অনলাইন ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে কে জিতবেন, ট্রাম্প না কমলা হ্যারিস? বিভিন্ন জরিপে এবং সরাসরি জনমত যাচাইয়ে এমন প্রশ্নের সুস্পষ্ট জবাব না আসায় ডেমক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী কমলা হ্যারিসের পক্ষে মাঠে নামলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনও। এর আগে নেমেছেন বারাক ওবামাও।

বিজয় নির্ধারণী ৭ স্টেটে তারা সভা-সমাবেশ করছেন। ‘স্যুইং স্টেট’ হিসেবে চিহ্নিত এ স্টেটগুলো হচ্ছে জর্জিয়া, আরিজোনা, মিশিগান, নেভাদা, নর্থ ক্যারলিনা, পেনসিলভেনিয়া এবং উইসকনসিন। কমলার পক্ষে জনজোয়ার ত্বরান্বিত করতে ক্লিনটন এবং ওবামা উভয়েই শুরু করেছেন জর্জিয়া থেকে। যুক্তরাষ্ট্র এখনো নারী নেতৃত্বে আগ্রহী হতে পারেনি-এমন মনোভাবাপন্ন ভোটারদের ‘নারীরাও যে পুরুষের মতোই মানবিক কল্যাণে সিদ্ধহস্ত’ তা অনুধাবনে সক্ষম করতে ওবামা ও ক্লিনটন ইতিহাসের আলোকে বক্তব্য দিচ্ছেন।

একইসাথে রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের গোয়ার্তুমির কথা বলে পুনরায় তাকে হোয়াইট হাউজে অধিষ্ঠিত করলে আমেরিকার মানবিক মূল্যবোধকেই ধ্বংসের নামান্তর হবে বলে তারা মন্তব্য করছেন।

এদিকে অশিক্ষিত এবং স্বল্প শিক্ষিত ভোটার, কৃষ্ণাঙ্গ পুরুষ, প্রত্যন্ত অঞ্চলের শ্বেতাঙ্গ ভোটারেরা এখনো দ্বিধায় রয়েছেন কমলা হ্যারিসের ব্যাপারে-এমন তথ্য বিভিন্ন জরিপে স্পষ্ট হয়েছে। সেই পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠতে বিল ক্লিনটন এবং বারাক ওবামা চষে বেড়াচ্ছেন দোদুল্যমান ভোটারদের কাছে।
সাবেক প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন জর্জিয়ায় তার ক্যাম্পেইন শুরুর দিনে ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের কর্মকান্ডের প্রশংসা করে বলেছেন, সীমান্ত সুরক্ষা এবং আর্থিক ব্যবস্থাপনায় কমলার বিচক্ষণতার পরিচয় ইতিমধ্যেই পাওয়া গেছে। কমলার আন্তরিক আগ্রহে সীমান্ত সুরক্ষার অভিপ্রায়ে কংগ্রেস একটি বিল পাশের পথে ছিল। কিন্তু ট্রাম্প-কে খুশী করতে রিপাবলিকানরা সেই বিল পাশে সহায়তা দেননি। বিলটি পাশ হলে নাকি ট্রাম্পের ভোট ব্যাংকে আরো ফাটল ধরবে-এমন আশংকা প্রকাশ করেছিলেন ট্রাম্প।

ক্লিনটন ভোটারদের প্রতি উদাত্ত আহবান জানিয়ে বলেন, নির্বাচনী কেন্দ্রে যেতে হবে। ব্যালট যুদ্ধে অবতীর্ণ না হলে যুক্তরাষ্ট্র আবার পিছিয়ে পড়বে। গণতন্ত্র হুমকিতে নিপতিত হবে। তাই আমরা যদি সরব থাকি তবেই জিতবে গণতন্ত্র, জিতবে আমেরিকা।

ইতিমধ্যেই কমলার পক্ষে মাঠে নামা বারাক ওবামার সাথে কাজ শুরু করেছেন সাবেক ফার্স্টলেডি মিশেল ওবামাও। ৫ নভেম্বর নির্বাচনের আগের দিন পর্যন্ত তারা স্যুইং স্টেটসমূহে সভা-সমাবেশ করবেন ‘গণতন্ত্রের শত্রু ট্রাম্প’কে ধরাশায়ী করতে।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের নির্বাচনে হিলারি ক্লিনটন ট্রাম্পের কাছে পরাজিত হবেন-এটি কোন জরিপেই দৃশ্যমান হয়নি। শেষ মুহূর্তে ‘আমেরিকানরা নারী নেতৃত্বে আস্থাবান হতে পারেননি বলেই প্রেসিডেন্ট বানিয়েছেন ট্রাম্পকে’। এমন একটি পরিস্থিতিতে আবারো যাতে ভোটাররা নিপতিত না হন সেজন্যে ডেমক্র্যাটরা নানা কৌশল অবলম্বন করেছেন।

এবারের নির্বাচনে ডেমক্র্যাটদের চিরচেনা ভোট ব্যাংকে ফাটল ধরেছে গাজা পরিস্থিতি নিয়ে জো বাইডেনের ভূমিকার কারণে। মুসলিম আমেরিকানদের সাথে নতুন প্রজন্মের বড় একটি অংশ কমলার মতো ট্রাম্পকেও বর্জনের পক্ষে অনড় রয়েছে। অর্থাৎ তারা এই দু’প্রার্থীর কাউকে ভোট দেবেন না বলে ঘোষণা দিয়েছেন। এই মনোভাব অব্যাহত থাকলে ট্রাম্পের বিজয়ের সম্ভাবনা প্রবল হবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। কারণ মুসলিম আমেরিকান ও কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ভোটারের সিংহভাগই ডেমক্র্যাট।