অনলাইন ডেস্ক : ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে গাছ ভেঙে, দেয়াল ধসে এবং পানিতে ডুবে দেশের আট জেলায় অন্তত ৩৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। সেই সঙ্গে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে মৌসুমি ফল ও ফসলের। সময় গড়ানোর সাথে সাথে স্পষ্ট হচ্ছে ক্ষয়ক্ষতির চিত্রগুলো।
ভারি বর্ষণ আর স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে কয়েক ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস সঙ্গী করে সোমবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ উপকূল অতিক্রম করে ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’। এর কয়েক ঘণ্টা আগে থেকেই ঝড়ো হাওয়া আর ভারী বর্ষণ শুরু হয় উপকূলের জেলাগুলোতে। সন্ধ্যা থেকেই বিভিন্ন উপকূলীয় জেলায় গাছ ভেঙে সড়ক বন্ধ হয়ে যাওয়ার খবর আসতে থাকে, বিদ্যুতের খুঁটি ভেঙে ও তার ছিঁড়ে বহু এলাকা অন্ধকারে ডুবে যায়।

সিত্রাংয়ের প্রভাবে-চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ড্রেজার ডুবে মারা গেছে ৮ শ্রমিক, ভোলা সদর, দৌলতখান, লালমোহন ও চরফ্যাশনে মারা গেছেন ৪জন। কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে গাছ পড়ে প্রাণ গেছে এক দম্পতি এবং তাদের চার বছরের শিশুসহ ৩ জনের। সিরাজগঞ্জের সদরে যমুনা নদীর একটি খালে নৌকা ডুবে মা ও ছেলের মৃত্যু হয়েছে। গাছ ভেঙে পড়ে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় দুজন এবং নড়াইলের লোহাগড়া, বরগুনা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৩ জন মারা গেছেন। পটুয়াখালীতে ট্রলার ডুবে মারা গেছেন এক শ্রমিক। নোয়াখালীর সুবর্ণচরে ১১ মাস বয়সি শিশু, গাজীপুরের কাপাসিয়ায় ৯ বছরের শিশু এবং মুন্সিগঞ্জে মা ও শিশুসহ ২ জন ও শরীয়তপুরে ৬৫ বছর বয়সি বৃদ্ধার মৃত্যু হয়ছে। এছাড়া কক্সবাজারে মিয়ানমারের নাগরিক ও শিশু সহ ২ জন, রাজধানীর হাজারীবাগে দেয়াল ধসে এক রিকশাচালক ও টাঙ্গাইলে ঝড়ের কবলে পড়ে মাইক্রোবাস দুর্ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্য ও এক আসামির মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

এদিকে, সিত্রাং’ এর প্রভাবে চট্টগ্রামের নিচু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশের বৃহত্তম পাইকারী বাজার খাতুনগঞ্জ। ঝড়ের প্রভাব কেটে যাওয়ায় চালু হয়েছে চট্টগ্রাম বন্দরের সব কার্যক্রম। অন্যদিকে, সিত্রাং এর প্রভাব কেটে যাওয়ায় স্বস্তি ফিরেছে সাধারণ মানুষের মাঝে। ভারি বর্ষন ও ঝড়ে বাগেরহাটে ডুবে গেছে অসংখ্য মৎস্য ঘের, বিধ্বস্ত হয়েছে বেশকিছু কাঁচা ঘর। উপড়ে পড়েছে বিপুল পরিমান গাছ। ঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপন করছে জেলা প্রশাসন। আশ্বাস দেয়া হয়েছে ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে- ‘সিত্রাং’ অতিদ্রুত উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে মধ্যরাতে উপকূল অতিক্রম করেছে। বৃষ্টি ঝরিয়ে ঘূর্ণিঝড়টি নিম্নচাপে পরিণত হয়ে স্থল নিম্নচাপ আকারে রুপ নিয়েছে।