অনলাইন ডেস্ক : গভীর মমতা আর ভালোবাসায় জন্মভিটায় দু’দিন কাটালেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। গত রোববার বিকেলে তিনি মিঠামইন হেলিপ্যাডে নামেন। পরে কামালপুরের বাড়ি যান। সেখানে সর্বশেষ জানাজায় অংশ নিয়ে ছোট ভাই তার সহকারী একান্ত সচিব আবদুল হাইকে মা-বাবার কবরের পাশে সমাহিত করেন।
পরে জন্মভিটায় সদ্য নির্মিত একটি কক্ষে অবস্থান নেন রাষ্ট্রপতি। সেখানে আপনজনদের সঙ্গে ছোট ভাই আবদুল হাইকে নিয়ে স্মৃতিচারণ করেন। সহজ-সরল জীবনযাপনে অভ্যস্ত আবদুল হাই সম্পর্কে রাষ্ট্রপতি বলেন, বর্তমান সময়ের কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হওয়ার মতো মানুষ ছিল না আবদুল হাই। তাই ডেপুটি স্পিকার হওয়ার পরই নির্লোভ সাদামনের মানুষ আবদুল হাইকে সঙ্গে রাখি। বয়সে আমার অনেক ছোট হাইকে সবসময় বাবার আদরে আগলে রেখেছি। মুক্তিযুদ্ধের দীর্ঘ নয় মাস সে ইন্ডিয়ার বালাট ক্যাম্পে আমার সঙ্গে ছিল। রাজনৈতিক বাস্তবতা বড় কঠিন ও রূঢ়। তাই সব সময় তার প্রতি বিশেষ নজরদারি করেছি। এসব কথা বলার পর গভীর রাতে তিনি ঘুমাতে যান। সোমবার একটু বেলা করে বিছানা ছাড়েন রাষ্ট্রপতি। নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী এদিন বিকেলেই ঢাকার উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা। কিন্তু হাওরের প্রতি টান আর গভীর ভালোবাসায় তিনি বঙ্গভবনে ফিরতে পারেননি। পরিবর্তন হয় কর্মসূচি। তিনি আরও একদিন জন্মভিটা কামালপুর থাকবেন। রাষ্ট্রপতি সোমবার বিকেলে চোখ জুড়ানো মিঠামইন-ইটনা-অষ্টগ্রাম অলওয়েদার সড়ক পরিদর্শনে বের হন। তিনি পুলিশের গাড়িতে আর তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মো. শামীমুজ্জামানসহ অন্যরা অটোরিকশায়। মঙ্গলবার প্রচণ্ড বৃষ্টির কারণে বাড়ির বাংলাঘরে বসেই পারিবারিক পরিবেশে বিভিন্ন আন্দোলন ও সংকটময় পরিস্থিতি এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী ও সময়োপযোগী বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা ও স্মৃতিচারণ করেন রাষ্ট্রপতি। দুপুরে খাবার পর সদ্য প্রয়াত ছোট ভাই আবদুল হাই, মা-বাবা ও বড় ভাইয়ের কবর জিয়ারত করেন তিনি। মোনাজাতের পর বিকেল ৩টার দিকে ঢাকা রওনা হন।
রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ের সচিব সম্পদ বড়ূয়া সমকালকে বলেন, হাওরের প্রতি রাষ্ট্রপতির হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা রয়েছে। তাই তিনি সেখানে গেলে আপ্লুত হয়ে পড়েন।
রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন সমকালকে জানান, হাওরের উন্নয়নের নেপথ্য কারিগর হলেন রাষ্ট্রপতি। তাই তিনি সেখানে গেলে গভীর মমতায় সবকিছু ভুলে যান।
বাবার পথ অনুসরণ করে যেন হাওরের উন্নয়ন করতে পারেন, সে জন্য সবার দোয়া চান রাষ্ট্রপতির বড় ছেলে কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য রেজওয়ান আহম্মদ তৌফিক।
মিঠামইন থেকে বিজয় কর রতন জানান, মঙ্গলবার মিঠামইনের রাষ্ট্রপতির বাড়ির পশ্চিম পাশে ঘোড়াইত্রা নদীর তীরে ক্যান্টেমেন্টের জায়গায় বালি ভরাট কাজ পরিদর্শন করেন তিনি। এ সময় রাষ্ট্রপতির সফরসঙ্গীরা ছাড়াও ইউএনও প্রভাংশু সোমমহান, উপজেলা চেয়ারম্যান আছিয়া আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।