অনলাইন ডেস্ক : বাংলাদেশে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই আলোচনায় যুক্তরাজ্যের ক্ষমতাসীন লেবার পার্টির মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিক। যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশে বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে পদত্যাগের চাপে রয়েছেন তিনি। তাকে মন্ত্রিসভা থেকে সরিয়ে দিতে দেশটির প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারকে চেপে ধরেছেন বিরোধীরাও।
টিউলিপ সিদ্দিক বর্তমানে যুক্তরাজ্যের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনীতিবিষয়ক মিনিস্টার (ইকোনমিক সেক্রেটারি)। এ পদে দেশটির আর্থিক খাতে দুর্নীতি বন্ধের দায়িত্বে আছেন তিনি। টিউলিপ গত আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বোন শেখ রেহানার মেয়ে।
বাংলাদেশে ৯ প্রকল্পে ৮০ হাজার কোটি টাকা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে টিউলিপ, তার খালা শেখ হাসিনা, মা শেখ রেহানা ও শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গত মাসে এই অনুসন্ধান শুরু হয়েছে।
এ ছাড়া গত শুক্রবার টিউলিপ সিদ্দিককে নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছিল ফিন্যান্সিয়াল টাইমস। তাতে বলা হয়, লন্ডনের কিংস ক্রস এলাকার কাছে টিউলিপের মালিকানায় একটি ফ্ল্যাট রয়েছে। ২০০৪ সালে সেটি আবদুল মোতালিফ নামের একজন আবাসন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে বিনা মূল্যে পেয়েছিলেন। আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা ছিল আবদুল মোতালিফের।
অভিযোগ ওঠার পরপর চলতি মাসের শুরুর দিকে স্টারমারের আদর্শ মানদণ্ড পরামর্শদাতার কাছে নিজেই অভিযোগটি তদন্তের আহ্বান জানান টিউলিপ। এমনকি তার দাবি, তিনি কোনো অন্যায় করেননি।
সোমবার (১৩ জানুয়ারি) যুক্তরাজ্যের মন্ত্রিসভায় টিউলিপের অবস্থান এখনো পাকাপোক্ত আছে কিনা, এমন প্রশ্ন করা হলে জ্যেষ্ঠ ব্রিটিশ মন্ত্রী প্যাট ম্যাকফ্যাডেন স্কাই নিউজকে বলেন, অভিযোগের বিষয়ে নিজ থেকে তদন্তের কথা বলে টিউলিপ ঠিক কাজটি করেছেন। আদর্শ মানদণ্ড পরামর্শদাতার এই ধরনের অভিযোগ তদন্ত করার ক্ষমতা রয়েছে।
ম্যাকফ্যাডেন বলেন, এটাই তিনি করছেন এবং এটি এই পরিস্থিতি মোকাবিলার সঠিক উপায়।
তবে বর্তমান লেবার সরকারের এমন অবস্থানে মোটেই খুশি না যুক্তরাজ্যের বিরোধী রাজনীতিকরা। তারা বারবার টিউলিপকে বরখাস্ত করার দাবি তুলেছেন।
প্রধান বিরোধী দল কনজারভেটিভ পার্টির অর্থবিষয়ক মুখপাত্র মেল স্ট্রাইড রোববার টাইমস রেডিওকে বলেন, আমি মনে করি তার এই দায়িত্ব পালন করা আর সম্ভব নয়। টিউলিপের বর্তমান পদে থাকা অনুচিত। অথচ তিনি সরকারের দুর্নীতিবিরোধী মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।