শামীম আহসান মহাবুল্লাহ : “স্বর্গের অধিপতি কি চাচ্ছেন না, আমি জাঁহাপনার পাশে থাকি?”, হুই ছোট রানী আবার কথা বললো।
আমি বললাম, “আমি জানি না।”, আমি আসলেও, সত্যিই জানি না!
পরের দিন, অল্প বয়সী প্রাসাদ দাসী কুই আর-কে, একটা কাপড়ের বস্তায় ভরে, বস্তার মুখ সেলাই করা হলো। তারপর বস্তা সমেত ঐ মেয়েটাকে ফেলে দেয়া হলো শাসন খালের পানিতে!
হুই ছোট রানীর ভাষ্য অনুযায়ী, প্রাসাদের নিরাপত্তা রক্ষীরা কাপড়ের ঐ বস্তাটার মধ্যে ঐ মেয়েটির সাথে ঢুকিয়ে দিয়েছে ফং বড় রানীর দেয়া ঐ জিনিসগুলো!
শাসন খালের পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ বাঁধের জল কপাট খুলে দিলো সংশ্লিষ্ট তত্ত¡াবধায়ক। ঐ কাপড়ের বস্তাটা যার মধ্যে ভরা হয়েছে আস্ত একটা মানুষ, তারপর সেলাই করে দেয়া হয়েছে বস্তার মুখ।
সব কিছু আবার ভরে দেয়া হয়েছে পাতলা চামড়া দিয়ে তৈরি খানিকটা বাতাস ভর্তি একটা থলের মধ্যে, যাতে পুরো জিনিসটা পুরোপুরি পানিতে তলিয়ে না যায়!
সব কিছু সমেত সেই বস্তাটা খুব সহজেই পানির স্রোতের টানে অতিক্রম করে গেলো প্রাসাদ দেয়ালের সীমানা।
সব শেষে সেটা শাসন খাল দিয়ে ভেসে চেলে গেলো রাজধানী শহরের বাইরের সিয়ে জল খালের মধ্যে!
সিয়ে রাজ প্রাসাদে বড় অপরাধের বড় শাস্তির এমনটাই হচ্ছে একটা সাধারণ প্রচলিত ব্যবস্থা, যাকে বলা হয় : ‘ভাসিয়ে দিয়ে চলে আসা’!
ঐ রাতেই একই সময়ে ঘটেছিলো আরেকটা ঘটনা। প্রাসাদে আয়োজন করা হয়েছিলো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, গান আর অভিনয়ের আসর! পূর্ব বাগানে স্থাপন করা মঞ্চের সামনে দাঁড়িয়ে আমি দেখতে পেলাম, আজকের গীত নাট্য অনুষ্ঠানের মূল আয়োজক হচ্ছেন বড় রানী ফং শ্রে। ‘তিনি’ বসেছেন আমার দাদী হুয়াং ফু ফুরেনের পাশে। সাদা রেশমের কাপড়ের উপর পীচ ফুলের নক্সা খোচিত কারুকাজ করা একটা হাত পাখা দিয়ে সে তার মুখটা প্রায় ঢেকে রেখেছে। তাকে দেখে মনে হচ্ছে যেন কিছুই ঘটেনি! ঘটেনি কোন অস্বাভাবিক ঘটনা! কিন্তু হান ছোট রানী আর চিন ছোট রানীকে দেখলেই মনে হচ্ছে, ওরা খুবই ব্যথিত হয়েছে কুই আর-এর মৃত্যুতে! হান ছোট রানী আমাকে জিজ্ঞেস করলো, “হুই সিয়েন কেনো আসে নাই গীত নাট্য দেখতে?”, আমি বললাম, “সে অসুস্থ, নাটক দেখার অবস্থা ওর নেই এখন!” এরপর আমি লক্ষ্য করলাম, সে ঘাড় ঘুরিয়ে চিন ছোট রানীর কানে কানে ফিস ফিস করে বললো, “যাকে কেন্দ্র করে ঘটনাটা ঘটেছে সে তো নির্বাক হয়ে থাকতে পারে না!
তার তো গান শোনার মতো মনের অবস্থা থাকার কথা না! কুই আর নামের মেয়েটার প্রাণটা ঝরে গেলো, কতো তুচ্ছ কারণে! কি ভয়ানক দুঃখজনক বাস্তবতা!”
ফং বড় রানীর বাস ভবন ‘আবছায়া গৃহ’, আমার ব্যক্তিগত বাস ভবন শুদ্ধাচার অনুশীলন গৃহ থেকে মাত্র কয়েক’শ কদম দূরে! কিন্তু ঐ দিকে আমি খুব কমই পথ মাড়াই! হঠাৎ কখনও আবছায়া গৃহে রাত যাপন, আমার কাছে যেন নিতান্তই রাজ প্রাসাদের একটা আনুষ্ঠানিকতা ছাড়া অন্য কিছু নয়! বড় রানী ফং শ্রে-এর দুর্বোধ্য তীক্ষ্ণ স্বরের বলা কথা আমি সহ্য করতে পারি না! একই সাথে সহ্য হয় না ওর ঘন ঘন পরিবর্তনশীল মেজাজ! কখনও কখনও আমি ফং শ্রে-র ললাটের পাশে থাকা স্বর্ণের তৈরী মহামূল্যবান চুলের কাঁটাটার উপর দেখতে পাই একটা আবছা মুখ অবয়ব, সেটা হচ্ছে ফং কুয়ো দেশের হিংস্র বাঘের হাঁ করা মুখের একটা প্রতিচ্ছবি, যা কি না মৃত্যু নির্দেশক ছায়া বৈ অন্য কিছু নয়!
যা গ্রাস করে মানুষের আত্ম মর্যাদা, মনের মধ্যে জাগ্রত করে কুৎসিত অপমান বোধ! আমার মনের এই দুঃখের কথা একবার আমি ইয়েন লাঙের কাছে বলেছিলাম যে, ঐ দালানে গিয়ে সুদর্শন আর মর্যাদাবান এই নৃপতিকে, মুখে ধারণ করতে হয় কৃত্রিম মধুর হাসি, ঠিক যেমনটা করে একজন পতিতা নারী! যে মুখে আনে মিষ্টি হাসি শুধুমাত্র জয় করার জন্য খদ্দেরের হৃদয়! কেউ কেউ হয়তো বলবে, এটা হচ্ছে একটা অভূতপূর্ব, অযৌক্তিক আর অদ্ভুত ঘটনা!
পরবর্তী কালে আমি আর ইয়েন লাঙ আবছায়া গৃহ নামের প্রাসাদ দালানটার একটা নাম দিয়ে ছিলাম, ফং দেশ! আমাদের রীতিমতো অভ্যাস হয়ে গিয়েছিলো ঐ দালানকে ঐ দেশের নামে ডাকার! প্রতি বার আবছায়া গৃহের দিকে যাওয়ার সময় আমি ইয়েন লাঙের উদ্দেশ্যে বলতাম, “এবার, খাজনা দিতে ‘রাজা’ নিজেই যাচ্ছেন ফং দেশের দিকে!”
আমি ফং দেশের এই মেয়েটার সাথে কৃত্রিম ভালোবাসা দেখাই, প্রেমের ভান করি, করি ছিনালি! কিন্তু কোন ভাবেই এই দর্জ্জাল মেয়েটাকে সন্তুষ্ট করতে পারি না, কোন ভাবেই ওর মন ভরে না! ওর বাস ভবন আবছায়া গৃহে নজরদারির দায়িত্ব প্রাপ্ত গুপ্ত চর গোপনে একটা তথ্য দিয়েছে আমাকে! ফং বড় রানী প্রায়ই না কি, প্রাসাদের লোক জনের সামনে সিয়ে দেশের রাজ দরবারকে খাটো আর হেয় প্রতিপন্ন করতে সচেষ্ট থাকেন! ব্যঙ্গ আর পরিহাস করেন আমার ক্ষমতা হীনতাকে! অভিশাপ দেন পক্ষী ক‚জন ঘরের হুই ছোট রানী-কে!
সে যে এ রকম কাজগুলো করে, করতে পারে কিংবা করবে, তা আমি আগেই আন্দাজ করেছিলাম। কিন্তু আমি যা কখনোই আশঙ্কা করি নাই তা হচ্ছে বড় রানী ফং শ্রে-এর, ফং কুয়ো দেশের রাজা চাও মিয়েন সু-এর কাছে গোপন পত্র প্রেরণের ঘটনাটা! ঐ চিঠিটা রাজধানী শহরের বাইরে নিরাপত্তা তল্লাশী করার সময় জব্দ করা হয়, চিঠিটার সাথে তিনটা বুনো হাঁসের পালক গেঁথে দেয়া ছিলো, যা কি না নির্দেশ করে, বার্তাটি হচ্ছে অতি জরুরি আর অত্যন্ত গোপনীয়!
চিঠির মধ্যে পুরো কাগজের পাতাটা জুড়ে আছে শুধু অভিযোগ আর অভিযোগ! ফং শ্রে পরিষ্কারভাবেই তুলে ধরেছে ওর অসহায় আর অপ্রসন্ন ভাগ্যের কথা, প্রতি নিয়ত তাকে করা হয় কটাক্ষ! এখানে ওর ব্যক্তিত্বটা যেন হয়ে উঠেছে একটা অপমান আর নিত্য পরিহাসের ক্ষেত্রে! চিঠির শেষে সে তার পিতার কাছে করেছে এক বিপজ্জনক আর বিস্ময়কর আবদার!
ওর বাবা হচ্ছেন ফং কুয়ো দেশের রাজা। সে লিখেছে : ফং কুয়ো দেশের সম্রাট যেন জরুরি ভিত্তিতে একটা চৌকষ সেনা দল পাঠিয়ে দেন, সিয়ে রাজ প্রাসাদের দখল নেয়ার জন্য! আর এটা করলেই সিয়ে রাজ প্রাসাদে ওর প্রাপ্য মর্যাদা সমুন্নত হয়ে সুপ্রতিষ্ঠিত হবে!
প্রচন্ড রাগ আর ক্ষোভে আমার ভিতরটা পরিপূর্ণ হয়ে উঠলো। যে বার্তা বাহকটি চিঠি বহন করে নিয়ে যাচ্ছিলো, আমার গোপন নির্দেশে সেই লোকটার শিরোচ্ছেদ করা হলো। এরপর আমি ফং শ্রে-কে শুদ্ধাচার অনুশীলন গৃহে ঢেকে পাঠালাম। প্রাসাদের তত্ত¡াবধায়ক আমার হুকুমে বড় রানীর সামনেই, রানীর লেখা ঐ চিঠিটা জোরে পড়ে শুনালেন। অত্যন্ত বিরক্তি আর ঘৃণার সাথে আমি লক্ষ্য করলাম, ঐ সময়ে ঐ মেয়েটির মুখের অভিব্যক্তি। শুরুতে সে ছিলো খানিকটা ভীত আর শঙ্কিত! একটু পরেই ওর মুখে দেখা দিলো ঔদ্ধত্য আর অবজ্ঞার মৃদু হাসি! ওর ঠোঁট দু’টো দেখেই বুঝা যাচ্ছে, ওর মুখের মধ্যে পুরে রেখেছে একটা লাল রঙের চেরী ফল!
“তোমার আসল উদ্দেশ্যটা কি?”, প্রচন্ড রাগ দমন করে, সরাসরি ওর মুখের দিকে চেয়ে আমি এই প্রশ্নটা ওকে করলাম!
সেও সরাসরি আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বললো, “আমিও জানতাম তোমরা আমার চিঠির বহককে ধরবে, আমার লেখা চিঠিটা জব্দ করবে! আমি কিন্তু সম্রাটকে একটা বিষয় জানিয়ে দিতে চাচ্ছি, ওয়েন তা নামের এই মেয়েটা দূর্বল হলেও, সে কিন্তু অবজ্ঞা আর অবহেলা পাওয়ার মতো মেয়ে নয়!”
“কি উল্টাপাল্টা কথা বলছো! তুমি হচ্ছো একটা দেশের রানী। এখানে আছে তোমার উচ্চ সম্মান আর মর্যাদা। কে তোমাকে অবজ্ঞা করেছে, কার এত বড় সাহস?”
“আমি হচ্ছি একটা দেশের বড় রানী। কিন্তু আমার সাথে ভালোবাসার ছলনা করা হয়, শুধু মাত্র একটা সস্তা দরের মেয়ে লোকের কারণে! ওর জন্যই আমার সইতে হয় এত অবজ্ঞা!”, কথাগুলো বলেই ফং শ্রে-ওর মুখের মধ্যে থাকা চেরী ফলের ছোট দানাটা মুখ থেকে থু করে মাটিতে ফেললো।
তারপর হঠাৎ করেই দু’হাতে মুখ ঢেকে হাউ মাউ করে কেঁদে উঠলো! সে মাটিতে লাথি দিয়ে কাঁদতে কাঁদতে অনুযোগের সুরে বললো, “আমি যখন ফং দেশে ছিলাম, তখন দেশের রাজরানী আমার বাবা-মা আমাকে লালন করেছেন মূল্যবান মনি মুক্তার মতো যতœ করে! ছোট বেলা থেকেই কেউ কখনও আমাকে অবজ্ঞা করেনি, ভাবতেও পারি নাই, বিয়ের পর আমাকে আসতে হবে তোমাদের এই দূর্ভাগা সিয়ে রাজ প্রাসাদে!
উপরন্তু একটা সস্তা মেয়ে মানুষের কারণে আমাকে এখানে সইতে হচ্ছে লজ্জাজনক অবজ্ঞা।
হুই রানীর এত দম্ভ কেনো? ও’কোন নবাবের বেটি? ও’একটা ধূর্ত শেয়াল, ও’একটা ডাইনী!
সিয়ে রাজ প্রাসাদে হয় আমি থাকবো, না হয় ও’থাকবে।
সম্রাট, আপনি দয়া করে যে কোন একটা বেছে নিন!”
“তুমি কি হুই ছোট রানীর মরণ চাচ্ছো?”
“হয় ও’কে মেরে ফেলেন, অথবা আমাকে মেরে ফেলেন। দয়া করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিন সম্রাট!”
“যদি সিদ্ধান্ত নেই যে, তোমাদের দু’জনকে একই সাথে মৃত্যু বরণ করতে হবে, তা’হলে?”
হঠাৎ করেই কান্না থামালো ফং শ্রে! একটা বিস্ময় ভরা দৃষ্টিতে সে আমার মুখের দিকে তাকালো। তাৎক্ষণিকভাবেই ওর অশ্রæ ভেজা মুখে আবির্ভূত হলো একটা ঘৃণা আর বিদ্রূপে ভরা মৃদু হাসি!
“আমি জানি এটা হচ্ছে সম্রাটের একটা মশকরা পূর্ণ কথা। সম্রাট কখনোই ঠাট্টা মশকরা করে সিয়ে দেশের ভবিষ্যৎকে জলাঞ্জলি দিতে যাবেন না!”, ফং শ্রে ডানে বামে এদিক ওদিক তাকিয়ে এই কথাটা বললো। কথটা বললো সে, খানিকটা ভীত গলায়, আমার চোখের দিকে না তাকিয়ে!
“যদি সিয়ে দেশের ভবিষ্যতের বিষয়টা না থাকতো, তা’হলে আমি এখনই মৃত্যু পরোয়ানার নির্দেশক এক টুকরা সাদা রেশম কাপড়ের উত্তরীয় তোমার জন্য নিয়ে আসার হুকুম দিতাম!”
আমি ক্রোধের বহিঃপ্রকাশ স্বরূপ আমার জামার হাতা গুটিয়ে নিয়ে শুদ্ধাচার অনুশীলন গৃহ ছেড়ে বেড়িয়ে গেলাম। ফং বড় রানী একা বসে রইলো ওর আসনে ঐ দলানের ঐ ঘরে।
আমি প্রাসাদের ফুল বাগানের ভেতর অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে রইলাম। চোখের সামনে বাগান ভরা প্রস্ফুটিত বসন্তের পুষ্প রাজি আমাকে টেনে নিয়ে গেলো সুদূর অতীত দিনের ঘোরের মধ্যে। দেয়াল বরাবর অল্প উচ্চতায় উড়তে থাকা গাং চিলের ডাক আমার কানে এসে বিঁধছিলো, তৈরী করছিলো আবেগহীন শুষ্ক কর্কশ অনুভূতি! একটা কলা গাছের চারা পাড়া দিয়ে নষ্ট করলাম! একটু এগিয়ে গিয়ে আরও কয়েকটা কলা গাছের চারা পাড়া দিয়ে নষ্ট করলাম! এই সময়ে আমার চোখের ভিতর কেমন যেন একটা গরম অনুভূতি হলো, হাত তুলে চোখ স্পর্শ করলাম, আজব অনুভূতি! চোখ থেকে নেমে আসছে হীম শীতল অশ্রæর ধারা! আসলে সব কিছুর মূলে আছে মানুষের হৃদয়ের উষ্ণতা। আমার হৃদয়ের উষ্ণতা উবে গেছে, তাই উষ্ণ চোখের পানিও আমার কাছে মনে হচ্ছে বরফ শীতল!
অন্যান্য রানীরা যেন জোঁকের মতো হুই ছোট রানীর পিছনে লেগেছে। এর অন্তরালে আছে হুয়াং ফু ফুরেন এবং মং ফুরেনের ক্ষতিকর ইশারা! ওদের এই পিছনে লাগার ব্যাপারটা একটা পর্যায়ে এক রকম মাত্রা ছাড়িয়ে গেলো। সবচেয়ে অবাক করা দুঃখজনক ঘটনাটা ঘটলো শতদল ফুলের বাগানে ফুল ফোটা উৎসব উদযাপনের ঐ সময়টায়, যখন শারীরিক লাঞ্ছনা আর তীব্র অপমান সইতে হয়েছিলো হুই ছোট রানীকে, যেটা ছিলো ওর জন্য কল্পনার অতীত! শতদল ফুলের বাগানে প্রষ্ফুটিত ফুলের সৌন্দর্য উপভোগের নিমিত্তে প্রতি বছরই হুয়াং ফু ফুরেনের নির্দেশনায় নিয়মিত জাঁকজমকের সাথে পালিত হয় পুষ্প অবলোকন কার্যক্রম যা কি না রাজ প্রাসাদের একটা অন্যতম প্রধান আয়োজন! প্রাসাদের সব মেয়েরাই এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে। আমার মনে আছে, পুষ্প অবলোকন অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্র যখন পক্ষী ক‚জন ঘরে পৌঁছালো, তখন হুই ছোট রানী খুব সম্ভব অনুমান করতে পেরেছিলো, ঐ অনুষ্ঠানের চূড়ান্ত পরিণতি কি হতে পারে! সে আতঙ্কিত হয়ে আমাকে বলেছিলো, “অসুখের অজুহাত দেখিয়ে আমি বরং ওখানে না যাই! আমি ওদের সাথে একত্রে ওখানে থাকতে পারবো না, আমার খুব ভয় করছে!”
এমন কাজ করতে আমি হুই ছোট রানীকে নিবৃত্ত করলাম, আমি বললাম, “এ রকম একটা বড় অনুষ্ঠানে ওরা তোমার জন্য পীড়াদায়ক এমন কিছু করবে না। তোমার ঐ অনুষ্ঠানে যাওয়াটাই উচিত হবে। বরং না গেলে হুয়াং ফু ফুরেনের কাছে তোমাকে জবাবদিহি করতে হবে!”
হুই ছোট রানীর অবয়বটা একেবারে ফ্যাকাশে হয়ে গেলো, ওর চেহারায় ফুটে উঠলো একটা অনিচ্ছুক ভাব। (চলবে)