গেছে।
দক্ষিণ কোরিয়ার দমকল বিভাগ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই মুহুর্তে ফায়ার সার্ভিসের ৩২টি গাড়ীসহ অন্তত ৮০ জন দমকল কর্মী ঘটনাস্থলে কাজ করছে।
এয়ারলাইন জেজু এক বিবৃতিতে এই দূর্ঘটনার জন্য দু:খ প্রকাশ করেছে। সংস্থাটির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘মুয়ান এয়ারপোর্টের দূর্ঘটনায় যারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তাদের সবার কাছে আমরা অবনত মস্তকে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। আমরা যা যা করার দরকার সব করবো। এই কষ্টের জন্য আমরা দু:খিত।’
এই বিমান সংস্থাটির ইতিহাসে এটিই প্রথম কোন দুর্ঘটনা। এটি দক্ষিণ কোরিয়ার সবচেয়ে বড় কিন্তু কম বাজেটের এয়ারলাইনস। ওদিকে মুয়ান বিমানবন্দর থেকে সব ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে।
সূত্র : বিবিসি