অনলাইন ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেনশিয়াল বিতর্কে প্রতিদ্বন্দ্বী ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে ধরাশায়ী হওয়ার পর এক ভাষণে লড়াইয়ের অঙ্গীকার করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। গত শুক্রবার নর্থ ক্যারোলাইনা অঙ্গরাজ্যের এক সমাবেশে দেওয়া ওই ভাষণে বাইডেন আগামী নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী ট্রাম্পকে হারানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

বিতর্কে ভালো করতে না পারা এবং বয়স হওয়ার বিষয়টি এরই মধ্যে স্বীকার করেছেন এই বাইডেন। তবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়ানোর কোনো ইঙ্গিত দেননি।

যদিও তাঁর সরে যাওয়া নিয়ে অনেক আলোচনা চলছে।
এরই মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী গণমাধ্যম দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসের সম্পাদক পরিষদ বাইডেনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছে। বাইডেনকে একজন মহান সরকারি কর্মচারীর ছায়া আখ্যা দিয়ে তারা বলছে, গত বৃহস্পতিবার ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্কে প্রমাণিত হয়েছে, বাইডেন পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়েছেন। পুনরায় প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য তাঁর সংকল্প একটি বেপরোয়া জুয়া।

শ্রেষ্ঠ কর্মচারী হিসেবে তিনি এখন যা করতে পারেন, তা হলো নির্বাচন না করার ঘোষণা দেওয়া।
এদিকে বিতর্কে ভালো না করতে পারায় ৮১ বছর বয়সী বাইডেনের অনেক সহকর্মী ডেমোক্র্যাট বিরক্তি প্রকাশ করেছেন। তবে সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন ও বারাক ওবামার মতো জ্যেষ্ঠ ডেমোক্র্যাটরা তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন।

ডেমোক্র্যাট নেতা বাইডেন বলেন, ‘স্পষ্ট করে বলতে গেলে—আমি জানি, আমি তরুণ নই।

বাইডেন স্বীকার করেন, ‘আগে যেভাবে কাজ করতে পারতাম, এখন সেভাবে পারছি না … যেভাবে বিতর্ক করতাম, সেভাবে পারছি না।’
তিনি আরো বলেন, ‘তবে আমি জানি কিভাবে সত্য বলতে হয় এবং কিভাবে আমার কাজটি করতে হয়।’

বাইডেন বলেন, ‘আমি মনে-প্রাণে বিশ্বাস করি যে আরো এক মেয়াদে এই দায়িত্ব পালন করতে পারব। এ সময় ‘আরো চার বছর’ স্লোগান দিতে থাকেন তাঁর সমর্থকরা।

তিনি আরো বলেন, ‘আপনারা কি গত বৃহস্পতিবার রাতে ট্রাম্পকে দেখেছেন? একটি বিতর্কে সবচেয়ে বেশি মিথ্যা বলার রেকর্ড করেছেন ট্রাম্প।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘ট্রাম্প জাতির জন্য সত্যিকারের হুমকি। তিনি আমাদের স্বাধীনতার জন্য হুমকি, গণতন্ত্রের জন্য হুমকি।’

এদিকে ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যে এক সমাবেশে ভাষণ দেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ৭৮ বছর বয়সী ট্রাম্প বলেন, ‘বয়স বাইডেনের সমস্যা নয়, সমস্যা হলো তাঁর যোগ্যতা। তিনি চরমভাবে অযোগ্য।’

ট্রাম্প বলেন, প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে বাইডেনের সরে যাওয়ার জল্পনা তিনি বিশ্বাস করেন না। কারণ জরিপে অন্য ডেমোক্র্যাটদের তুলনায় ভালো করেছেন বাইডেন। এ ছাড়া বাইডেন বিতর্কে ধরাশায়ী হওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিদেশি কূটনীতিকরা। কারণ পুনরায় নির্বাচিত হলে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির স্থিতাবস্থাকে পাল্টে ফেলতে পারেন ট্রাম্প।

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাপিটল হিলে ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি দাঙ্গায় অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বাধাদানসংক্রান্ত আইন ব্যবহারে বাড়াবাড়ি করা হয়েছে বলে রায় দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। এই রায়ের ফলে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে চলমান মামলার বিচারপ্রক্রিয়া প্রভাবিত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সূত্র : বিবিসি, এএফপি, সিএনএন