বিদ্যুৎ সরকার : টরেন্টো শহর থেকে পূবের এক জনবসতি লিভারপুল। এটাকে উপশহরও বলা চলে না। হাতে গোনা সুবিন্যস্ত কিছু বসত বাড়ী ফুল লতা পাতায় ঘেরা সবুজে আচ্ছন্ন আচ্ছাদিত ঘর-দোর। এমনিতেই শান্তি নেমে আসে, সুখ স্পর্শ করে দেয় প্রতিটি গৃহ কোণ। চোখ জুড়োয়, মন ভরে উচ্ছ্বাসে আর উদ্ভাসে। আকাশের নীল গলে আছে লেকের তরল জলে। একটু হাওয়া পেলে কেপে ওঠে নীল নীল ছোট্ট ঢেউ যেন সুনীল জল ছবি, ঝুলে থাকে পেরেক বিহীন লিভারপুলের হ্রিদয় জুড়ে।
লিভারপুলের এক প্রান্ত যেখানে শেষ সেখান থেকেই লেকের জলের হাত ছানি। বড় বড় কিছু প্রস্তরখন্ড আর হরেক বর্ণের ও মাপের নুড়ি পাথরের ঢালে অক্ষত লেকের পাড়। ঢেউগুলো এসে ফিরে ফিরে যায় মন খারাপের খবর নিয়ে। নদীগুলোর ইচ্ছে যেমন সীমানা বৃদ্ধির, মৃত্তিকারও প্রগাঢ় ইচ্ছে নিজকে অক্ষত রাখার। কাঠের সাকো সীমানার প্রান্তে আছে অসীম আহ্বানে আপন করে নিতে। সাঁকোর রেলিং ভর করে নেমে যেতে পারো সুনীল জলের মায়াবী ইশারায়। স্বচ্ছ জলের হ্রদয়ে ভালো লাগার রকমারী নুড়ি পাথর দু’হাত ভরে তুলে নেওয়া যায় বেলা অবেলায়। পথের শেষে দুধারে চোখ শীতল করার মনোরম জলাশয়। যেখানে আকাশের মেঘেরা বিম্বিত হয়, ঘরবাড়ি, সবুজ বৃক্ষরাও থাকে সবুজাভ দৃশ্যপট হয়ে। আর, উড়ন্ত সী গ্যালের দুরন্ত উড়াউড়ি। রাস্তার দুধারে ছোট ছোট কফিশপ, পানশালা, বুটিক, গিফ্ট শপ, পর্যটক কেন্দ্র, রেস্টুরেন্ট দেখে মনে হতে পারে কোন ওয়েস্টার্ন মুভির লোকেশন। ভালো না লাগার কোন কারণ নেই।
সকাল দুপুর সুর্য্যস্নান অতপর লেকের জলে অবগাহন, ডুব সাঁতার, মাছেদের সাথে মাস কম্যুনিকেশন। তীরে বসে হোমমেড লাঞ্চ, পড়ন্ত বিকেলে সুর্যিমামাকে টাটা জানিয়ে লিভারপুলের তিন অধ্যায়ের যবণিকা টেনে ফিরে আসো নিজ গৃহে ভালোলাগা আর ভালোবাসার ক্লান্তি নিয়ে।
বিদ্যুৎ সরকার : লেখক ও আলোকচিত্রী, টরন্টো, কানাডা