অনলাইন ডেস্ক : জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট চার দিনের সফরে আজ রবিবার (১৪ আগস্ট) ঢাকায় আসছেন। সফরকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ছাড়াও পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র, আইন ও শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। এছাড়া কক্সবাজারস্থ রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শন এবং শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের সঙ্গে তার বৈঠক হবে। ঢাকায় অবস্থানকালে বিস মিলনায়তনে একটি সেমিনারে বক্তৃতা করবেন তিনি।

জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি মর্যাদার এই কর্মকর্তার এটিই প্রথম বাংলাদেশ সফর। মিশেল ব্যাচেলেট চিলির এক শীর্ষ স্থানীয় রাজনীতিক। তিনি ১০ বছরের বেশি সময় লাতিন আমেরিকার দেশ চিলির প্রেসিডেন্ট ছিলেন। মিশেল ব্যাচেলেট মানবাধিকার ইস্যুতে জাতিসংঘ মহাসচিবকে পরামর্শ দেন। জাতিসংঘে মানবাধিকার বিষয়ক বৈঠকগুলোতেও মহাসচিবের প্রতিনিধিত্ব করেন।

এদিকে মিশেল ব্যাচেলেট ঢাকা সফরকালে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়নে সরকারকে যেন চাপ দেন, সেই আহ্বান জানিয়েছে ৯টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা। এক বিবৃতিতে সংস্থাগুলো বলেছে, বাংলাদেশ সফরকালে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নির্যাতন এবং গুমসহ গুরুতর সব নির্যাতন বন্ধে প্রকাশ্যে আহ্বান জানানো উচিত ব্যাচেলেটের। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ওয়েবসাইটে বুধবার বিবৃতিটি প্রকাশ করা হয়।

এদিকে গতকাল শনিবার ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মানবাধিকার এজেন্ডার রাজনীতিকরণ কখনোই জনগণের মানবাধিকারকে উত্সাহিত ও সুরক্ষায় সাহায্য করে না। বাংলাদেশ সরকার দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, আন্তরিক সংলাপ এবং সহযোগিতা হলো পথ। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের সফরকে সরকারের ওপর ‘অযাচিত চাপ’ দেওয়ার উপলক্ষ্য হিসেবে দেখিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার কিছু দৃশ্যমান ‘রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচেষ্টা’ হচ্ছে। বাংলাদেশ সরকার দৃঢ়ভাবে তা প্রত্যাখ্যান করেছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, জাতিসংঘের মানবাধিকার ব্যবস্থার সঙ্গে বাংলাদেশের চলমান ঘনিষ্ঠ সম্পৃক্ততা এবং সহযোগিতা অব্যাহত রাখা ও আরো বাড়ানোর লক্ষ্যে দায়িত্বশীল ও প্রতিক্রিয়াশীল সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে মানবাধিকারের প্রচার ও সুরক্ষার জন্য হাইকমিশনারের সঙ্গে গঠনমূলক আলোচনার জন্য প্রস্তুত বাংলাদেশ। বাংলাদেশ প্রত্যাশা করে, নানা প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে দেশের অর্জনের বিষয়ে হাইকমিশনারের বস্তুনিষ্ঠ প্রশংসায় বাংলাদেশ লাভবান হবে।

জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার প্রধান কক্সবাজার সফরে বাস্ত্তচ্যুত রোহিঙ্গাদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সুযোগ পাবেন। রোহিঙ্গাদের মাতৃভূমি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে প্রত্যাবাসনের এজেন্ডা জোরদার করার ক্ষেত্রে এই সফর তার সহায়ক হবে বলে বিবৃতিতে বলা হয়েছে।