বিনোদন ডেস্ক : প্রচলিত আছে, জোহরের জহুরি চোখে প্রচুর তারকা পেয়েছে বলিউড। কার মধ্যে সম্ভাবনা রয়েছে, কার নেই, তা নিখুঁত দৃষ্টিতে বলিউডকে বেছে দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি তাঁদের নতুন নতুন কাজের সুযোগ করে দিয়েছেন। তাঁদের কাছে করণ জোহর তাই গডফাদার। কিন্তু ১৪ জুনের পর তিনি যেন খলনায়কে পরিণত হতে চলেছেন।

১৪ জুন উপমহাদেশের বিনোদন দুনিয়াকে স্তম্ভিত করে কারও দিকে অভিযোগের আঙুল না তুলেই নীরবে-নিভৃতে এক বুক হতাশা আর বিষণ্নতা নিয়ে চলে গেলেন বলিউড অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুত। তিনি মৃত্যুর আগে কোনো চিরকুট লেখেননি। শোকে স্তব্ধ বলিউডে সুশান্তের মৃত্যু নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও চলছে সুশান্তের মৃত্যু নিয়ে নানামুখী গবেষণা। একে একে মুখ খুলছেন নেপোটিজমের শিকার অভিনয়শিল্পী ও পরিচালকেরা। আর এই ঝড়ে সবচেয়ে বেশি বিদ্ধ হলেন পরিচালক-প্রযোজক করণ জোহর।

সাধারণ মানুষের পাশাপাশি বলিউডের একাংশও সরাসরি করণ জোহরকেই দায়ী করলেন সুশান্ত সিং রাজপুতের অকালমৃত্যুর জন্য। এমনকি তাঁর বিরুদ্ধে বিহারের আদালতে মামলাও দায়ের করা হয়েছে আত্মহত্যায় পরোক্ষে প্ররোচনা দেওয়ার জন্য। এই সব বিতর্কের মধ্যেই ফের নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রে চলে এলেন করণ জোহর। সম্প্রতি মুম্বাই মিরর-এ প্রকাশিত খবরে জানা গেছে রাগে, ক্ষোভে, দুঃখে মুম্বাই চলচ্চিত্র উৎসব থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন করণ জোহর।

শোনা যাচ্ছে, সুশান্ত প্রসঙ্গে বলিউডে তাঁর সহকর্মীদের থেকে যে ব্যবহার পেয়েছেন, তাতে মর্মাহত করণ। স্বজনপোষণের বিতর্কে পাশে পাননি কাউকেই। আর তাই মুম্বাই চলচ্চিত্র উৎসবের মতো মর্যাদাপূর্ণ অনুষ্ঠান থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলেন তিনি। জানা গিয়েছে, এই সিদ্ধান্ত নিয়ে দ্বিতীয়বার ভাবছেন না করণ। বরং তিনি ইতিমধ্যে নিজের ইস্তফাপত্র জমা দিয়েছেন চলচ্চিত্র উৎসবের অন্যতম পরিচালক স্মৃতি কিরণের কাছে। মুম্বাই মিরর-এর রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, মুম্বাই চলচ্চিত্র উৎসবের চেয়ারপারসন দীপিকা পাডুকোনও নাকি করণ জোহরকে অনেক বুঝিয়েছেন এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে, তবুও কোনো লাভ হয়নি। করণ জোহর ছাড়া এ উৎসবের বোর্ড সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন জোয়া আখতার, কবীর খান, সিদ্ধার্থ রয় কাপুর, বিক্রমাদিত্য মোতওয়ানে ও রোহন সিপ্পি।

প্রসঙ্গত, সুশান্ত সিং রাজপুতের অকালমৃত্যুর খবরে শোকাহত করণ জোহর সরাসরি নিজেকে দোষারোপ করেছিলেন। মৃত্যুর খবরের ধাক্কা খানিকটা সামলে উঠেই সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্টে তিনি লেখেন, ‘গত বছর তোমার সঙ্গে যোগাযোগ না রাখার জন্য অনুতপ্ত আমি। কখনো কখনো মনে হয়েছিল তুমি তোমার জীবন নিয়ে বলতে চাও কাউকে, কিন্তু কোনো দিনই সেই অনুভূতি ভাগ করে নিতে পারিনি। আর কোনো দিন এই ভুল করব না।’ করণের এই উদার মন্তব্যটিও ভিন্ন চোখে দেখছেন কেউ কেউ। এই পোস্ট নিয়েও প্রশ্ন তুলেছিলেন। বলেছিলেন, কেন নিজে থেকে এই অপরাধবোধের প্রসঙ্গ তুললেন পরিচালক। তাহলে কী সবার চোখের আড়ালে থেকে গিয়েছে কোনো অজানা অপ্রিয় সত্য।

এই ঘটনার জেরে করণ জোহরকে আনফলো করতে শুরু করেছেন নেটিজেনরা। ইতিমধ্যে করণ জোহরের ২৫ লাখ ভক্ত ঝরে গেছে। এখন আছে ১ কোটি ৭০ লাখ। এখানে শেষ না। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে অনলাইন পিটিশন। নেটফ্লিক্স, অ্যামাজন প্রাইম, হট স্টারের মতো জনপ্রিয় প্ল্যাটফর্মেও যাতে এ তারকার কোনো ছবির প্রমোশন না হয়, তার জন্যও ভেবে দেখার অনুরোধ করা হয়েছে পিটিশনে। করণ জোহরকে পুরোপুরি বয়কটের দাবি জানানো হয়েছে।