Home আন্তর্জাতিক ট্রাম্প এখন যাবেন কোথায়?

ট্রাম্প এখন যাবেন কোথায়?

অনলাইন ডেস্ক : নির্বাচনে হেরে যাওয়ার কথা স্বীকার করতে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এখনো গররাজি। ট্রাম্পের প্রচার শিবির থেকে পরাজয় মেনে নেওয়ার আলামত স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

হোয়াইট হাউস ছাড়ার পর ফ্লোরিডার পাম বিচে যাওয়ার ইচ্ছা ডোনাল্ড ট্রাম্পের। তবে তাঁর ভবিষ্যৎ প্রতিবেশীরা তাঁকে স্বাগত জানাচ্ছেন না। উল্টো এ বিচের ‘মার এ লাগো’ ক্লাবের প্রতিবেশীরা আপত্তি জানিয়ে বলেছেন, ট্রাম্প যেন সেখানে বসবাস করতে না পারেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০২৪ সালের নির্বাচনে আবার দাঁড়াবেন কি না—এমন কথা জানতে চেয়ে বার্তা পাঠানো হয়েছে প্রচার শিবির থেকে। ডোনাল্ড ট্রাম্প সিনেটে রিপাবলিকান পার্টির নেতাকে উদ্দেশ করে বলেছেন, নির্বাচনে পরাজয় দ্রুত মেনে নেওয়া হয়ে গেছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর দাবিতে অটল। নতুন প্রেসিডেন্ট শপথ নেওয়ার পরও তিনি বলে যাবেন, ভোটে কারচুপি হয়েছে। প্রমাণহীন এ দাবি নিয়ে রাজনৈতিক মঞ্চে থাকার কথাই জানান দিচ্ছেন ট্রাম্প।

ট্রাম্প নিজে কিছু বলছেন না। প্রচার অফিস থেকে গতকাল বুধবার ট্রাম্প–সমর্থকদের একটি ই–মেইল পাঠানো হয়েছে। মেইলে সমর্থকদের মতামত চাওয়া হয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০২৪ সালের নির্বাচনে প্রার্থী হবেন কি না। যদিও ট্রাম্পের প্রচার শিবির থেকে এখনো এবারের নির্বাচনে পরাজয়ের কথা বলা হয়নি। দীর্ঘ ঐতিহ্য অনুসরণ করে বিজয়ী ডেমোক্র্যাট জো বাইডেন ও কমলা হ্যারিসকে কোনো অভিনন্দনও জানানো হয়নি।

ই–মেইলে বলে হয়েছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কখনো সমর্থক ও তাঁদের পরিবারের জন্য লড়াই থামাবেন না। যুক্তরাষ্ট্রকে সামনে রাখার জন্য ট্রাম্প যা প্রয়োজন তা করে যাবেন। এ কারণে ২০২৪ সালের নির্বাচনে ট্রাম্প নির্বাচন করার জন্য ‘হ্যাঁ’–‘না’ প্রশ্নের উত্তরের মাধ্যমে মতামত চাওয়া হয়েছে সমর্থকদের কাছ থেকে।

যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানের ২২তম সংশোধনী অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দুই দফার বেশি দায়িত্ব পালনের সুযোগ নেই।

হোয়াইট হাউস ছাড়ার গোপন প্রস্তুতি আগেই শুরু করেছেন ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প। সিক্রেট সার্ভিসের লোকজনকেও এ নিয়ে আগাম প্রস্তুতি নিতে দেখা গেছে। ট্রাম্প পরিবারের পরবর্তী ঠিকানা ফ্লোরিডার পাম বিচের মার এ লাগো ক্লাব।

স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্প ও ছেলে ব্যারনের সঙ্গে ফ্লোরিডার পাম বিচের মার এ লাগো ক্লাবের এক পার্টিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর তোলা
স্ত্রী মেলানিয়া ট্রাম্প ও ছেলে ব্যারনের সঙ্গে ফ্লোরিডার পাম বিচের মার এ লাগো ক্লাবের এক পার্টিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর তোলাছবি: রয়টার্স
প্রতিবেশীদের পক্ষ থেকে পাম বিচ নগর কর্তৃপক্ষ এবং সিক্রেট সার্ভিসের কাছে ট্রাম্প পরিবারের বসবাস নিয়ে আগাম আপত্তি জানানো হয়েছে। দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৯৯৩ সালে মার এ লাগো ক্লাবে বসবাসের অধিকার ত্যাগ করে ট্রাম্প একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। চুক্তি অনুযায়ী প্রাইভেট ক্লাবে কোনো সদস্য এক বছরে মোট ২১ দিন এবং একনাগাড়ে সাত দিনের বেশি থাকতে পারবেন না। চুক্তির সময় বলা হয়েছে, ডোনাল্ড ট্রাম্প কখনো মার এ লাগো ক্লাবে বসবাস করবেন না।

মার এ লাগো ক্লাবের অন্যতম প্রতিবেশী গলেন জেইটজ বলেছেন, ট্রাম্পের এ ক্লাবে বসবাসের কোনো আইনগত অধিকার নেই। ক্লাবের জন্য ব্যবহার করা ছাড়া বসবাস করার সব অধিকার ট্রাম্প চুক্তির মাধ্যমে বিসর্জন করেছেন।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর ডোনাল্ড ট্রাম্প মার এ লাগো ক্লাবকে তাঁর অবকাশকেন্দ্র হিসেবে প্রায়ই ব্যবহার করেছেন। দেশের প্রেসিডেন্ট হিসেবে তাঁকে ছাড়ও দিয়েছেন প্রতিবেশীরা। এবারে তাঁরা উঠেপড়ে লেগেছেন মার এ লাগো ক্লাবে ট্রাম্পের বসবাস আটকে দেওয়ার জন্য।

২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পরই নিউইয়র্কের সাবেক বাসিন্দা ডোনাল্ড ট্রাম্প বদলে গেছেন। নিউইয়র্কের উচ্চ হারের কর তাঁকে তাড়া করেছে। স্বল্প হারের কর সুবিধা নেওয়া এবং উদারনৈতিক রাজ্যে নিজের অজনপ্রিয়তায় বিব্রত ট্রাম্প নিউইয়র্কের ঠিকানা বদল করে ফেলেন। ফ্লোরিডার রাজ্য কর নিউইয়র্কের চেয়ে অনেক কম।

ফ্লোরিডার পাম বিচের বাসিন্দা হিসেবেই ট্রাম্প এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। ফ্লোরিডা রাজ্যেই তিনি রাজ্য কর পরিশোধ করেন। মার এ লাগো ক্লাবের ঠিকানাকে তিনি বসবাসের ঠিকানা হিসেবে ব্যবহার করে আসছেন। নির্বাচন-পরবর্তী বাস্তবতায় প্রতিবেশীরা এখন বিগড়ে গেছেন। ওয়াশিংটন পোস্টকে দেওয়া বক্তব্যে ট্রাম্প অর্গানাইজেশনের মুখপাত্র বলেছেন, ট্রাম্প যে ক্লাবে বসবাস করতে পারবেন না, এমন কোনো চুক্তির কথা তাঁদের জানা নেই!

Exit mobile version