অনলাইন ডেস্ক : বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের মন্ত্রিসভার বৈঠকে যুদ্ধবিরতি চুক্তি অনুমোদন করার কথা ছিল। যদি তা ঘটত, তাহলে শুক্র বা শনিবার থেকেই যুদ্ধবিরতি শুরু হয়ে যেত গাজায়।

তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং তার নেতৃত্বাধীন মন্ত্রিসভা ধারণা করেছিলেন, হামাস এখনও কিছু ছাড় চায়। তাই বৃহস্পতিবার চুক্তির অনুমোদন দেয়নি মন্ত্রিসভা।

তবে আজ শুক্রবার মন্ত্রিসভার বৈঠক শুরু হয়েছে। বৈঠকে অনুমোদন পেলে হয় শনিবার, নয়তো রোববারের মধ্যেই গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরু হবে বলে আশা করছে এ যুদ্ধের প্রধান মধ্যস্থতাকারী দেশ যুক্তরাষ্ট্র।

যুক্তরাষ্ট্রের বক্তব্য
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন বলেছেন, চুক্তির কয়েকটি আলগা বিষয় ঠিক করা হচ্ছে। রোববার গাজায় যুদ্ধবিরতি শুরুর ব্যাপারে তিনি আত্মবিশ্বাসী।

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জন কিরবি ওয়াশিংটনে বলেছেন, “যুদ্ধবিরতি হচ্ছে। তিনি জানিয়েছেন, আমরা এমন কিছু দেখছি না, যাতে বলতে হবে, এই প্রক্রিয়া ভেস্তে গেছে।”

নামপ্রকাশ না করার শর্তে যুক্তরাষ্ট্রের এক কর্মকর্তা বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, “হামাস যে বন্দিদের মুক্তি দিতে চাইছে, তাদের কয়েকজনের পরিচয় নিয়ে বিরোধ আছে। জো বাইডেন ও ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিনিধিরা এখনো দোহায় আছেন। তারা কাতার ও মিশরের মধ্যস্থতাকারীদের সঙ্গে বসে বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করছেন।”

বন্দিদের পরিবারের আবেদন
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর কাছে বন্দিদের পরিবারের পক্ষ থেকে আবেদন জানিয়ে বলা হয়েছে, তিনি যেন দ্রুত যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেন।

ইসরায়েলের মিডিয়ায় পরিবারগুলির যে বিবৃতি প্রকাশিত হয়েছে, তাতে তারা বলেছেন, “৯৮ জন বন্দির পরিবারের কাছে প্রতিটি রাত হলো দুঃস্বপ্নের। তাই বন্দিদের মুক্তির ক্ষেত্রে যেন আর একটাও রাত দেরি না হয়।”

হামাস যা বলেছে
হামাসের নেতা ইজ্জত রেশিক জানিয়েছেন, তারা যুদ্ধবিরতির চুক্তি পালনে দায়বদ্ধ। মার্কিন সংবাদমাধ্যম এপি নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, “মধ্যস্থতাকারীরা যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি প্রস্তাব করেছেন, সেটি স্বাক্ষর ও বাস্তবায়নের জন্য হামাস প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।”

প্রসঙ্গত হামাসকে সন্ত্রাসবাদী সংগঠন বলে ঘোষণা করেছে যুক্তরাষ্ট্র, জার্মানি, ইসরায়েল-সহ বেশ কয়েকটি দেশ।

গাজার পরিস্থিতি
বুধবার যুদ্ধবিরতির খবরে গাজার বাসিন্দারা রাস্তায় নেমে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। কিন্তু তাদের এই আনন্দ দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। কারণ, ইসরায়েল বুধবারও বিমান হামলা করেছে।

ইসরায়েল এখনো পর্যন্ত সরকারিভাবে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেনি। তাদের মন্ত্রিসভা ও সরকার চুক্তি অনুমোদন করেনি।

নেতানিয়াহুর কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে , মধ্যস্থতাকারীরা যখন তাদের জানাবে যে, হামাস সব কটি শর্ত মেনেছে, তারপর তারা চুক্তি অনুমোদন করবেন।

ইসরায়েলের সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, শুক্র বা শনিবার মন্ত্রিসভায় চুক্তি নিয়ে ভোটাভুটি হতে পারে। তবে নেতানিয়াহুর অফিস, এরকম কোনো সময়সীমা দেয়নি।

জেরুজালেমে যুদ্ধবিরতির প্রতিবাদ করে বিক্ষোভও হয়েছে। পুলিশ সেই বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে দেয়।