অনলাইন ডেস্ক : গত ১৯ জুলাই, বুধবার টরন্টো সিটি কাউন্সিলের এক বৈঠকে ড্যানফোর্থ এভিনিউ’র বাঙালি অধ্যুষিত এলাকাটির নাম ‘বাংলা টাউন’ রাখার প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। এই এলাকা অর্থাৎ টরন্টো সিটি কর্পোরেশন-এর ১৯ নম্বর ওয়ার্ড বা বীচেস ও ইস্ট ইয়র্ক এর কাউন্সিলর ব্রাড ব্র্যাডফোর্ড এই এলাকাটির নাম ‘বাংলা টাউন’ রাখার প্রস্তাব দিলে টরন্টোর সিটির অন্যান্য কাউন্সিলরবৃন্দ এর পক্ষে মত দেন। কাউন্সিলর ব্রাড ব্র্যাডফোর্ডের উত্থাপিত প্রস্তাবের সমর্থন করেন স্ক্যারবরো সাউথওয়েস্ট এর সিটি কাউন্সিলর গ্যারী ক্রফোর্ড।
কানাডার সবচেয়ে বড় ও জনবহুল নগরী টরন্টোর ড্যানফোর্থ এভিনিউ’র পূর্বে ফার্মেসী এভিনিউ থেকে পশ্চিমে মেইন স্ট্রীট পর্যন্ত প্রায় দেড় কিলোমিটারের অংশ এখন থেকে ‘বাংলা টাউন’ হিসেবে পরিচিত হবে। এই এলাকার রাস্তার দুই পাশের বেশিরভাগ অধিবাসী বাঙালি এবং অধিকাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিকও বাঙালি। এছাড়া বাঙালিরা তাদের যে কোন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এই এলাকায় করে থাকেন। ১৯৫২ সালে সংঘটিত বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলনের স্মরণে টরন্টোতে নির্মিত প্রথম স্মৃতিসৌধটি এই এলাকার ডেন্টিনিয়া পার্কে অবস্থিত।
টরন্টো সিটি কাউন্সিলের ১৯ জুলাই ২০২৩ বৈঠকের কার্যবিবরণীতে বলা হয়েছে, সিটি কাউন্সিলের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সংস্কৃতি বিষয়ক মহাব্যবস্থাপককে স্থানীয় কাউন্সিলরদের দফতরের সাথে পরামর্শ করে, এলাকার প্রাণবন্ত বাঙালি সংস্কৃতির স্বীকৃতি হিসেবে মেইন স্ট্রীট ও ফার্মেসী এভিনিউ’র মধ্যবর্তী ড্যানফোর্থ এভিনিউ’কে ‘বাংলা টাউন সাংস্কৃতিক অঞ্চল (Banglatown Cultural District) হিসেবে নামকরণ করার জন্য স্থানীয় কমিউনিটির বিভিন্ন সংস্থার সাথে জড়িত হওয়ার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।
সভার কার্যবিবরণীর সার সংক্ষেপে উল্লেখ করা হয়, ২০২১ সালের নভেম্বরে আমাদের স¤প্রদায় ডেন্টোনিয়া পার্কে টরন্টোর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপনকে স্বাগত জানিয়েছে। কানাডার বৃহত্তম বাঙালি স¤প্রদায়ের কেন্দ্রে এই সুন্দর স্মৃতিস্তম্ভটি স্থাপন করার সাধারণ লক্ষ্য নিয়ে একত্রিত অনেক স¤প্রদায়ের সদস্যের সহযোগিতার মাধ্যমে এটি করা হয়েছিল। এই স্মৃতিস্তম্ভটি বাঙালির ইতিহাস এবং স্থানীয়ভাবে ‘বাংলা টাউন’ নামে পরিচিত এলাকায় এই স¤প্রদায়ের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের একটি স্মারক।
এই বাঙালি স¤প্রদায়ের শক্তি ও সহনশীলতা নগরীর পূর্ব প্রান্তে ও নগর জুড়ে স¤প্রদায় তৈরি করতে এবং কানাডায় বাঙালি সংস্কৃতির ঐতিহ্য ও সৌন্দর্য উদযাপনের জন্য যা করে তা স্বীকৃতির দাবি রাখে। এর মধ্যে ড্যানফোর্থ এভিনিউ’র মেইন স্ট্রীট এবং ফার্মেসী এভিনিউ’র মধ্যবর্তী স্থানটিকে ‘বাংলাটাউন’ হিসেবে সরকারীভাবে স্বীকৃতি দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে চূড়ান্তভাবে এগিয়ে যাওয়ার প্রস্তাব রাখা হয়। টরন্টোর সিটি কর্পোরেশনের সভায় কাউন্সিলরদের এমন মত দেওয়ার অর্থ হচ্ছে, বিষয়টি চুড়ান্ত রূপ পেতে যাচ্ছে। বিষয়টির আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি পাওয়ার জন্য এখন শুধু কিছু সরকারি প্রক্রিয়া বাকী রয়েছে।
কাউন্সিল সভায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হওয়ার পর ২১শে জুলাই, শুক্রবার কাউন্সিলর ব্র্যাড ব্র্যাডফোর্ড ৩০০০ ড্যানফোর্থ এভিনিউ’তে এ খুশির সংবাদ দেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, সৈয়দ আলম শামসুল, কফিলউদ্দিন পারভেজ, শক্তি দে, আবুল আজাদ, শামসুস দোহা প্রমুখ।