সোনা কান্তি বড়ুয়া : বাংলাদেশে দিন বদলের যে মডেল বা প্যারাডাইমে বহুল প্রতীক্ষিত কোটি মানুষের স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জুনের ২৫ জুনের ২০২২ সাল। সেতু উদ্ভোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে লাখো মানুষের জনস্রোত। বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে শেখ হাসিনার কীর্তিমান পদ্মা সেতুর শুভ উদ্বোধন! জুনের ২৫ তারিখে আজ সেই স্বপ্ন পূরণের দিন, সাহস প্রমাণের দিন, সক্ষমতা প্রদর্শনের দিন। পদ্মা সেতুর স্মারক ডাকটিকিট ও স্মারক নোট উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২৫ জুন) বেলা সাড়ে ১১টায় মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠানের সুধী সমাবেশে স্মারক ডাকটিকিট ও ১০০ টাকা মূল্যমানের স্মারক নোট উদ্বোধন করেন তিনি।
শুভ উদ্বোধন এদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্ত থেকে সেতু উদ্বোধন করে গাড়িতে চড়ে সেতু পার হয়ে শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে যাবেন। মাওয়া ও জাজিরা প্রান্ত এক সুতোয় গেঁথে দৃষ্টিসীমায় পূর্ণরূপে ভেসে উঠেছে পদ্মা সেতু। স্বপ্নের পদ্মা সেতু এখন আর স্বপ্ন নয়, বাস্তব। একটির পর একটি স্প্যানে দৃশ্যমান এখন পুরো সেতু। যে পদ্মার একদিন ছিল না ক‚ল-কিনারা; কয়েকদিনের মধ্যেই সেই পদ্মার বুকের ওপর দিয়ে ছুটবে গাড়ি, চলবে ট্রেন। সেতুর কাজ শুরুর তিন বছর পর ২০১৭ সালের জানুয়ারিতে কানাডার আদালত রায় দেয় পদ্মা সেতুতে দুর্নীতিচেষ্টার অভিযোগ বায়বীয়, গালগপ্প।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, “জনগণের শক্তিতে বিশ্বাস করেছি বলেই পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্ভব হয়েছে! বাংলাদেশের জনগণ তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছেন এবং সমর্থন দিয়েছেন বলেই জনগণের শক্তিতে বলিয়ান হয়ে আজ পদ্মা সেতু নির্মাণে সমর্থ হয়েছেন। প্রয়োজনে দেশের উন্নয়নে জীবন দিয়ে হলেও কাজ করে যাবার দৃঢ় প্রত্যয় ও ব্যক্ত করেন তিনি। এক সময় দেশের অনেক জ্ঞানী-গুনী ব্যক্তিদের উক্তি- ‘নিজেদের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্ভব নয়’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আজকে নিজেদের টাকায় কীভাবে পদ্মা সেতু করতে পারলাম কারণ, আজকে আপনারা বাংলাদেশের জনগণ আমাকে সমর্থন দিয়েছেন পাশে দাঁড়িয়েছেন। আর জনগণের শক্তিই সবচেয়ে বড় শক্তি-আমি সেটাতেই বিশ্বাস করেছি।
বাংলাদেশ মাথা নত করেনি। শত বাধা, চাপের মুখে ধীরে কিন্তু দৃঢ়ভাবে এগিয়ে অসম্ভবকে সম্ভব করেছে। ‘আমরাও পারি’- আগামীর শক্তি হয়ে ওঠার এ বার্তা বিশ্বকে দিয়ে নিজের টাকায়, মেধায় প্রমত্ত পদ্মায় গর্বের সেতু নির্মাণ করেছে। এমন দিনের জন্যই হয়তো তারুণ্যের কবি, দ্রোহের কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য লিখেছিলেন, ‘সাবাস, বাংলাদেশ, / এ পৃথিবী অবাক তাকিয়ে রয়। জ্বলে-পুড়ে-মরে ছারখার / তবু মাথা নোয়াবার নয়। “যাঁর (প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা) সাহসে ‘সম্ভব না’ থেকে সম্ভাবনার পদ্মা সেতু নির্মিত হয়েছে- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কণ্ঠে ধ্বনিত এ কবিতা প্রতিধ্বনিত হলো পদ্মাপাড় থেকে সারাদেশে। বাকি সবাই দিলেও সেতুর কৃতিত্ব নিজে নিলেন না; দিলেন বাংলার জনগণকে। পদ্মা সেতুর বহুল প্রতীক্ষার উদ্বোধনে বললেন, ‘এই জনগণই আমার সাহসের ঠিকানা, এই জনগণকে আমি স্যালুট জানাই।’
দুই যুগের অপেক্ষার অবসান হয় গতকাল শনিবার ভরদুপুরে। ভরা বর্ষায় পদ্মা যেমন থাকে, গতকালও তেমনই ছিল। উত্তাল প্রমত্ত। সেই খরস্রোতা নদীর ওপর যে সেতু নির্মাণে ২১ বছর আগে তিনি ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। আজ টোল দিয়ে সেই তিনিই পদ্মা পার হন প্রথম যাত্রী হিসেবে। বাঙালির অহংকারের সেতুতে দাঁড়িয়ে উতল হাওয়ার বিপরীতে দাঁড়ান গর্ব নিয়ে। যেমন বিরুদ্ধ হাওয়ার বিপরীতে নৌকা বেয়ে এক যুগে তিলে তিলে সত্য করেছেন পদ্মা সেতু নির্মাণের স্বপ্নকে।
আমাদের বহু আকাক্সিক্ষত পদ্মা নদী ছিল কীর্তিনাশা। একটিমাত্র সেতুর কারণে আজ সৃষ্টি সুখের উল্লাসে এখন হয়ে যাবে কীর্তিমান পদ্মা। এর ওপর দিয়েই জাতির নতুন সফলতা গাঁথা হবে, নতুন ইতিহাস তৈরি হবে। পদ্মা সেতু দিয়ে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডিং হয়েছে। রাতের পদ্মা এখন আলোময়। একটা মোহনীয় স্নিগ্ধতা চারদিকে। শান্ত জলে যখন আলোর ছায়া পড়ে, অপার্থিব এক মুগ্ধতায় বুদ হয়ে থাকে পুরো দেশ। প্রকল্পে দেশীয় পণ্য ব্যবহার করার ফলে দেশের টাকা দেশেই থেকে গেলো। পদ্মা সেতুর মতো বড় প্রকল্পে দেশীয় উপকরণ ব্যবহারের মাধ্যমে এ দেশের নির্মাণ উপকরণও বিশ্বমানের স্মীকৃতি পেয়েছে। এর মাধ্যমে প্রমান হয়েছে যে কোন মেগা প্রকল্পে বাংলাদেশ এখন নিজেদের উপকরণ ব্যবহারে সক্ষম। মেগা প্রকল্পে তাই বিদেশ থেকে পণ্য না এনে দেশীয় শিল্প বিকাশের নতুন সম্ভাবনার কথা বলছেন অর্থনীতিবিদরা।
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম লিখেছিলেন, ‘পদ্মার ঢেউ রে/ মোর শূন্য হৃদয় পদ্ম নিয়ে যা, / যা রে! “বঙ্গবন্ধু যেমন বাঙালি জাতিকে উপহার দিয়েছেন হাজার বছরের দাসত্বের শৃঙ্খল থেকে চূড়ান্ত মুক্তি ও স্বাধীনতা, তেমনি বঙ্গবন্ধুকন্যা বাংলাদেশকে ধ্বংসস্তুপ থেকে উন্নীত করেছেন একটি মর্যাদাবান রাষ্ট্র হিসেবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার দেশের মানুষের সামাজিক ও অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নয়নের জন্য নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক ও অভ্যন্তরীণ ষড়যন্ত্র-প্রতিক‚লতা মোকাবিলা করে বিশ্বের অন্যতম খরস্রোতা পদ্মা নদীর ওপর সম্পূর্ণ নিজস্ব অর্থায়নে সেতু নির্মাণ করে উন্নত বাংলাদেশ গড়ার প্রথম মাইলফলক স্থাপন করেছেন আওয়ামী লী প্রধান শেখ হাসিনা। সফলভাবে এই স্থাপনা নির্মাণের কারণে বিশ্বজুড়ে নন্দিত হচ্ছে বাংলাদেশ, অবহেলিত বাঙালি জাতি আজ স্যালুট পাচ্ছে বিশ্বনেতাদের। সংগ্রাম ও অর্জনে আওয়ামী লীগের ৭৩ বছর।
১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নির্বাচনি ইশতেহারে যমুনা, বুড়িগঙ্গা, কর্ণফুলী ও শীতলক্ষ্যার ওপরে সেতু নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিলেও দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু পদ্মা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের ঘোষণা দেন। কিন্তু ’৭৫-এ বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হওয়ার পর পদ্মা সেতুর স্বপ্ন অধরাই থেকে যায়। বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিয়েছেন তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বহু সত্রুর মুখে ছাই দিয়ে, ষড়যন্ত্রকারী ও বাংলাদেশ বিরোধীদের উচিত শিক্ষা দিয়ে।
শুক্রবার শেষ বিকেলে ধানমন্ডিতে শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ির কাঁচে ঢাকা সিঁড়িতে ছড়ানো লাল গোলাপের পাপড়ি যখন শুকিয়ে আসছিল, ছুটির দিনের ভিড়টা সরে যাচ্ছিল ঢাকার বিজয় সরণিতে। ঢাকার এই সড়কের এক দিকে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ, বঙ্গবন্ধুর নামাঙ্কিত সামরিক জাদুঘর, নভো থিয়েটার। উল্টো দিকে এখন ঢাউস আকারের একের পর এক হোর্ডিংয়ে শুধুই পদ্মা সেতুর ছবি। শনিবার সকালে শেখ হাসিনা এই পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করবেন। পদ্মার ঢেউয়ের বাধা কাটিয়ে, বাংলাদেশের এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্ত ছুঁচ্ছে সেই সেতু। মস্ত মাপের সব হোর্ডিংয়ে সেই সেতুর ছবির এক দিকে শেখ মুজিবের মুখ। অন্য দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। মাঝে বার্তা, ‘তুমি স্বপ্ন দেখ, স্বপ্ন দেখাও বিশ্ব জয়ের’।
দেশের দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার সঙ্গে রাজধানী ঢাকার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ স্থাপনে দুই দশক আগে একটি বৃহৎ সেতু নির্মাণের যে স্বপ্ন সূচিত হয়েছিল, আজ তা চূড়ান্ত হওয়ার দিন। বস্তুত এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ বাণী প্রদানের মধ্য দিয়ে গোটা জাতির গর্বই প্রকাশ হয়েছে। রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ এ উপলক্ষে যে বাণী প্রদান করেছেন, তাঁর এই বক্তব্য প্রণিধানযোগ্য যে, পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন বিশ্বদরবারে দেশ ও জনগণকে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সাহস এনে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও যথার্থই বলেছেন যে, আজ বাংলাদেশের জন্য এক গৌরবোজ্জ্বল ঐতিহাসিক দিন। দেশের বিশিষ্টজনসহ আপামর জনসাধারণ কীভাবে এই দিনের অপেক্ষায় ছিল, সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমেও তা স্পষ্ট। কারণ বিষয়টি নিছক আনুষ্ঠানিকতার নয়। ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ দেশের এই বৃহত্তম সেতু যানবাহন ও রেল চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে আর্থসামাজিক উন্নয়নে স্পষ্টতই নতুন গতি আসবে। পদ্মা বহুমুখী সেতু উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে বহুল কাঙ্ক্ষিত ও দীর্ঘ প্রতীক্ষিত একটি স্বপ্নের বাস্তবায়ন হওয়ায় সমকাল পরিবারও আনন্দিত ও আপ্লুত।
পদ্মা সেতুর অজানা তথ্য!
১. প্রশ্নঃ পদ্মা সেতুর প্রকল্পের নাম কী? উত্তরঃ পদ্মা বহুমুখী সেতু প্রকল্প।
২. প্রশ্নঃ পদ্মা সেতুর দৈর্ঘ্য কত? উত্তরঃ ৬.১৫ কিলোমিটার।
৩. প্রশ্নঃ পদ্মা সেতুর প্রস্থ কত? উত্তরঃ ৭২ ফুটের চার লেনের সড়ক।
৪. প্রশ্নঃ পদ্মা সেতুতে রেললাইন স্থাপন হবে কোথায়? উত্তরঃ নিচ তলায়।
৫. প্রশ্নঃ পদ্মা সেতুর ভায়াডাক্ট কত কিলোমিটার? উত্তরঃ ৩.১৮ কিলোমিটর।
৬. প্রশ্নঃ পদ্মা সেতুর সংযোগ সড়ক কত কিলোমিটার? উত্তরঃ দুই প্রান্তে ১৪ কিলোমিটার।
৭. প্রশ্নঃ পদ্মা সেতু প্রকল্পে নদীশাসন হয়েছে কত কিলোমিটার? উত্তরঃ দুই পাড়ে ১২ কিলোমিটর।
৮. প্রশ্নঃ পদ্মা সেতু প্রকল্পে মোট ব্যয় কত? উত্তরঃ মূল সেতুতে ২৮ হাজার ৭৯৩ কোটি ৩৯ লাখ টাকা।
৯. প্রশ্নঃ পদ্মা সেতু প্রকল্পে নদীশাসন ব্যয় কত? উত্তরঃ ৮ হাজার ৭০৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা।
১০. প্রশ্নঃ পদ্মা সেতু প্রকল্পে জনবল কতজন? উত্তরঃ প্রায় ৪ হাজার।
১১. প্রশ্নঃ পদ্মা সেতুর ভায়াডাক্ট পিলার কয়টি? উত্তরঃ ৮১টি।
১২. প্রশ্নঃ পানির স্তর থেকে পদ্মা সেতুর উচ্চতা কত? উত্তরঃ ৬০ ফুট।
১৩. প্রশ্নঃ পদ্মা সেতুর পাইলিং গভীরতা কত? উত্তরঃ ৩৮৩ ফুট।
১৪. প্রশ্নঃ প্রতি পিলারের জন্য পাইলিং কয়টি? উত্তরঃ ৬টি।
১৫. প্রশ্নঃ পদ্মা সেতুর মোট পাইলিং সংখ্যা কত? উত্তরঃ ২৬৪টি।
১৬. প্রশ্নঃ পদ্মা সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হবে কবে? জুনের ২৫ তারিখ ২০২২!
১৭. প্রশ্নঃ পদ্মা সেতুতে কী কী থাকবে?
উত্তরঃ গ্যাস, বিদ্যুৎ ও অপটিক্যাল ফাইবার লাইন পরিবহন সুবিধা।
১৮. প্রশ্নঃ পদ্মা সেতুর ধরন কেমন? উত্তরঃ দ্বিতলবিশিষ্ট এই সেতু কংক্রিট আর স্টিল দিয়ে নির্মিত হবে।
১৯. প্রশ্নঃ পদ্মা সেতুর পিলার সংখ্যা কত? উত্তরঃ ৪২টি।
২০. প্রশ্নঃ পদ্মা সেতু প্রকল্পে চুক্তিবদ্ধ কোম্পানির নাম কী? উত্তরঃ চায়না রেলওয়ে গ্রæপ লিমিটেড।
২১. প্রশ্নঃ পদ্মা সেতু দক্ষিনের কয়টি জেলাকে যুক্ত করবে?
উত্তরঃ সরাসরি সড়কপথে যুক্ত হবে দক্ষিণ জনপদের ২১ জেলা।
২২. প্রশ্নঃ পদ্মা সেতু হলে দেশের আর্থিক প্রবৃদ্ধি কত শতাংশ বাড়বে?
উত্তরঃ এই সেতু হলে দেশের আর্থিক প্রবৃদ্ধি ১.২ শতাংশ বাড়বে, প্রতিবছর ০.৮৪ শতাংশ হারে দারিদ্র্য বিমোচন হবে। ২৩. প্রশ্নঃ বিশ্বে দীর্ঘতম সেতু হিসেবে কততম স্থান দখল করে নিয়েছে পদ্মা সেতু?
উত্তরঃ বঙ্গবন্ধু সেতুকে টপকে বিশ্বে দীর্ঘতম সেতু হিসেবে এগারো তম স্থান দখল করে নিয়েছে পদ্মা সেতু।
২৪. প্রশ্নঃ পদ্মা সেতু চুক্তি স্বাক্ষরের তারিখ কত? উত্তরঃ চুক্তি স্বাক্ষরের তারিখ : জুন ১৭, ২০১৪!
২৫. প্রশ্নঃ পদ্মা সেতু কার্যাদেশ প্রদানের তারিখ কত? উত্তরঃ কার্যাদেশ প্রদানের তারিখ : নভেম্বর ২৬, ২০১৪।
পদ্মা সেতুর আকৃতি: ইংরেজি এস (S) অক্ষরের মতো!
ভূমিকম্প সহনশীলতা : রিক্টার স্কেলে ৮ মাত্রার কম্পন
এপ্রোচ রোডের দৈর্ঘ্য: ১২ কিলোমিটার
নদীশাসন: ১৬.২১ কিলোমিটার
সেতুর আয়ুষ্কাল: ১০০ বছর
সেতুর মোট ব্যয়: ৩০,১৯৩.৩৯ কোটি
ঢাকার সঙ্গে সরাসরি সড়ক যোগাযোগ প্রতিষ্ঠিত হবে এমন জেলার সংখ্যা: ২১টি
সরাসরি উপকারভোগী মানুষের সংখ্যা: দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ৩ কোটি মানুষ।
যেসব দেশের বিশেষজ্ঞ ও প্রকৌশলীরা কাজ করেছেন : চীন, ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, জার্মানি, অট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ন্যাদারল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, জাপান, ডেনমার্ক, ইতালি, মালয়েশিয়া, কলম্বিয়া, ফিলিপাইন, থাইওয়ান, নেপাল ও দক্ষিণ আফ্রিকা।
প্রকল্পের অঙ্গ (component) ভিত্তিক ব্যয় বিভাজন:
ক) মূল সেতুর ব্যয়: ৪০০ কেভি ট্রান্সমিশন লাইন টাওয়ার ও গ্যাস লাইনের ব্যয়সহ ১১,৯৩৮.৬৩ কোটি টাকা (বরাদ্দ ১২,১৩৩.৩৯ কোটি টাকার বিপরীতে)
খ) নদীশাসন কাজ: ৮,৭০৬.৯১ কোটি টাকা (৯,৪০০ কোটি টাকার বিপরীতে)
গ) অ্যাপ্রোচ রোড: ২টি টোল প্লাজা, ২টি থানা বিল্ডিং ও ৩টি সার্ভিস এরিয়াসহ ১৮৯৫.৫৫ কোটি টাকা (১৯০৭.৬৮ কোটি টাকার বিপরীতে )
ঘ) পুনর্বাসন ব্যয়: ১,১১৬.৭৬ কোটি টাকা (১,৫১৫ কোটি টাকার বিপরীতে)
ঙ) ভূমি অধিগ্রহণ: ২৬৯৮.৭৩ কোটি টাকা
চ) পরিবেশ: ২৬.৭২ কোটি (১২৯.০৩ কোটি টাকা)
ছ) অন্যান্য বেতন ভাতা, পরামর্শক, সেনা নিরাপত্তা ইত্যাদি: ১৩৪৮.৭৮ কোটি (২৪০৯.৫৬ কোটি টাকার বিপরীতে)! প্রকল্পের মোট অনুমোদিত ব্যয়: ২৭,৭৩২.০৮ কোটি টাকা (৩০১৯৩.৩৯ কোটি টাকার বিপরীতে)! সেতু উদ্বোধন: ২৫ জুন ২০২২।
(তথ্যসূত্র: পদ্মা সেতু প্রকল্প অফিস, ক্যাবিনেট ডিভিশন, সংবাদ সম্মেলনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বক্তৃতার কপি; আপডেট: ২৩ জুন ২০২২)!
আজ সৃষ্টি সুখের উল্লাসে পদ্মা সেতু বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে শিখিয়েছে! সত্যিকার অর্থে স্বপ্নটা ছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের; আর তা বাস্তবায়ন করলেন তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। অনেক চড়াই-উতরাইয়ের পর পদ্মা সেতু নির্মাণে ব্যবহৃত বেশিরভাগ উপকরণ দেশীয়। রড-সিমেন্টসহ সব মিলিয়ে ব্যবহার হয়েছে ৩০ ধরনের উপকরণ। কয়েকদফা ল্যাব টেস্টের পর অনুমোদন পেয়েছে এসব উপকরণ। দেশের অন্য মেগাপ্রকল্পেও নির্মাণ সামগ্রী সরবরাহে সক্ষম দেশি প্রতিষ্ঠানগুলো। নিছক নদীর উপরে তৈরি সেতু। সে তো ভূ-ভারতে কতই রয়েছে। পদ্মা নদীর উপরে তৈরি সেতু সে হিসেবে ব্যতিক্রম নয়। কিন্তু একটা সেতু যে একটা গোটা দেশের মানুষের আবেগকে এ ভাবে তুঙ্গে নিয়ে যেতে পারে, তা ঢাকায় না এলে বোঝা যায় না।শনিবার সকালে পদ্মা সেতু উদ্বোধনের অপেক্ষায় শুক্রবার যেন বিনিদ্র রজনী কাটাতে চলেছে বাংলাদেশ!
অর্থনৈতিক ও সামাজিক বাস্তবতায় পদ্মা সেতু বাংলাদেশের গর্ব। বিশ্বব্যাংক ও তার সঙ্গে আরও কয়েকটি দাতাগোষ্ঠী যখন পদ্মা সেতুতে অর্থায়ন করল না, তখন এ দেশের সাহসী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা সুচিন্তিতভাবে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণে হাত দেন। এটি ছিল তার বিজ্ঞজনোচিত চিন্তা। একই সঙ্গে তিনি পদ্মা সেতুতে রেল ব্যবস্থাপনাও যুক্ত করেন। পদ্মা সেতুর ফলে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের ভাগ্য খুলে যাচ্ছে। সেতুকে ঘিরে মানুষের জীবনযাত্রার মানও বদলাচ্ছে। সেখানে বিশ্বমানের অলিম্পিক ভিলেজ, বেনারসি তাঁতপল্লী, রাজউকের উদ্যোগে আইকন টাওয়ার, দেশের মধ্যে একমাত্র ন্যাশনাল জুডিশিয়াল একাডেমিসহ বড় বড় প্রকল্প নির্মিত হচ্ছে। সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি স্থানীয় জনগণও বড় বড় বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলছে।
মূল সেতুতে সব মিলে ৩০টির বেশি উপকরণ ব্যবহার হয়েছে। এর মধ্যে দেশীয় রড, সিমেন্ট, বালু, বৈদ্যুতিক কেব্?ল, পাইপ, ডিজেল, বিটুমিন ও জিও ব্যাগ রয়েছে। দৈনিক ইত্তেফাকের সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন) এসময় প্রধানমন্ত্রীকে পদ্মা সেতুর রেপলিকা উপহার হিসেবে দেন মেজর ব্রিজের পক্ষে লিও সিনহুয়া। পদ্মা সেতু একই সঙ্গে সাহসেরও নাম। এই সেতু নির্মাণের মধ্য দিয়ে প্রমাণ হলো যে, বিদেশিদের আর্থিক সহায়তা ছাড়াও এ ধরনের বৃহৎ স্থাপনা নির্মাণের সদিচ্ছা ও সামর্থ্য বাংলাদেশের রয়েছে। আমাদের মনে আছে, ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে জাজিরা প্রান্তে নদীশাসন কাজ উদ্বোধনের পর আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন- ‘দেশে বড় কোনো কাজ করতে গেলেই বিদেশিদের কাছে হাত পাততে হবে- এ মানসিকতা থেকে বাংলাদেশের মানুষ বেরিয়ে এসেছে। আমি চেয়েছিলাম, আমরা পারি, আমরা তা দেখাব। আজ আমরা সেই দিনটিতে এসে পৌঁছেছি।’
এই সেতু নির্মাণের ফলে দেশের সমন্বিত যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি হবে। ঢাকা থেকে মাওয়া-ভাঙ্গা-যশোর-খুলনা রেল যোগাযোগ স্থাপিত হবে। ঢাকা থেকে খুলনা, মোংলা, বরিশাল, কুয়াকাটা ইকোনমকি করিডোর স্থাপিত হবে। দেশের দক্ষিণাঞ্চল ট্রান্স-এশিয়ান হাইওয়ে (এন-৮) ও ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ের সঙ্গে যুক্ত হবে। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে এত সমস্যা মোকাবিলা করে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের স্বপ্ন দেখা এবং তা বাস্তবায়নের জন্য একটা স্যালুট শেখ হাসিনার প্রাপ্য।
ভারত, ভুটান ও নেপালের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হবে এবং যাত্রী ও পণ্য পরিবহণ সহজতর হবে। নতুন অর্থনৈতিক অঞ্চল ও হাইটেক পার্ক স্থাপিত হলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করবে এবং দেশের শিল্পায়ন ত্বরান্বিত হবে। ২০১০ সালের হিসাব অনুযায়ী, বর্তমানে পদ্মা নদী পারাপার হয়ে দৈনিক যেখানে ১২ হাজার যান চলাচল করে, সেখানে সেতু খুলে দিলেই যান চলাচল দ্বিগুণ হতে পারে এবং প্রতি বছর যানবাহন ৭-৮ শতাংশ হারে বেড়ে ২০৫০ সালে দৈনিক ৬৭ হাজার যানবাহন চলবে।
তবে এ সংখ্যা বাড়তেও পারে। কারণ, যমুনা বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণের আগে সেতুর ওপর দিয়ে যান চলাচলের যে সম্ভাব্য হিসাব করা হয়েছিল, বর্তমানে এর চেয়ে বেশি যান চলাচল করছে। অর্থনৈতিক প্রভাবও অনুমানের চেয়ে বেশি হয়েছে। সেতুর ওপর দিয়ে চলাচলকৃত যানবাহন থেকে টোল আদায় দিন দিন বাড়ছে। বাংলাদেশের জাতীয় উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষ করে গ্রামীণ উন্নয়নশীল এলাকার বিশাল জনগোষ্ঠীর অর্থনৈতিক উন্নয়ন, সামাজিক উন্নয়ন, জীবনমানের উন্নয়ন ও জ্ঞান-মনোভাবের ব্যাপক পরিবর্তনে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির বিকল্প নেই। স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালু হলে এর সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপিত হবে দক্ষিণাঞ্চলের ২১টি জেলার। (Daily Jugantar ২২ জুন ২০২২)!
সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছেন। এই সেতু আমাদের সক্ষমতার ও আত্মবিশ্বাসের প্রতীক। ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দিনে আমরা একইভাবে আনন্দ করব। এটা আমাদের জন্য আরও একটি বিজয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রমাণ করেছেন, বাঙালি জাতি কারো কাছে মাথানত করতে পারে না।
শনিবার বিকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউর আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভিনন্দন ও ফুলেল শুভেচ্ছা জানাতেই কেন্দ্রীয় ১৪ দল এই সমাবেশ ও আনন্দ মিছিলের আয়োজন করে। সভায় সভাপতির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু বলেন, আওয়ামী লীগের শক্তির মূল ভিত্তি এ দেশের জনগণ। আমাদের বিদেশে কোনো প্রভু নেই। আওয়ামী লীগ কোনো শক্তির কাছে জিম্মি নয়, আওয়ামী লীগের শক্তি এ দেশের জনগণ। জনগণ যাদের ক্ষমতার উৎস, তাদের অন্য কারো শক্তির কাছে জিম্মি হতে হয় না।
২৫ জুন বাঙালি জাতির জন্য আরও একটি বিজয় মন্তব্য করে আমির হোসেন আমু বলেন, ১৯৭১ সালে বিজয় লাভ করার পর দেশবাসী যেভাবে আনন্দ করেছিল, ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধনের দিনে আমরা একইভাবে আনন্দ করব। বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করেছেন। এই সেতু আমাদের সক্ষমতার ও আত্মবিশ্বাসের প্রতীক। পদ্মা সেতুু বাংলাদেশের মানুষের জন্য গৌরবের। অপশক্তির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, অপশক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখতে হবে। যারা সা¤প্রদায়িক রাজনীতি করে, তাদের আগামী নির্বাচনের মধ্য দিয়ে এ দেশের রাজনীতি থেকে বিতাড়িত করতে হবে।
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার বলেন, সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে শেখ হাসিনা পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে সক্ষম হয়েছেন। তেমনি সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে তার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাবে। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য এবং ঢাকা মহানগর ১৪ দলের সমন্বয়ক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রমের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন- জাতীয় পার্টি জেপির সাধারণ সম্পাদক শেখ শহিদুল ইসলাম, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফি, গণআজাদী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট এসকে সিকদার, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন, কেন্দ্রীয় ১৪ দলর নেতা ড. ওয়াজেদুল ইসলাম খান প্রমুখ।
পরে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি আনন্দ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি জিপিও, পল্টন মোড় হয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এসে শেষ হয়। পদ্মা নদী ছিল কীর্তিনাশা। একটিমাত্র সেতুর কারণে এখন হয়ে যাবে কীর্তিমান পদ্মা। এর ওপর দিয়েই জাতির নতুন সফলতা গাঁথা হবে, নতুন ইতিহাস তৈরি হবে। পদ্মা সেতু দিয়ে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ডিং হয়েছে।
বিশ্ববৌদ্ধ পুরস্কার প্রাপ্ত প্রখ্যাত মানবতাবাদী লেখক সোনা কান্তি বড়ুয়া (Bachelor of Arts, University of Toronto), The Author’s World famous and glorious New Book entitled ÒPRE – VEDIC MOHENJODARO BUDDHISM & MEDITATION IN THE NUCLEAR AGE , (516 Pages) সাবেক সভাপতি, বাংলা সাহিত্য পরিষদ, টরন্টো, খ্যাতিমান ঐতিহাসিক, কথাশিল্পী, বিবিধগ্রন্থ প্রনেতা প্রবাসী কলামিষ্ঠ, লাইব্রেরীয়ান, বিশ্ববৌদ্ধ সৌভ্রতৃত্ব পত্রিকার সহ সম্পাদক এবং জাতিসংঘে বিশ্ববৌদ্ধ প্রতিনিধি !