অনলাইন ডেস্ক : ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন যে পরিকল্পনা নিয়েছেন, সেই পরিকল্পনায় ফিলিস্তিনিদের সেখানে ফেরার কিংবা বসাবসের কোনো অধিকার নেই। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানিয়েছেন ট্রাম্প নিজে।

মঙ্গলবার ফক্স নিউজের সাংবাদিক ব্রেট বেয়ারকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ট্রাম্প। সেখানে ব্রেট বেয়ার তাকে প্রশ্ন করেন, গাজা উপত্যকা নিয়ে নতুন যে পরিকল্পনা তিনি নিয়েছেন, সেই পরিকল্পনায় গাজায় ফিলিস্তিনিদের ফিরে আসা কিংবা সেখানে তাদের বসবাসের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে কি না।

জবাবে ট্রাম্প বলেন, “না, তাদের সেই অধিকার নেই। কারণ তারা এর চেয়ে অনেক ভালো জায়গায় এবং ভালো আবাসনে বসবাস করবে।”

গাজায় বসবাসকারী প্রায় ২২ লাখ ফিলিস্তিনির জন্য ‘সুন্দর কমিউনিটি’ গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প। সেই কমিউনিটির জন্য সম্ভাব্য জায়গাও নির্ধারণ করা হয়েছে বলে সাক্ষাৎকারে জানান যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট।

কয়েক দিন আগে তিনি ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, মিসর এবং জর্ডানে গাজার ফিলিস্তিনিদের আবাসনের ব্যবস্থা হতে পারে। তবে তার এই ইঙ্গিতের পরপরই তাতে আপত্তি জানিয়েছে এ দু’টি দেশ। সম্প্রতি ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, সৌদি আরবের ভূখণ্ড অনেক বড় এবং রিয়াদ যদি চায়— তাহলে সেখানে সহজেই গাজার ফিলিস্তিনিদের বসবাসের ব্যবস্থা হতে পারে। তবে রিয়াদ এখন পর্যন্ত নেতানিয়াহুর এই বক্তব্যের কোনো প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

মঙ্গলবারের সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, “অন্যভাবে বলতে গেলে, আমি তাদের জন্য একটি স্থায়ী আবাসিক ভূমির কথা বলছি। কারণ গাজা এই মুহূর্তে বসবাসের অযোগ্য এবং এটিকে বাসযোগ্য করে তুলতে কয়েক বছর লাগবে।”

“আমরা গাজার ফিলিস্তিনিদের জন্য ৬টি, ৫টি কিংবা অন্তত ২টি কমিউনিটি গড়ে তুলতে পারি। সেগুলোতে যথাযথ নিরাপত্তা থাকবে এবং সেসব কমিউনিটির অবস্থান হবে গাজার কাছাকাছি।”

“আর এই সময়ের মধ্যে আমি গাজার মালিকানা গ্রহণ করব। ভবিষ্যতে একটি খুব সুন্দর একটি রিয়েল এস্টেট সম্পদে পরিণত হবে এবং সেজন্য বিশাল অঙ্কের অর্থ খরচ করতে হবে না।”

গত সপ্তাহে ট্রাম্পের সঙ্গে সাক্ষাৎ এবং বৈঠক করতে ওয়াশিংটন গিয়েছিলেন বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। বৈঠকের আগে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে প্রথমবারের মতো ট্রাম্প ঘোষণা করেন যে গাজা উপত্যকার দখল যুক্তরাষ্ট্র গ্রহণ করবে। ট্রাম্পের এই ঘোষণা বিশ্বকে কার্যত হতবাক করে দেয়।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত নেতানিয়াহু তাৎক্ষণিকভাবে ট্রাম্পকে সমর্থন দেন এবং তার এই ঘোষণকে ‘যুগান্তকারী’ বলে আখ্যায়িত করেন।

রোববার ইসরায়েলের মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে ট্রাম্পের ভূয়সী প্রশংসা করে নেতানিয়াহু বলেছেন, “ইসরায়েলের জন্য সম্পূর্ণ নতুন এবং অনেক ভালো দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে এসেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।”

সূত্র : এএফপি