Home আন্তর্জাতিক তুরস্কের নির্বাচন: এরদোয়ানের পরাজয়ের ‘সাহসী স্বপ্ন’ দেখছে বিরোধীরা

তুরস্কের নির্বাচন: এরদোয়ানের পরাজয়ের ‘সাহসী স্বপ্ন’ দেখছে বিরোধীরা

অনলাইন ডেস্ক : তুরস্কের নির্বাচন নিয়ে উত্তেজনার পারদ চরমে। ‘লৌহমানব’ এরদোয়ান নাকি ‘তুরস্কের গান্ধী’ কুলুচদারুলুকে বেছে নেবেন তুর্কিরা। আগামীকাল রোববার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তা নির্ধারণ হয়ে যাবে। বলা হচ্ছে, প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে এই প্রথম সবচেয়ে কঠিন এক নির্বাচনী পরীক্ষার মুখে পড়তে যাচ্ছেন। খবর বিবিসির

তুর্কী প্রেসিডেন্টের সামনে কঠিন চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন বিরোধী জোটের প্রার্থী কেমাল কুলুচদারুলু। ছয়টি বিরোধী দল নিয়ে গঠিত জোট ‘টেবিল এবং সিক্সের’ প্রতিনিধিত্ব করছেন তিনি। আরও কিছু সরকারবিরোধী গ্রুপও কুলুচদারুলুর প্রতি সমর্থনের কথা ঘোষণা করেছে।

এ কারণেই মূলত ৭৪ বছর বয়সী সাবেক এই সরকারি কর্মকর্তা এরদোয়ানের জন্য বড় ধরনের মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছেন।

এবারের নির্বাচনে যারা ভোট দিচ্ছেন তাদের আট শতাংশ ‘ফার্স্ট-টাইম ভোটার’ যারা প্রথমবারের মতো ভোট দিচ্ছেন।

অনেকে মনে করেন তুরস্কে যেসব গ্রুপ এখনও মনস্থির করেন নি যে তারা কাকে ভোট দেবেন, তাদের মধ্যে এই গ্রুপটি সবচেয়ে বড়।

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রচারণায় এবার সব প্রার্থী তরুণ ভোটারদের মন জয় করার চেষ্টা করেছেন। এরদোয়ান জোর দিয়েছেন প্রতিরক্ষা ও প্রযুক্তি খাতের অগ্রগতির ওপর, কিন্তু বিরোধী প্রার্থী কুলুচদারুলু আরো বেশি স্বাধীনতা ও উন্নত কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

ইস্তাম্বুলের এক শিক্ষার্থী ২৩ বছর বয়সী পেরিত বলেন, ‘রেচেপ তাইয়িপ এরদোয়ান যদি আবার জয়লাভ করেন, আমাদের সবার জীবন দুঃস্বপ্নের মতো হয়ে উঠবে।’

তুরস্কের একটি স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বোয়াজিচি ইউনিভার্সিটিতে একজন সরকারপন্থী ডিন নিয়োগের প্রতিবাদে বিক্ষোভে অংশ নেওয়ার কারণে তাকে প্রায় দু’মাস জেলে থাকতে হয়েছিল।

এমরুর অভিযোগ লাগামহীন মূল্যস্ফীতির কারণে তুরস্কে তাদের মতো তরুণদের জীবন ক্রমশই কঠিন হয়ে পড়ছে। সরকারি হিসেবে বর্তমানে মূল্যস্ফীতির এই হার দাঁড়িয়েছে ৪৪ শতাংশ।

দেশটির নাজুক এই অর্থনৈতিক পরিস্থিতির জন্য ব্যাপকভাবে দায়ী করা হয় প্রেসিডেন্টের এরদোয়ানের গৃহীত নীতিমালাকে।

এমরু বলেন, ‘আপনার পক্ষে শুধু পড়ালেখা করে জীবন চালানো সম্ভব নয়, বেঁচে থাকতে হলে আপনাকে একটি পূর্ণকালীন চাকরিও জোগাড় করতে হবে।’

তার বান্ধবী সুদও জানিয়েছেন রোববারের পার্লামেন্ট ও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি বিরোধী প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার পরিকল্পনা করছেন।

তবে ২০ বছর বয়সী সালিহ কাকে ভোট দেবেন সেটা তার কাছে পরিষ্কার। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি রেচেপ তাইয়িপ এরদোয়ান একজন ক্যারিশম্যাটিক নেতা। তুরস্কের রাজনীতিতে এধরনের ক্যারিশমা থাকা গুরুত্বপূর্ণ।’

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আরও দুজন প্রার্থী লড়ছেন: মধ্য-বামপন্থী ও জাতীয়তাবাদী মুহাররাম ইঞ্জে এবং ডানপন্থী জাতীয়তাবাদী সিনান ওয়ান।

সাম্প্রতিক জনমত জরিপে দেখা গেছে তরুণ ভোটারদের কাছে এই দুজন প্রার্থীর আবেদন রয়েছে।

একারণে প্রধান বিরোধী জোটের সমর্থকরা আশঙ্কা করছেন কুলুচদারুলুর ভোট ভাগ হয়ে গেলে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন দ্বিতীয় দফার ভোটাভুটিতে গড়াতে পারে।

কোনো প্রার্থী ভোটারদের ৫০ শতাংশের বেশি ভোট না পেলে দুই সপ্তাহ পর দ্বিতীয় রাউন্ডের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

আর রোববারের নির্বাচনে কেউ যদি অর্ধেকের বেশি ভোট পান তাহলে তিনিই সরাসরি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন।

এবারের নির্বাচনে নারী ভোটাররা কাকে ভোট দেবেন সেটাও জয় পরাজয় নির্ধারণে বড় ধরনের ভূমিকা রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

Exit mobile version