অনলাইন ডেস্ক : দক্ষিণ কোরিয়ায় বিধ্বস্ত যাত্রীবাহী উড়োজাহাজের আর কোনো যাত্রীর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নেই বলে মনে করছেন দেশটির ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মকর্তা। এ ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১২০ জনে পৌঁছেছে। খবর এএফপির।
আজ রোববার ভোরে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ইতোমধ্যে দুই আরোহীকে জীবিত উদ্ধার করেছেন উদ্ধারকর্মীরা।
স্থানীয় ফায়ার ডিপার্টমেন্টের রেসপন্স টিম অফিসার লি হাইওন-জি বার্তাসংস্থা এএফপিকে বলেছেন, আমরা এখনও পর্যন্ত দুর্ঘটনায় ১২০ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করেছি। তবে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। উদ্ধারকারী কর্তৃপক্ষ বিধ্বস্ত বিমানের পেছনের অংশ থেকে যাত্রীদের সরিয়ে নিচ্ছে।
এএফপি জানায়, দুর্ঘটনার সময় জেজু এয়ারের উড়োজাহাজটিতে ১৭৫ জন যাত্রী ও ৬ জন ক্রু ছিলেন। উড়োজাহাজটি থাইল্যান্ড থেকে এসে মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।
প্রাথমিকভাবে দুজনকে জীবিত উদ্ধারের খবর দিয়েছে দেশটির সংবাদ সংস্থা ইয়নহাপ।
জানা যায়, মুয়ান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর রাজধানী সিউল থেকে ২৮৮ কিলোমিটার দূরে। দুর্ঘটনার পর সেখানে সব ধরনের ফ্লাইট ওঠানামা বন্ধ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
দুর্ঘটনার ব্যাপারে বিবিসি লিখেছে, দুর্ঘটনার কারণ এখনও স্পষ্ট নয়। তবে স্থানীয় গণমাধ্যম বলছে, বিমানবন্দরে অবতরণের সময় পাখির সঙ্গে সংঘর্ষের ফলে ল্যান্ডিং গিয়ারে ত্রুটির কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ভিডিওতে দেখা যায়, জোড়া ইঞ্জিনের উড়োজাহাজটি চাকা ছাড়াই রানওয়ে দিয়ে অনেক দূর পর্যন্ত ছেঁচড়ে যায়, তারপর রানওয়ে থেকে বেরিয়ে গিয়ে বিমানবন্দরের দেয়ালে ধাক্কা খায়। পরে বিধ্বস্ত উড়োজাহাজটির বিভিন্ন অংশে আগুন জ্বলতে ও ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়।
এদিকে ইয়োনহাপ রিপোর্ট করেছে, থাইল্যান্ড থেকে ফেরার পথে বিমানটি দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমে বিমানবন্দরে অবতরণের চেষ্টা করার সময় “পাখির সাথে সংঘর্ষের ফলে ল্যান্ডিং গিয়ারে ত্রুটির কারণে” দুর্ঘটনাটি ঘটেছে বলে মনে করা হচ্ছে।
বোয়িং কিংবা যুক্তরাষ্ট্রের এভিয়েশন খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা তাৎক্ষণিকভাবে এ দুর্ঘটনা নিয়ে কোনো মন্তব্য করলেও সময় গড়াতে গড়াতে তারা শোক প্রকাশ করে এবং দক্ষিণ কোরিয়ার জেজু এয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে।
এ ঘটনায় জেজু এয়ারের কর্মকর্তারা দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের পরিবারের কাছে মাথা নুইয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন।
ঘটনার পরপরই দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন দেশটির ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট চোই সুং-মোক। তিনি মুয়ান বিমানবন্দরকে বিশেষ দুর্যোগ এলাকা বলে ঘোষণা করেছেন। একইসঙ্গে তিনি ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের তহবিল থেকে সহায়তার ঘোষণা দিয়েছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে রাজনৈতিকভাবে টালমাটাল অবস্থায় চোই উদ্ধার প্রচেষ্টায় সহায়তা করার জন্য জনশক্তি, স্বাস্থ্যসেবা এবং সরঞ্জাম সরবরাহ করার নির্দেশনা দিয়েছেন দেশটির সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে।
এর আগে শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) চোই সুং-মক দেশের অন্তর্বর্তী নেতা হিসেবে দায়িত্ব নেন।
এক বিবৃতিতে চোই সুং-মকের কার্যালয় জানিয়েছে, ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করেছেন এবং জরুরি ত্রাণ ও উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছেন।