অনলাইন ডেস্ক : ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডব ও জলোচ্ছ্বাসে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে সুন্দরবনের প্রাণ-প্রকৃতি।ঝড়ের কবলে পড়ে মারা গেছে হরিণসহ অন্যান্য প্রাণী। সোমবার (২৭ মার্চ) বিকালে বনের কটকা ও দুবলা এলাকা থেকে দুটি মৃত হরিণসহ আরও ৯টি আহত হরিণকে ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করেছে বনরক্ষীরা।

এ ছাড়া রিমালের তাণ্ডবে বনের অভ্যন্তরে ২৫টি টহল ফাঁড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। লবণপানি ঢুকে নষ্ট হয়েছে কমপক্ষে ৮০টি মিষ্টিপানির পুকুর।

সুন্দরবন বিভাগের খুলনাঞ্চলের বন সংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দো এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, ‘রবিবার (২৬ মে) বিকাল থেকে একটানা ২০ ঘণ্টা ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডব ও জলোচ্ছ্বাসে সুন্দরবনের প্রাণ-প্রকৃতির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। গাছপালার ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি বন বিভাগের বিভিন্ন বন অফিসসহ টহল বোট, টিনের চালা, জানালা-দরজা, সোলার প্যানেল ও অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ সময় জলোচ্ছ্বাসের কবলে পড়ে কটকা অভয়ারণ্যে অফিস ঘাটের জেটি ও পুকুর বঙ্গোপসাগর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। দুবলা, কটকা, কোচিখালি, বগিসহ বিভিন্ন বন অফিসসহ ২৫টি টহল ফাঁড়ির রান্নাঘরসহ অবকাঠামোর টিনের চালা উড়িয়ে নিয়ে গেছে।

তিনি আরও বলেন, ‘সুন্দরবনের অভ্যন্তরে মিঠাপানির পুকুরগুলোও জলোচ্ছ্বাসে লোনা পানিতে তলিয়ে গেছে। সুন্দরবনের ৮০টি মিঠাপানির উৎস পুকুরে ৮-১০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে লোনা পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় বনকর্মীদের পাশাপাশি বাঘ, হরিণসহ বন্য প্রাণীরাও সুপেয় পানির সংকটে পড়েছে। সুন্দরবনের বন্য প্রাণীরা অধিক উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে ভেসে গিয়ে মারা যাওয়ারও খবর মিলেছে।

মিহির কুমার দো বলেন, ‘সোমবার বিকালে সুন্দরবনের কটকা ও দুবলা এলাকার নদ থেকে দুটি মৃত হরিণ উদ্ধার করা হয়। এ সময় দুবলা এলাকা থেকে আহত আরও ৯টি হরিণ ভাসমান অবস্থায় উদ্ধার করে বনরক্ষীরা। তবে হরিণের পাশাপাশি আরও বন্যপ্রাণী মারা যেতে পারে। সেসব মৃত প্রাণীর খোঁজে বনরক্ষীরা তৎপর রয়েছে।

ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পূর্ব সুন্দরবনের করমজল বন্য প্রাণী প্রজনন ও পর্যটনকেন্দ্রের নানা অবকাঠামো। সেখানে দায়িত্বরত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির জানান, ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে এখানকার পর্যটক চলাচলের কাঠের পোল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভেঙেছে অসংখ্য গাছপালা। তবে পুরো সুন্দরবনের গাছপালাসহ কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা নিশ্চিত হতে সময়ের প্রয়োজন।