অনলাইন ডেস্ক : কানাডার এক পার্লামেন্ট সদস্য ও তার পরিবারের ক্ষতি করতে চাইছে বলে চীনের বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ এনেছে উত্তর আমেরিকার দেশটি। এ জন্য বেইজিংয়ের কড়া সমালোচনা করেছে অটোয়া। শুধু তাই নয়, চীনা কুটনীতিকদের বহিষ্কারের কথা বিবেচনা করছে কানাডা সরকার। বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য গত ৪ মে, বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জোলি চীনের রাষ্ট্রদূতকে তলব করেন।
অন্য দিকে চীনা রাষ্ট্রদূত কং পেইউ বৃহস্পতিবার অটোয়ার এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, বেইজিংয়ের একজন কর্মকর্তা কানাডিয়ান আইন প্রণেতা এবং তার পরিবারকে চীনবিরোধী অবস্থানের জন্য লক্ষ্যবস্তু করেছেন বলে যে অভিযোগ করা হয়েছে তার নিন্দা জানাই আমরা। এ অভিযোগকে “অপবাদ ও মানহানির” বলে আখ্যা দিয়েছেন তিনি। এ দিকে গত ৫ মে, শুক্রবার চীন বলেছে যে, তারা কনজারভেটিভ এমপি মাইকেল চংকে তার চীন বিরোধী অবস্থান নিয়ে ভয় দেখানোর চেষ্টা করেছে তা “অবাস্তব”।
তবে কানাডার গোয়ান্দারা বিশ্বাস করেন, চীনবিরোধী অবস্থান রোধে ওই পার্লামেন্ট সদস্যের স্বজনদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চেয়েছিল বেইজিং। এই রাজনীতিবিদ এর আগে চীনের বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনেছিলেন। কানাডার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোলি বৃহস্পতিবার বলেন, ‘আমাদের উপমন্ত্রীকে বিষয়টি চীনের রাষ্ট্রদূত কং পেইউকে বলবেন। কানাডা তার বিষয়ে হস্তক্ষেপ সহ্য করবে না এটা পরিষ্কার করবেন’।
তিনি বলেন, ‘যা হয়েছে তা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। ক‚টনীতিকদের বহিষ্কারসহ সব বিকল্প বিবেচনায় আছে’। গ্লোব অ্যান্ড মেইল পত্রিকায় প্রকাশিত কানাডিয়ান গোয়েন্দা প্রতিবেদন অনুসারে, কানাডার রক্ষণশীল রাজনীতিবিদ মাইকেল চং-কে টার্গেট করেছে চীন সরকার। সেখানে বলা হয়, উইঘুর সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর প্রতি চীনের আচরণ গণহত্যার সামিল; ২০২১ সালে কানাডার পার্লামেন্টে এমন একটি প্রস্তাব তোলার পর চীন সরকার তাকে টার্গেট করে। চীন অভিযোগ অস্বীকার করেছে। প্রতিক্রিয়ার চং-এর ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় বেইজিং।
গত ১ মে, সোমবার প্রকাশিত গেøাব অ্যান্ড মেইলের প্রতিবেদনে বলা হয়, বেইজিং চং-এর আত্মীয়দের সম্পর্কে তথ্য চেয়েছিল যারা হংকংয়ে থাকতে পারে। বিরোধীদের শায়েস্তা করার নজির সৃষ্টি করতে চাইছে চীন। বিবিসি নিউজকে দেওয়া এক বিবৃতিতে চীনের বিদেশি দূতাবাস বলেছে, চীনা ক‚টনীতিকদের বহিষ্কারের হুমকির বিষয়ে কানাডিয়ান কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকের সময় আমাদের রাষ্ট্রদূত কড়া প্রতিবাদ করেছিলেন।
অভিযোগগুলোকে ‘স্ব-নির্দেশিত রাজনৈতিক প্রহসন’ অভিহিত করে দূতাবাস বলেছে, চীন সবসময় অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতি মেনে চলে। এ দিকে এ ঘটনায় এখনও শক্ত পদক্ষেপ না নেওয়ায় জাস্টিন ট্রুডো ও তার সরকারকে একহাত নিয়েছেন মাইকেল চং। তিনি বলেন, ‘অনেক কানাডিয়ানের মতো আমারও পরিবার বিদেশে আছে।
কানাডিয়ানদের ভয় দেখানো এবং তাদের ওপর নিয়ন্ত্রণে বিদেশে তাদের পরিবারগুলোকে টার্গেট করা গুরুতর ও জাতীয় হুমকি’।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেছেন, গ্লোব এবং মেইলের প্রতিবেদনের পরই বিষয়টি সম্পর্কে জানতে পান তিনি। সাধারণত কোনও রাষ্ট্রদূতকে তলব করা একটি কুটনৈতিক হাতিয়ার; যা একটি দেশ অন্যের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে রাগ বা অসন্তোষ প্রকাশ করতে ব্যবহার করে। সূত্র : বিবিসি ও রয়টার্স