অনলাইন ডেস্ক : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাম্প্রতিক শুল্ক হুমকি ও রাজনৈতিক মন্তব্যে ক্ষুব্ধ হয়ে অনেক কানাডীয় নাগরিক যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণের পরিকল্পনা বাতিল করছেন। ট্রাম্পের কানাডার প্রতি অবজ্ঞাসূচক বক্তব্য এবং দেশটিকে যুক্তরাষ্ট্রের “৫১তম রাজ্য” বানানোর প্রসঙ্গ তাদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি করেছে। ফলে অনেকেই যুক্তরাষ্ট্রের পরিবর্তে অন্যান্য দেশ বা নিজের দেশেই ভ্রমণের সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন।
ভ্যাঙ্কুভারের বাসিন্দা পিটার মালহল্যান্ড ও তার স্ত্রী প্রতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে সিয়াটলে বেসবল খেলা দেখতে যেতেন। তবে এবার তারা সেই পরিকল্পনা বাতিল করেছেন। তাদের মতে, ট্রাম্পের কানাডার ওপর শুল্ক আরোপের হুমকি ও কূটনৈতিক মনোভাবের কারণে যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছেন। একই ধরনের মনোভাব অনেক কানাডীয়র মধ্যেই দেখা যাচ্ছে। ট্রাভেল পরামর্শক ম্যাকেনজি ম্যাকমিলান জানিয়েছেন, তার অনেক ক্লায়েন্ট যুক্তরাষ্ট্রগামী ভ্রমণ বাতিল করেছেন, যা এই মৌসুমে এক অস্বাভাবিক ঘটনা।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের পর্যটন খাতেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। ২০২৪ সালে প্রায় ২ কোটি ৪ লাখ কানাডীয় পর্যটক যুক্তরাষ্ট্র ভ্রমণ করেছিলেন, যা দেশটির অর্থনীতিতে প্রায় ২ হাজার ৫০ কোটি ডলার আয় এবং ১ লাখ ৪০ হাজার চাকরি তৈরিতে সহায়তা করেছিল। কিন্তু যদি এই সংখ্যা ১০ শতাংশ কমে যায়, তাহলে ২১০ কোটি ডলারের ক্ষতি এবং প্রায় ১৪ হাজার মানুষ চাকরি হারাতে পারেন।
এয়ার কানাডা এখনও যুক্তরাষ্ট্রগামী ফ্লাইটে বড় কোনো পরিবর্তন না দেখলেও, পরিস্থিতি নজরে রাখছে। অন্যদিকে, ওয়েস্টজেট জানিয়েছে যে, বছরের প্রথম কয়েক সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রগামী ফ্লাইটের চাহিদা ২৫ শতাংশ কমেছে। ট্রাভেল পরামর্শকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের পরিবর্তে কানাডীয়রা মেক্সিকো, ইউরোপ, আইসল্যান্ড এবং এশিয়ার দেশগুলোর দিকে ঝুঁকছেন।
এই প্রবণতা দীর্ঘস্থায়ী হলে যুক্তরাষ্ট্রের পর্যটন শিল্পের জন্য এটি উদ্বেগের কারণ হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ট্রাম্প প্রশাসনের নীতিগুলোর কারণে যদি কানাডীয় পর্যটকদের আগ্রহ কমতে থাকে, তবে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।
তথ্যসূত্র : এপি