অনলাইন ডেস্ক : গত ২৭শে আগস্ট সন্ধ্যায় টরন্টোর ৩০০০ ড্যানফোর্থ এভিনিউ’র টরন্টো ফিল্ম ফোরাম কার্যালয়ে টরন্টোর বাঙালি কমিউনিটির বিশিষ্ট জন প্রকৌশলী ওয়াহিদ আসগার এর ৮০তম জন্মবার্ষিকী উদযাপিত হয়। জন্মবার্ষিকীর আনন্দমুখর অনুষ্ঠানে ওয়াহিদ আসগারের সাথে উপস্থিত সকলে আড্ডা দেন এবং সংগীত শিল্পী রিতু মীর ও শিখা রউফ এর সংগীত উপভোগ করেন।
ওয়াহিদ আসগারের ৮০ বছরের বর্নিল জীবনের অনেক বিষয় তাঁর মুখ থেকে উপস্থিত সকলে শুনে মুগ্ধ হন। উপস্থিত সকলের অনুরোধে তিনি তাঁর ছেলেবেলা, শিক্ষাজীবন, শিক্ষাজীবনের বন্ধু, শৈল্পিক ভাবনা, কর্মজীবন, বিয়ে, স্ত্রীর প্রতি ভালোবাসা, রাজনীতি এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা জহির রায়হানের সাথে তাঁর স্মৃতি আড্ডার মধ্য দিয়ে সবার সামনে তুলে ধরেন। এছাড়াও তাঁর কথায় বিশেষভাবে স্থান পায় তাঁর শ্বশুর বাংলা সাহিত্যের খ্যাতিমান লেখক শওকত ওসমানের কথা। জন্মবার্ষিকীর আড্ডায় ওয়াহিদ আসগার ছাড়াও কথা বলেন কবি আসাদ চৌধুরী এবং টরন্টো ফিল্ম ফোরামের সভাপতি এনায়েত করিম বাবুল।
উল্লেখ্য, ওয়াহিদ আসগার ১৯৪১ সালের ২২শে আগস্ট পিতার কর্মস্থল কোলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর তাঁদের পরিবার ঢাকায় বসবাস শুরু করে। তাঁর পৈত্রিক বাড়ী বংলাদেশের ফরিদপুর জেলায়। তাঁর পিতা পশ্চিমবঙ্গের শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ থেকে পাশ করেন। তাঁর পিতার বোনের ছেলে বিশ্বখ্যাত প্রকৌশলী এফ আর খান ও শিবপুর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়াশুনা করলেও ঢাকার আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (পরবর্তীতে বুয়েট) থেকে পাশ করেন। ওয়াহিদ আসগার ঢাকার সেন্ট গ্রেগরীজ স্কুল থেকে ম্যাট্রিক এবং নটরডেম কলেজ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাশ করার পর ১৯৬৪ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) থেকে পাশ করেন। তিনি ১৯৭১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে এনভাইরনমেন্ট ইঞ্জিনিইয়ারিং এ মাস্টার্স করেন।
ওয়াহিদ আসগার বাংলাদেশ সরকারের জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল এ চাকুরী জীবন শুরু করেন এবং ১৯৮৩ সালে এরশাদের শাসনামলে তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী থাকা অবস্থায় চাকুরী থেকে পদত্যাগ করেন। তারপর তিনি ইউএস এইড এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)’র পরামর্শক প্রকৌশলী এবং উপদেষ্টা হিসেবে ১৫ বছর ইন্দোনেশিয়া, কুয়েত এবং ব্রুনেই এ কাজ করেন। তিনি পানি সরবরাহ এবং পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা বিষয়ে একজন বিশেষজ্ঞ।
ওয়াহিদ আসগার বাংলা ভাষার প্রখ্যাত ঔপন্যাসিক শওকত ওসমানের কন্যার সাথে ১৯৭৪ সালে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁর স্ত্রী ২০১৪ সালে ৪ বছর ক্যান্সারের সাথে লড়াইয়ের পর মৃত্যুবরণ করেন। তাঁর একমাত্র পুত্র অমিত টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করে বর্তমানে কর্মসূত্রে নিউইয়র্কে বাস করছেন, আর একমাত্র কন্যা ওয়াহিমা কাজ করেন ব্রিটিশ কলম্বিয়া সরকারের পরিবেশ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে। ওয়াহিদ আসগারের উভয় সন্তানের দুটি করে কন্যা আছে।
ওয়াহিদ আসগার টরন্টোতে বসবাস করেন। তাঁর অবসর জীবনে তিনি ছবি আঁকা এবং রবীন্দ্র সংগীত শুনতে ভালোবাসেন।