সাজ্জাদ আলী : ফোনের অপর প্রান্তে সুকন্ঠির বিনীত প্রশ্ন, মে আই স্পীক টু মি: আলী প্লিজ?
দিস ইজ হি, জবাবে বললাম আমি।
আপনার ব্যস্ত সময়ে ফোন করিনি তো? দু’মিনিট কথা বলা যাবে কি?
হাঁ বলুন কী বলবেন? আর কে বলছেন আপনি?
আমি “উইন্টার কানাডা” থেকে ন্যান্সি বলছি। আমরা একটি নন-প্রফিট অর্গানাইজেশন চালাই, হোমলেসদের (গৃহহীন) নিয়ে কাজ করি। সিটি অব টরন্টোর পার্টনার আমরা।
দ্যাটস ভেরি গুড ন্যান্সি। তা আমি আপনার জন্য কী করতে পারি বলুন?
মি: আলী, আমরা হোমলেসদের নিয়ে অনেক রকমের কাজ করে থাকি। কিন্তু আজ আপনাকে ফোন করেছি একটি মাত্র ব্যপারে সাহায্য চাইবো বলে। দেখুন প্রচন্ড শীতের রাতে মাইনাস ২০/২৫ ডিগ্রী তাপমাত্রায় টরন্টোর রাস্তায় হোমলেসরা ঘুমায়। গত বছরেও শুধু টরন্টো শহরেই শীতে জমে ৩০/৩৫ জন গৃহহীন মানুষ মরেছে। আমরা পথে পথে ঘুরে এদের খুঁজে বের করি। তারপর ওয়ার্ম সেল্টারে (সিটি পরিচালিত গরম ঘর) নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। আর একান্তই কেউ যদি সেল্টারে যেতে না চায় তবে তাকে শীত নিবারণের সরঞ্চামাদি দিয়ে সাহায্য করি। এই যেমন গরম কাপড়, ঘুমানোর ব্যাগ (স্লিপিং ব্যাগ), হ্যান্ড গøভস, গরম টুপি, জুতা, মুজা, রেইন কাভার, টয়লেট সামগ্রী ইত্যাদি। এই কাজের জন্য নাগরিকদের কাছ থেকে ফান্ড রেইজ করছি। আপনি যদি আমাদের ডোনেট করেন তো উইন্টার কানাডা কৃতজ্ঞ থাকবে। মাসে আট ডলার মাত্র। তবে চাইলে আপনি বেশিও দিতে পারেন। আবার আমাদের সাথে ভলিন্টিয়ার হিসেবে কাজও করতে পারেন। এতটা বলে ন্যান্সি আমার জবাবের অপেক্ষায় রইলো।
এ ধরণের কাজে আমার আগ্রহ আছে। কানাডিয়ান ভিক্ষুক ও গৃহহীনদের জীবন সংকট কেমন, সেটা কাছে থেকে দেখতে ইচ্ছা হয়। এই ধনিদের দেশের গরীবরা ঠিক “কতটা গরীব” তা আমি বুঝতে চাই। আগামী এক বছরের জন্য মাসে ১০ ডলার করে দেব বলে অঙ্গিকার করলাম। মেয়েটিকে আরো বললাম, ন্যান্সি আমি ভলিন্টিয়ার হতে চাই। কী করতে হবে বলুন তো?
থ্যাঙ্কইয়ু মি: আলী। আপনি চাইলে আজ রাত থেকেই কাজ শুরু করতে পারেন।
বলুন তাহলে কী করতে হবে? বললাম আমি।
আজ রাতে তাপমাত্রা মাইনাস ২২ ডিগ্রী অনুভুত হবে। আমরা গাড়ি নিয়ে ঘুরে ঘুরে রাস্তায় শুয়ে থাকা হোমলেসদের খুঁজে বের করবো। তারপর তাদের সিটি পরিচালিত ওয়ার্ম সেল্টারে পৌঁছে দেব। তবে কেউ যেতে না চাইলে বাধ্য তো আর করা যাবে না। তাকে শরীর গরম রাখার সরঞ্জাম, টয়লেট কীট ইত্যাদি দিয়ে সাহায্য করব। যাতে সে রাতটুকু টিকে থাকতে পারে। বলল ন্যান্সি।
খুব আগ্রহ নিয়ে বললাম, আমি আজ রাত থেকেই কাজটা শুরু করতে চাই।
তাই হবে। রাত ৯:৩০ মিনিটে পুরোনো সিটি হলের দক্ষিণ গেটে চলে আসবেন। মাইনাস ২৫ ডিগ্রীর উপযুক্ত গরম কাপড় পরবেন। আর কভিড প্রটোকল রক্ষায় মুখে মাক্স পরতে ভুলবেন না যেন। আমাদের টিম লিডার জুলিয়েট আপনার জন্য সেখানে অপেক্ষা করবে। সাথে একটা ফটো আইডি রাখবেন প্লিজ। এটুকু বলে ন্যান্সি ফোন রাখলো।
পাঠক বন্ধুদের অনেকেরই সারাটা জীবন গরমের দেশে কেটেছে। মাইনাস ২০/২৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস যে কতটা ঠান্ডা সেটা তারা কল্পনাও করতে পারেন না! তার উপরে যদি আবার বরফ ঝরা রাত হয়, তবে তো ষোলকলা পূর্ণ হলো। এই রকম নীচু তাপমাত্রার ঝাপটা মানুষের শরীরে ভয়ঙ্কর ভাবে অনুভুত হয়। পাঠকদের সে অনুভব লিখে বুঝাবার মতো সামর্থবান লেখক আমি নই। হয়তো ভাবছেন, ওভার কোট, গরম টুপি, হাত মোজা, গলাবন্ধ, পায়ে বুট ইত্যাদি থাকলেই তো হল। তা কিন্তু মোটেই না বন্ধুরা। আধাঘন্টা খোলা আকাশের নিচে থাকলেই গরম কাপড় ভেদ করে ঠান্ডাটা শরীরে লাগতে থাকে। শীতের দাপটে চোখ দিয়ে অনবরত জল ঝরে। নাক দিয়ে রক্ত পড়ে, কান অনুভুতিহীন হয়ে পড়ে, মাথা ঝিম ঝিম করে। কখনও কখনও মানুষের হৃদযন্ত্রও বিকল হয়ে পড়ে।
নাহ্ এগুলো লিখেও আপনাদের ঠান্ডার সেই তীব্রতা ঠিক বোঝনো গেল না। খুব ভাল হতো যদি গরম দেশের সব পাঠকদের এক রাতের জন্য এই ঠান্ডা দেশের রাস্তায় ছেড়ে দিতে পারতাম। আচ্ছা, আমি না হয় ভিন্নভাবে বোঝাবার চেষ্টা করি। ধরুন আপনি একটি বিল্ডিংয়ের ৩০তম তলায় থাকেন। এক গ্লাস জল জানালা দিয়ে বাইরে ফেললেন। মাটিতে পড়ার আগেই সে জল জমে বরফখন্ড হয়ে যাবে। একটিবার ভাবুন তো এহেন ঠান্ডায় কিনা রাস্তায় মানুষ ঘুমায়? আর তা ঘুমায় অনেকটা সখের বসেই। সরকার ওই সব মানুষদের বিনা পয়সায় এপার্টমেন্টে থাকবার ব্যবস্থা করছে। তিন বেলা খাবারও দেবে, তবুও ওরা রাস্তা ছেড়ে যাবে না। এই জগৎসংসারে মানুষের থেকে বিচিত্র জীব দ্বিতীয়টি নেই!
১২ সিটের একখানা ভ্যান গাড়ি। দলনেতা জুলিয়েট গাড়ি চালাচ্ছে। পাশে বসা আমরা দুজন ভলিন্টিয়ার, ক্যাথরিন আর আমি। ক্যাথরিন এক সময় হোমলেস ছিল। রাস্তায় ঘুমানোর অভিজ্ঞতা আছে তার। এখন গৃহহীনদের জন্য নির্ধারিত একটি সরকারি এপার্টমেন্টে থাকে। রাত ১০টায় আমরা যাত্রা করেছি, দুইটা অব্দি রাস্তায় থাকবো। টরন্টো ডাউন টাউনের অলিগলি ঘুরে ঘুরে আমরা রাস্তায় শুয়ে থাকা মানুষদের ঘরে নেবার চেষ্টা করব।
রিচমন্ড আর ইয়াং স্ট্রীটের কোনায় গাড়ি থামিয়ে আমরা তিনজনই নেমে পড়লাম। ফুটপাথে খোলা আকাশের নিচে দুজন মানুষ পাশাপাশি শুয়ে আছে। ওদের দিকে এগুতেই একজন ক্ষেপে গেল! গালিগালাচ করার ঢংয়ে চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে কী সব যেন বলছে। অস্পষ্ট উচ্চারণ এবং আঞ্চলিক ডায়লেক্টে কথ্য ইংরেজি তার। আমি পুরোটা ঠিক বুঝে উঠলাম না। শুধু এটুকু বুঝলাম যে সে আমাদের বলছে “খবরদার কাছে আসবে না”। ফিসফিসিয়ে ক্যাথরিনকে জিজ্ঞাসা করলাম, ও রেগে গেল কেন? কী বলছে সে?
ক্যাথরিন বললো, কিছুক্ষণ আগে নাকি পুলিশ এসেছিলো ওদের নিয়ে যেতে। ওরা যায়নি। এখন আবার আমরা এসেছি বলে ক্ষেপেছে।
প্রায় দশ ফুটের মতো দূরে দাঁড়িয়ে আমাদের দলনেতা গলা চড়িয়ে বলল, আচ্ছা যেতে না চাও যেও না। কিন্তু রাতে খেয়েছো কী?
না খাইনি। তবে খাবারের লোভ দেখাবে না। আমরা এখান থেকে কোথাও যাবো না। স্লিপিং ব্যাগ থেকে মুখ বের করে দ্বিতীয়জন এটুকু বলেই আবার ব্যাগে মুখ ঢোকালো।
কথা না বাড়িয়ে জুলিয়েট গাড়ি থেকে দুই বান্ডিল গরম পোষাক আর দু প্যাকেট ড্রাই ফুড এনে ওদের দুজনের মাঝখানে রাখল। অনেকটা নিরাস হওয়ার ভঙ্গিতে বলল, ওকে গুড লাক এন্ড গুড নাইট ফ্রেন্ডস।
আমি তাজ্জব হয়ে ওই মানুষ দুজনকে দেখছিলাম। রাস্তায় ঘুমানোর মধ্যে ওরা যে কী সুখের সন্ধান পেয়েছে তা আল্লা মাবুদই জানে? দুজনেরই গায়ে ওভারকোট মাথায় টুপি। এর পরে স্লিপিং ব্যাগের মধ্যে ঢুকেছে। তারও উপরে আরো দুই পাত্তা কম্ফোর্টার (এ দেশীয় লেপ বিশেষ) পেঁচিয়ে ওরা শুয়ে আছে। বৃষ্টি বরফ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য নিজেদের পলিথিনে মুড়ে নিয়েছে। সাদা চামড়ার এই মানুষ দুজনের মুখ ভর্তি দাড়ি গোঁফ। কত কাল যে সেভ করে না তা আল্লাই জানে। ঠান্ডায় থর থর করে কাঁপছে। নাক দিয়ে বেরুনো রক্তমাখা কফে গোঁফ দাড়ি ভিজে একাকার। একটু একটু করে কথা বলছে আর লেপের ভিতর মুখ নিয়ে গরম হচ্ছে। কাপড়চোপড় আর কম্ফোর্টারে এতটাই কাঁদামাটি লেগেছে যে, আসল রং আর দেখা যায় না। একটা বিকট দুর্গন্ধ ওদের গা থেকে হু হু করে বেরিয়ে আসছে। এ রকম উন্নত একটা দেশে এমন মানবেতর জীবনও তাহলে হতে পারে?
এর পরে কার্লটন স্ট্রীট আর চার্চ স্ট্রীটের মোড়ে আরেক যুগল হোমলেসদের পাশে আমাদের গাড়ি থামল। এরা তেড়ে এলো না। বরং তাদের পথবাড়িতে হাই হ্যালো বলে আমাদের এক ধরণের অভ্যর্থনা জানাল। ক্যাথারিন তাদের পূর্ব পরিচিত। হয়তো সে কারণেই সামান্য খাতির পেলাম। এরা অনেকটাই অর্গানাইজড। কংক্রিটের উপরে একটা কিং সাইজের কম্ফোর্টার বিছিয়ে বিছানা পেতেছে। একটি বালিসে দুজন লেপ মুড়ি দিয়ে শুয়ে। এন্ড্রু’র বয়স ২৫ থেকে ৩০ এর মধ্যে। মিনারা ৪৫ এর উপরে তো হবেই।
বিছানার পাশে বিল্ডিংটার দেয়াল ঘেষে একখানা শপিং কার্ট রাখা। কোন গ্রোসারী দোকান থেকে নিয়ে এসেছে, আর ফেরৎ দেয়নি। সেই কার্টের মধ্যে কিছু কাপড়চোপড়, কফির ফ্লাক্স, কয়েকখানা বই, শুকনো খাবার, একটা ল্যাপটপ, ডিস্পেজেবল থালা গ্লাশ (একবার ব্যবহারযোগ্য), তিনজোড়া জুতা ইত্যাদি আরো অনেক জিনিপত্রে ঠাসা। একখানা বাইসাইকেল বিছানার পাশেই মাটিতে ফেলে রাখা। আমরা কাছে যেতেই ওরা দুজন শোয়া থেকে উঠে বসলো। ভাল করে লেপ গায়ে জড়িয়ে নিল। ওদের শপিং কার্টের দিকে ইঙ্গিত করে এন্ড্রুকে বললাম, তোমাদের সংসারটাতো বেশ সাজানো। সে মুখে কিছুই বললো না। কিন্তু সঙ্গীনিকে জড়িয়ে ধরে বুঝিয়ে দিলো যে সবই মিনারার কীর্তি।
ক্যাথরিনই কথা শুরু করলো। বলল, আজ রাতে খুবই ঠান্ডা পড়বে। তোমরা সেল্টারে চলো। নইলে মরে যাবে।
হো হো করে হেস উঠলো এন্ড্রু! বলল, তুমি এ কথা বলছ? মনে নেই এই সেদিনও আমরা এক সাথে রাস্তায় শীতকাল কাটিয়েছি। তুমিও বেঁচে আছ, আমিও বেঁচে আছি! কেউ মরিনি।
দলনেতা জুলিয়েট বলল, এন্ড্রু আজ শেষ রাতের দিকে বরফ ঝড় হবে। তোমাদের দুজনের জন্যই তা খুব ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠবে। চলো আমাদের সাথে। রাতটুকু থেকে ঝড় থামলে আবার না হয় চলে এসো।
নো নো, উই আর নট গোয়িং এনি হোয়ার, চেঁচিয়ে উঠলো মিনারা।
আমি বললাম, কেন যাবে না মিনারা? খুব সিভিয়ার ওয়েদার আজ রাতে। মন না টিকলে কাল না হয় ফিরে এসো।
না, আর ফিরে আসা যাবে না। শপিংকার্ট, বিছানাপত্রগুলো দেখায়ে মিনারা বলল, আমরা এখান থেকে গেলেই পুলিশ সব কিছু নিয়ে গারবেজে ফেলে দেবো। কত কষ্টে আমি এগুলো জোগাড় করেছি তা জান?
ক্যাথারিন ওর মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে বলল, ফিরে আসার দরকার কী? তোমার জন্য আমার বিল্ডিংয়েই ভাল দেখে একটা রুমের ব্যবস্থা করে দেবো। সেখানে তিন বেলা খাবার ব্যবস্থাও থাকবে। চলো যাই, উঠে পড়ো।
না না, আমি এন্ড্রুকে ছেড়ে থাকতে পারবো না। যেন কেঁদেই ফেললো মিনারা।
জুলিয়েট ওকে আস্বস্ত করার চেষ্টা করলো। বলল, আমরা চেষ্টা করবো যাতে তুমি আর এন্ড্রু একই বিল্ডিংয়ে থাকতে পারো।
না, আমাদের এক রুমে থাকতে হবে। সেটা তো তোমরা থাকতে দেবে না। মিনারা একা ঘুমুতে ভয় পায়। ও সারা রাত আমার হাত ধরে রেখে ঘুমায়। এন্ড্রু বলল।
আমরা বুঝে গেছি যে ওরা যাবে না। জুলিয়েট আর ক্যাথারিন ওদের জন্য গরম কাপড়চোপড় আর খাবার আনতে গাড়ির দিকে গেল। আমি ওদের বিছানার উপরে বসে জিজ্ঞাসা করলাম, আচ্ছা সরকার থেকে তোমাদের বাড়িঘর, খাবারদাবার, এমনকি হাতখরচের টাকাও দেবে। তবুও তোমরা রাস্তা ছেড়ে যাবে না! এখানে থেকে তোমরা কী সুখ পাও আমাকে একটু বলবে কি? জানতে খুব কৌতূহল হচ্ছে!
বিপুল আনন্দ আছে এখানে। তবে তুমি তার কতটা বুঝবে জানি না। দুএকটা বলি তোমায়। দেখ এই মুক্ত বাতাসে খোলা আকাশের নিচে নিজেকে সব সময় সম্রাজ্ঞী মনে হয়। প্রাণ ভরে নি:শ্বাস নিতে পারি। বলে চলেছে মিনারা। প্রতি দিন কত মানুষ আমাদের বিছানার পাশ দিয়ে হেঁটে যায়। তাদের অনেকেই দাঁড়িয়ে কথা বলে। খোঁজখবর নেয়, টাকা পয়সা দেয়। কেউ কেউ খাবার কিনে দিয়ে যায়। রাস্তায় চলাচলকারী অনেকের সাথেই বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছে। ওরা প্রায় প্রতিদিন আমাদের সাথে দেখা করতে আসে। এমনটাই আমাদের জীবনের অভ্যাস। আমরা এটুকু নিয়েই অনেক সুখে আছি।
তার ব্যাখ্যাগুলো আমার কাছে নিরর্থক মনে হলো না। সত্যিই তো এই যুগল কীসে সুখ পাবে, তা আমরা বাতলে দেবার কে? তারপরেও মনে যেন আরো কিছু জিজ্ঞাসা থেকে গেল। এন্ডু কেন রাস্তা ছেড়ে যেতে চায় না, তা জানতে মন চাইলো। বললাম, আচ্ছা এন্ড্রু সরকারী বাড়িতে থাকার অসুবিধাগুলো একটু বলবে কী?
অনেক অসুবিধা আছে। বলা শুরু করলো এন্ড্রু। ওখানে মদ গাজা খাওয়া যায় না। এমনকি সিগারেট ধরাতেও বিল্ডিংয়ের বাইরে আসতে হয়। সরকারী লোকজন প্রায় প্রতিদিনই নতুন নতুন চাকরি খুঁজে বের করে। আর কাজে যেতে বলে। আবার মাঝেমাঝেই নানান রকমের কোর্স করতে স্কুলে পাঠায়। দেখ আমার কাজ করতে বা পড়তে একদম ভাল লাগে না। সব থেকে বড় আসুবিধা হলো রাত ১২টার পরে গেট বন্ধ করে দেয়, আর বাইরে বেরুনো যায় না। ও সব জায়গায় আমি থেকে দেখেছি, সব সময় পরাধীন পরাধীন মনে হয়। সুখ পাই না। কিছু কি বুঝলে ?
হাঁ, বুঝেছি। স্বাধীনতার জন্য মানুষ মাইনাস ২২ ডিগ্রী তাপমাত্রাকেও তুচ্ছ জ্ঞান করে!
(লেখক বাংলা টেলিভিশন কানাডা’র নির্বাহী)