লাবলু আনসার, যুক্তরাষ্ট্র : প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অভিবাসন-বিরোধী মনোভাবের কবলে পড়া ‘ইউএস সিটিজেনশিপ এ্যান্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিস’ (ইউএসসিআইএস) এর ৭০% কর্মচারি ছাঁটাই করা হচ্ছে। সিটিজেনদের নিকটাত্মীয় কিংবা বিনিয়োগ অথবা বিশেষ শ্রেণির মানুষেরা অভিবাসন মর্যাদায় এবং ওয়ার্ক ভিসা, নন-ইমিগ্র্যান্ট ভিসা, ট্যুরিস্ট ভিসায় প্রতি বছর ১৫ লাখের অধিক বিদেশি আসতেন যুক্তরাষ্ট্রে। এসব আবেদন প্রসেসিংয়ের জন্যে নির্দিষ্ট পরিমাণের ফি নেয়া হতো। সেটি ছিল বড় একটি আয়ের উত্স এই সংস্থা পরিচালনায়।
সাম্প্রতিক সময়ে করোনার অজুহাতে এসব আবেদন স্থগিত করা হয়েছে। পুরনো আবেদনগুলো যেমন ফাইলচাপা পড়েছে, ঠিক তেমনি নতুন আবেদনেরও সুযোগ ঘটছে না। নভেম্বরের নির্বাচনে ট্রাম্প যদি পুনরায় বিজয়ী হন তাহলে হয়তো এই সংস্থার অস্তিত্বই বিলীন হয়ে যাবে। এই নির্বাচনের প্রচারণা শুরুর পরই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প নতুন অভিবাসী আগমণের বিরুদ্ধে বিধিনিষেধ আরোপ করেছেন। এসাইলাম প্রার্থনার ক্ষেত্রও সীমিত করা হয়েছে। মেক্সিকো হয়ে সীমান্তে এসে এসাইলাম প্রার্থনার বহুল পুরনো রীতি সংকুচিত করা হয়েছে বছর দেড়েক আগে।
উদ্ভূত পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে ইউএসসিআইএস’র একজন মুখপাত্র জানান, করোনার তাণ্ডবে গত মার্চ থেকেই ফি জমা হবার পরিমাণ অর্ধেকে নেমে এসেছে। এজন্যে সংস্থাটিকে টিকে থাকার স্বার্থে ১.২ বিলিয়ন ডলারের অনুদান চেয়েছিলাম কংগ্রেসের কাছে। কিন্তু সেটি পাওয়া যায়নি। এ অবস্থায় জুলাইয়ের শুরুতেই অর্থাৎ স্বাধীনতা দিবসের আগেই ইউএসসিআইএস’র ১৩৪০০ কর্মকর্তা/কর্মচারিকে ৩ আগস্ট থেকে ছুটিতে যাবার নোটিশ দেয়া হবে। এ ধরনের পরিস্থিতির অবসানে ফেডারেল প্রশাসন যদি স্থায়ী কোন পদক্ষেপ না নেয় তাহলে ছুটিতে যাওয়া কর্মচারি/কর্মকর্তারা আর ফিরতে সক্ষম হবেন না।
নানাবিধ কারণে অভিবাসনের অনেক কাজই গত কয়েক বছর যাবত স্থবির। এমনি অবস্থায় যদি কর্মচারি ছাঁটাইয়ের মত ঘটনা ঘটে তাহলে অভিবাসনের কাজ-কর্ম একেবারেই বন্ধ হয়ে যেতে পারে। অবশ্য, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এটাই চাচ্ছেন।
ইউএসসিআইএস’র রিফ্যুজি, এসাইলাম এবং ইন্টারন্যাশনাল অপারেশন্স ডিভিশনের জনৈক কর্মকর্তা নাম গোপন রাখার শর্তে জানান, এই বিভাগের ২২০০ স্টাফের মধ্যে ১৫০০ জনের কাছে ছুটির নোটিশ যাবে জুলাইয়ের ২৪ ও ২৫ তারিখে। অবশিষ্ট ৭০০ কর্মকর্তা/কর্মচারি থাকবেন কোনমতে এই বিভাগকে টিকিয়ে রাখার জন্যে।
ট্রাম্পের এহেন অ-আমেরিকান নীতির বলি হবেন ইমিগ্রেশনের এটর্নিরাও। বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে আবেদনের সুযোগ না থাকলে এটর্নির কাজও থাকবে না। এ অবস্থায় ডেমক্র্যাটরা সকল ভোটারের প্রতি আহবান রেখেছেন ৩ নভেম্বরের নির্বাচনে জো বাইডেনকে বিজয়ী করার জন্যে। একইসাথে সিনেট ও হাউজেও ডেমক্র্যাটদের বিজয় দিলে ইমিগ্রেশনের বিদ্যমান কাজগুলো আবারো পুরোদমে চালু হবে।