Home কানাডা খবর ট্রুডোর নতুন মন্ত্রিসভার শপথ ২৬ অক্টোবর : পার্লামেন্ট অধিবেশন শুরু ২২ নভেম্বর

ট্রুডোর নতুন মন্ত্রিসভার শপথ ২৬ অক্টোবর : পার্লামেন্ট অধিবেশন শুরু ২২ নভেম্বর

শাহনুর চৌধুরী : জাস্টিন ট্রুডো পুননির্বাচিত লিবারেল সরকারের নতুন পার্লামেন্ট বসছে আগামী ২২ নভেম্বর। গত ২০ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত মধ্যবর্তী নির্বাচনের প্রায় ৭ সপ্তাহ পর ওই অধিবেশন শুরু হচ্ছে। হাউজ অব কমন্সের শেষ অধিবেশন বসেছিল গত জুনে। গত শুক্রবার প্রধানমন্ত্রীর অফিসের এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে যে, অধিবেশন শুরুর আগে নতুন মন্ত্রিসভার সদস্যরা ২৬ অক্টোবর শপথ নেবেন। এদিকে বিরোধী কনজারভেটিভ এনডিপি ও বøগ কুইবেকস নেতারা সরকারি ঘোষণার সমালোচনা করে বলেছেন, অপ্রয়োজনীয় আগাম নির্বাচনের কারণে প্রায় পাঁচ মাস ধরে বন্ধ হয়ে আছে হাউস অব কমন্সের অধিবেশন। এখন আরো দেড় মাস পর অধিবেশন শুরুর তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। সরকার এত দীর্ঘ সময় না নিলেও পারত। তারা দ্রুত সংসদ অধিবেশন শুরুর তাগিদ দিয়েছেন।

সেপ্টেম্বরের নির্বাচনে ক্ষমতার খুব একটা রদবদল হয়নি। লিভারেলরা ১৬০ আসনে জয়ী হয়েছে। অন্যদিকে কনজারভেটিভরা ১১৯, বøক কুইবেক ৩২, এনডিপি ২৫ ও গ্রিনপার্টি ২টি আসন লাভ করেছে। একক সরকার গঠনের জন্য লিবারেলদের প্রয়োজন ছিল ১৭০টি আসন। তা লাভে ব্যর্থ হওয়ায় জাস্টিন ট্রুডোকে এবারও সরকার গঠনের জন্য কোন একটি ছোট দলের উপর আস্থা রাখতে হবে।

এদিকে নতুন মন্ত্রিসভায় কারা থাকছেন সে বিষয়ে কিছু বলা না হলেও গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয় গুলোতে খুব একটা রদবদল হবেনা বলেই আভাস পাওয়া গেছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নতুন পার্লামেন্টের প্রথম অধিবেশনে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকতে পারে ‘ভ্যাকসিন নির্দেশনা’। গত নির্বাচনেও এই ভ্যাকসিন ইস্যু কাজে লাগিয়েছেন প্রার্থীরা। তাদের নির্বাচনী প্রচারাভিযানে একটি প্রধান হাতিয়ার ছিল ভ্যাকসিন কার্ড ও ভ্যাকসিন পাসপোর্ট।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বিবৃতিতেও ট্রুডো টিকা প্রসঙ্গ টেনে বলেছেন, ‘এই মহামারিকে পরাজিত করতে আমরা একসাথে আমাদের কঠোর পরিশ্রম চালিয়ে যাব, সব কানাডিয়ানকে টিকার আওতায় আনব এবং মধ্যবিত্তদের জন্য অধিক হারে চাকরির সুযোগ সৃষ্টি করব।’ তিনি আরো বলেন, করোনা মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসা-বাণিজ্য পুনর্গঠনে এবং জলবায়ুর বিরূপ প্রভাব রোধেও তার সরকার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করবে।

কানাডায় ১২ বছরের ঊর্ধে সবার টিকা নিশ্চিত করতে সরকার ইতোমধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। এগুলোর মধ্যে আছে ট্রেন, বিমান, ও গণপরিবহনে ভ্রমণের জন্য ‘ফুল ভ্যাকসিনেটেড’ হওয়া, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাধ্যতামূলক টিকা গ্রহণ করা, পূর্ণ ডোজ টিকা গ্রহণ ছাড়া বিদেশ ভ্রমণের অনুমতি না দেওয়া ইত্যাদি।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরো বলা হয়েছে, পার্লামেন্টের প্রথম অধিবেশনেই একটি নতুন আইন তৈরির বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। তা হচ্ছে স্বাস্থ্যকর্মীদের হয়রানি বা হুমকি দেয়াকে ফৌজদারি অপরাধের আওতায় আনা। এ বিষয়ে আলোচনার জন্য প্রস্তুতি নিতে সব এমপিকে নির্দেশ দিয়েছেন ট্রুডো। এছাড়া তিনি অধিবেশন শুরুর আগেই বিষয়টি নিয়ে বিরোধীদলীয় এমপিদের সাথে টেলিফোনে কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, বাধ্যতামূলক টিকা কর্মসূচি ও ভ্যাকসিন পাসপোর্টের বিরোধিতাকারীরা স¤প্রতি কানাডাতে বিক্ষোভের সময় বিভিন্ন হাসপাতাল ও টিকা কেন্দ্র ভাঙচুর করেছে। এ সময় তারা ডাক্তার ও নার্সসহ স্বাস্থ্যকর্মীদের নাজেহাল করেছে। একটি পক্ষ প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের বাড়ির সামনে সড়ক অবরোধ করে তার পরিবারের সদস্যদের ভয়-ভীতি দেখিয়েছে। টিকা বিরোধীদের বক্তব্য হচ্ছে- সরকার ভ্যাকসিন কার্ড ও পাসপোর্টের নামে কানাডার জনগণের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করছে। তাই এটি চালু করা যাবেনা।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বিবৃতিতে সব এমপিকে পূর্ণ ডোজ টিকা নিয়ে ২২ নভেম্বরের অধিবেশনে যোগ দিতে বলা হয়েছে।

অন্যদিকে বিরোধী দলগুলো মধ্যবর্তী নির্বাচনের নামে অর্থ ও সময়ের অপচয়ের জন্য জাস্টিন ট্রুডোর সমালোচনা অব্যহত রেখেছে। সংসদ অধিবেশনের প্রথম দিনেই তারা এ বিষয়টি নিয়ে সরকারকে নাস্তানাবুদ করতে চাইবে। সবদিক বিবেচনায় প্রথম দিনেই সংসদ উত্তপ্ত হয়ে উঠতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সূত্র : দ্য গ্লোব অ্যান্ড মেইল ও সিবিসি নিউজ

Exit mobile version