অনলাইন ডেস্ক : জন্মহার নিয়ে ভীষণ উদ্বেগে পড়েছে চীন। দেশটিতে ২০২৪ সালে বিবাহ কমেছে ২০ শতাংশ, যা দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে বড় পতন।

তরুণ-তরুণীদের বিবাহ ও সন্তান জন্ম দেওয়ার ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ নানা ধরনের উৎসাহ দেওয়ার পরেও দেশটিতে এমন চিত্র সামনে এল।

বিয়ে ও সংসার শুরুর আগ্রহ কমার জন্য চীনে শিশু যত্ন ও শিক্ষায় উচ্চ ব্যয়কে দায়ী করা হয়। তাছাড়া গত কয়েক বছর ধরে দেশটির যে অর্থনেতিক প্রবৃদ্ধি হচ্ছে তাতে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের জন্য চাকরি পাওয়া কঠিন হয়ে যাচ্ছে। অন্যদিকে যারা চাকরি করছে তাদের মধ্যে আছে নানা ধরনের অনিশ্চয়তা।

চীনের সিভিল অ্যাফেয়ার্স মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, গত বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালে ৬ দশমিক ১ মিলিয়নের বেশি বিয়ে হয়। তবে তার আগের বছর এই সংখ্যা ছিল ৭ দশমিক ৬৮ মিলিয়ন।

উইসকনসিন-ম্যাডিসন বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংখ্যাবিদ ইয়ি ফক্সিয়ান এ ঘটনাকে নজিরবিহীন উল্লেখ করে বলেন, এমনকি ২০২০ সালে অর্থাৎ করোনা মহামারির সময়ও বিবাহ কমেছিল ১২ দশমিক ২ শতাংশ।

তিনি বলেন, ২০২৪ সালে যে সংখ্যক বিয়ে রেকর্ড করা হয়েছে তা ২০১৩ সালের ১৩ দশমিক ৪৭ মিলিয়নের চেয়ে অর্ধেকেরও কম।

তিনি বলেন, এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে চীন সরকারের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক যে উচ্চাকাঙ্ক্ষা রয়েছে তা জনসংখ্যাগত দুর্বলতার কারণে নষ্ট হয়ে যাবে।

জনসংখ্যার দিক থেকে বিশ্বে চীনের অবস্থান দ্বিতীয়। দেশটিতে এক দশমিক ৪ বিলিয়ন জনসংখ্যা রয়েছে। তবে উদ্বেগের বিষয় হলো দেশটির মানুষ দ্রুত প্রবীণ হয়ে যাচ্ছেন।

চীনের ১৮৮০ থেকে ২০১৫ সালে এক-সন্তান নীতি এবং দ্রুত নগরায়নের কারণে কয়েক দশক ধরে জন্মহার হ্রাস পেয়েছে। আসন্ন দশকে দেশটিতে প্রায় ৩০০ মিলিয়ন মানুষ অবসরে যাবেন। যা যুক্তরাষ্ট্রের মোট জনসংখ্যার সমান।

সমস্যা মোকাবিলায় কর্তৃপক্ষ এরই মধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে বিয়ে, প্রেম, সন্তান জন্ম ও পরিবার সম্পর্কে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির ওপর জোর দেওয়ার জন্য চীনের কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ভালোবাসবিষয়ক শিক্ষা দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

সূত্র: নিক্কেই এশিয়া