অনলাইন ডেস্ক : তাইওয়ান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্কবার্তা দিয়েছে চীন। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তাইওয়ানের বিষয়ে মন্তব্য করার ক্ষেত্রে সাবধান হওয়া উচিত যুক্তরাষ্ট্রের। খবর এএফপির।
চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবিন শুক্রবার বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে বলেন, ‘নিজের অভ্যন্তরীণ কোনো বিষয়ে চীন কখনও আপোস করে না। আমরা আশা করব, ওয়াশিংটন বেইজিংয়ের এই নীতিকে সম্মান করবে এবং ভবিষ্যতে তাইওয়ান ইস্যুতে কোনো প্রকার মন্তব্য ও পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষেত্রে আরও সতর্ক হবে।’
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের বার্তাসংস্থা সিএনএনে এক সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে প্রশ্ন করা হয়- চীন দিন দিন নিজেদের সামারিক বাহিনী শক্তিশালী করছে। এই পরিস্থিতিতে দেশটি যদি তাইওয়ানে অভিযান শুরু করে, সেক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ানের পাশে থাকবে কি না।
প্রশ্নের উত্তরে বাইডেন বলেন, ‘অবশ্যই এবং অবশ্যই যুক্তরাষ্ট্র চীনের পাশে থাকবে; আর চীন, রাশিয়াসহ সবাই এটিও জানে যে, বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সামরিক বাহিনী আছে যুক্তরাষ্ট্রে। তাইওয়ানের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’
বাইডেনের এই মন্তব্যের পরপরই তার প্রতিক্রিয়া জানাল চীন।
এক সময়ের স্বাধীন রাষ্ট্র তাইওয়ান আসলে পূর্ব এশিয়ার একটি দ্বীপ, যা তাইওয়ান প্রণালীর পূর্বদিকে চীনের মূল ভূখণ্ডের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে অবস্থিত। গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে চীন বার বার তাদের আকাশসীমা লঙ্ঘন করছে বলে অভিযোগ করে আসছে দ্বীপটি।
চলতি অক্টোবর মাসের প্রথম সপ্তাহে চার দিনে তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা সীমানার মধ্যে প্রায় ১৫০টি যুদ্ধবিমান পাঠিয়েছিল চীন। তারপর থেকেই অঞ্চলটিতে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে।
বিবিসি বলছে, মিত্র হলেও তাইওয়ানকে রক্ষার বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে ‘কৌশলগত অস্পষ্টতা’র নীতি চর্চা করে আসছে ওয়াশিংটন। আর এ কারণেই তাইওয়ানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো কূটনৈতিক সম্পর্ক না থাকলেও ‘তাইওয়ান রিলেশন অ্যাক্ট’ নামে একটি চুক্তি অনুসারে দ্বীপটির কাছে অস্ত্র বিক্রি করে থাকে ওয়াশিংটন। চুক্তি অনুযায়ী, আত্মরক্ষার জন্যই তাইওয়ানকে সহায়তা করতে হবে যুক্তরাষ্ট্রকে।
অবশ্য চলমান এই উত্তেজনার মধ্যেই গত ৯ অক্টোবর চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বলেছেন, চীনের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে তাইওয়ানের পুনরেকত্রীকরণ অবশ্যই সম্পূর্ণ করতে হবে। এই পুনরেকত্রীকরণ শান্তিপূর্ণভাবেই অর্জিত হওয়া উচিত, কিন্তু একই সঙ্গে তিনি বিচ্ছিন্নতাবাদ দমনের ক্ষেত্রে চীনের গৌরবময় ঐতিহ্য রয়েছে বলেও সতর্ক করেছেন।
এমনকি, তাইওয়ানকে চীনের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে ফের যুক্ত করতে শক্তি প্রয়োগের সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেয়নি বেইজিং।
এদিকে, জো বাইডেনের সম্প্রতিক মন্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছে তাইওয়ানের ক্ষমতাসীন সরকার। দেশটির প্রেসিডেন্টের দফতরের মুখপাত্র জেভিয়ার চ্যাং শুক্রবার এক বিবৃতিতে এ সম্পর্কে বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকার আরেকবার ঘোষণা করল- তাইওয়ানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বন্ধুত্ব পাথরের মতো মজবুত।’