অনলাইন ডেস্ক : গ্রিসের দক্ষিণাঞ্চলীয় দ্বীপ গাভদোসের কাছে অভিবাসীবাহী একটি নৌকা ডুবে একজনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া নিখোঁজ রয়েছে দুইজন। তাদের উদ্ধারে এখনো উদ্ধার অভিযান চলছে। আর জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে পাঁচ বাংলাদেশিসহ ৯৭ জন অভিবাসীকে।
গত বুধবার ১০০ অভিবাসী নিয়ে গ্রিসের দিকে যাচ্ছিল কাঠের ওই নৌকাটি। কিন্তু গ্রিক দ্বীপ গাভদোস থেকে মাত্র ৪০ কিলোমিটার দূরে ডুবে যায় নৌকাটি। এদিন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গ্রিক কোস্ট গার্ড জানিয়েছে, একটি পণ্যবাহী জাহাজের সহযোগিতায় ৯৭ জনকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে। উদ্ধারের পর অভিবাসীদের গ্রিক দ্বীপ ক্রিটের হেরাক্লিয়ন শহরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
জীবিতদের মধ্যে পাঁচজন বাংলাদেশর নাগরিক। তাদের সবাই পুরুষ। অভিবাসীবাহী নৌকাটিতে আরো ছিল পাকিস্তানের ৫০ জন, সুদানের ৩৯ পুরুষ ও দুই নারী এবং সোমালিয়ার একজন পুরুষ। এ ছাড়া একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে এবং অপর দুই নিখোঁজ অভিবাসীর খোঁজে উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
উদ্ধার হওয়া অভিবাসীদের বরাত দিয়ে কোস্ট গার্ড জানিয়েছে, নিহত ও নিখোঁজ অভিবাসীরা পাকিস্তান ও সোমালিয়ার নাগরিক। তবে নৌকাটি ডুবে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হতে পারেনি তারা।
গ্রিসের পূর্বাঞ্চলীয় দ্বীপ কোসে তার আগের দিনও একটি নৌকাডুবির ঘটনা ঘটে। এতে দুই শিশুসহ দুই নারীর মৃত্যু হয়। গ্রিক কোস্ট গার্ড বলছে, মানব পাচারাকারীদের নিয়ে আসা ওই নৌকাটি তুরস্ক উপকূল থেকে ছেড়ে এসেছিল।
ওই ঘটনায় ২৭ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। আফ্রিকা, এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধ ও দারিদ্র্য থেকে পালিয়ে আসা মানুষের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নে ঢোকার অন্যতম প্রবেশপথ গ্রিস। চলতি বছর হাজারো অভিবাসী যাচ্ছে গ্রিসের বিভিন্ন দ্বীপগুলোতে। বিশেষ করে তুরস্কের উপকূল থেকে গ্রিক দ্বীপগুলোর দূরত্ব তুলনামূলক কম হওয়ায় বেশির ভাগ অভিবাসীবাহী নৌকা তুরস্কের উপকূল থেকে ছেড়ে যায়।
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার পরিসংখ্যান বলছে, এই বছরের অক্টোবরের শুরুর দিক পর্যন্ত ৪২ হাজারের বেশি অভিবাসী গ্রিসে গিয়েছে। তাদের বেশিরভাগই গিয়েছে সমুদ্রপথে। সংখ্যাটি অন্তত সাড়ে ৩৬ হাজার।
এদিকে গত মঙ্গলবার অক্টোবর গ্রিসের অভিবাসনবিষয়ক উপমন্ত্রী সোফিয়া ভলতেপ্সি সতর্ক করে বলেছেন, বিশ্বজুড়ে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবের সঙ্গে যুক্ত হওয়া মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার সংঘাত ইউরোপকে দীর্ঘমেয়াদি অভিবাসন চাপের মধ্যে ফেলবে।
তিনি আরো বলেছেন, অভিন্ন আশ্রয়নীতি বাস্তবায়নে ইউরোপীয় ইউনিয়ন সম্মত হলেও এটি এখনো কার্যকর হয়নি। এ ছাড়া যাদের আশ্রয় আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে বা ডিপোর্ট করতে একটি অভিন্ন ইউরোপীয় ব্যবস্থা প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন তিনি। ইউরোপীয় ইউনিয়নের অভিন্ন আশ্রয়নীতি ২০২৬ সালের জুন থেকে কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে।
সূত্র : ইনফোমাইগ্রেন্টস