সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে অন্টারিও এনডিপি প্রধান এবং প্রাদেশিক পার্লিয়ামেন্টের বিরোধী দলীয় নেত্রী আন্দ্রেয়া হরওয়াথ বলেন: “কোভিড-১৯-এর এই দুর্যোগের সময়টাতে আমাদের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আর স্বল্প আয়ের মানুষেরা দৈনন্দিন বাজার, বাড়ি-ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ভাড়া আর মর্টগেজ দিতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন। এটা একদমই পরিষ্কার যে কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় ওয়েভ পার করার জন্য মানুষের প্রয়োজন তাঁদের আয়-উপার্জন এর নিরাপত্তা (সিকিউরিটি অফ ইনকাম) আর ভালো কর্মসংস্থানের সুযোগ। অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের জন্যও এই সিকিউরিটি অফ ইনকাম আর মানবিক বেতন-ভাতা ভিত্তিক চাকুরীর প্রয়োজন। মানুষের প্রয়োজন সরকারি পর্যায়ে একটি শক্ত অর্থনৈতিক পরিকল্পনা।
সম্প্রতি প্রকাশিত অন্টারিও ফাইনান্সিয়াল অ্যাকাউন্টেবিলিটি অফিসারের ভাষ্য মতে প্রভিন্সিয়াল সরকার এই পেনডেমিক ব্যবস্থাপনার জন্য পাওয়া সহায়তার মধ্যে প্রায় ৬.৭ বিলিয়ন ডলার অব্যবহৃত রেখেছে, যার বেশির ভাগটাই ফেডারেল সরকারের দেয়া। আন্দ্রেয়া হরওয়াথ এবং স্কারবোরো সাউথওয়েস্ট-এর এমপিপি ডলি বেগম দাবি জানিয়েছেন এই অর্থের একটি অংশ স্কারবোরোর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আর স্বল্প আয়ের মানুষের সাহায্যে ব্যবহার করার।
এমপিপি ডলি বেগম বলেন, ‘এটা শুধুমাত্র সরকারের সদিচ্ছার ব্যাপার। প্রাদেশিক পর্যায়ে ফোর্ড সরকার বড় বড় সব কর্পোরেশনের পেছনে খরচ করতে যতটা আগ্রহী, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী অথবা স্বল্প আয়ের মানুষের কল্যাণে খরচে তারা ততটাই অনাগ্রহী’। ডলি বেগম সা¤প্রতিক ফেডারেল সরকারের থ্রোন-স্পীচ পরবর্তী রাজনৈতিক দরকষাকষির দিকে ইঙ্গিত করে বলেন যে, ‘এটা দুঃখজনক যে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আর স্বল্প আয়ের মানুষের কল্যাণের জন্য ফেডারেল এনডিপি নেতা জাগমিত সিং-কে সরকারের সাথে দর কষাকষি করে কল্যাণমুলক কিছু পদক্ষেপ আদায় করে নিতে হয়েছে। অথচ মুখে মুখে সব রাজনৈতিক দলই দাবি করে যে তারা মধ্যবিত্ত আর স্বল্প আয়ের মানুষের কথা ভাবেন’। ডলি বেগম বলেন যে, করোনা পেনডেমিক-এর অর্থনৈতিক প্রভাব কোনো ‘ব্যান্ড-এইড সল্যুশন’ দিয়ে মোকাবিলা করা যাবে না। এর জন্য দরকার সুচিন্তিত পরিকল্পনা, যা এনডিপি বারবার মানুষের সামনে নিয়ে এসেছে।
ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের সহায়তার পদক্ষেপগুলো নিতে প্রাদেশিক এবং ফেডারেল সরকারের ধীরগতিকে অগ্রহণযোগ্য উল্লেখ করে ডলি বেগম বলেন, করোনা ভাইরাস পেনডেমিক-এর শুরুতেই, এ বছরের এপ্রিলে এনডিপি প্রায় একই রকম একটি পরিকল্পনা পেশ করে, যার অন্যতম প্রস্তাবনা ছিল অবিলম্বে সমস্ত কমার্শিয়াল ইভিকশন বন্ধ করা, ৭৫% কমার্শিয়াল রেন্ট সাবসিডি, ক্ষুদ্র ব্যবসাগুলোর সেফ রি-ওপেনিং এর জন্য প্রয়োজনীয় অনুষঙ্গ (যেমন: প্লাষ্টিক ব্যারিয়ার ইত্যাদি)গুলোর জন্য আর্থিক সহায়তা, নন-প্রফিট এবং পাবলিক চাইল্ডকেয়ার এর সংখ্যা বৃদ্ধি এবং ইন্স্যুরেন্স কোম্পানীগুলোর অত্যাধিক চার্জ অথবা কভারেজ ডিনায়াল বন্ধ করা ইত্যাদি। দলীয়ভাবে এনডিপি এবং একজন জনপ্রতিনিধি হিসাবে ডলি বেগম নিজের অবস্থান থেকে এই ‘সেইভ মেইনস্ট্রিট প্ল্যান’ বাস্তবায়নে সর্বোচ্চ চাপ তৈরির জন্য কাজ করে যাবার সংকল্পের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন এবং সমাজের সবার সহায়তা চান।
এক নজরে এনডিপি-র ‘সেইভ মেইনস্ট্রিট’ প্ল্যান
পেনডেমিক শেষ না হওয়া পর্যন্ত:
* সমস্ত কমার্শিয়াল ইভিকশন, ইভিকশন এর হুমকি অথবা লক-আউট বেআইনী ঘোষণা করা
* ক্ষুদ্র-মাঝারী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য ইউটিলিটি বিল সাময়িকভাবে রহিত করা
* সর্বোচ্চ ১০,০০০ ডলার পর্যন্ত ৭৫% কমার্শিয়াল রেন্ট সাবসিডি ঘোষণা ক্ষুদ্র-মাঝারী ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য ‘সেফ রি-ওপেনিং’ এবং ‘রিমোট ওয়ার্ক সেট-আপ’ অনুদান প্রদান।
* ট্যাক্সি এবং রাইড-শেয়ারিং অপারেটরদের জন্য অটো ইন্স্যুরেন্স গ্রেস পিরিয়ড ঘোষণা
* ইন্স্যুরেন্স কোম্পানীগুলোর নির্বিচারে ‘বিজনেস ইন্টারাপশন’ ক্লাইম ডিনাই করা বন্ধ করা
* কমার্শিয়াল যানবাহন ইন্স্যুরেন্স রিবেট ঘোষণা করা।
* স্কুল বাস এবং স্কুলের ক্লাস রুম এ শিক্ষার্থীর সংখ্যা সীমিত করা।
* অলাভজনক (নন-প্রফিট) এবং সরকার পরিচালিত চাইল্ড-কেয়ার এর সংখ্যা বৃদ্ধি করা
* নারীদের প্রশিক্ষণ এবং এপ্রেন্টিসশীপ এর জন্য বিশেষায়িত ফান্ড এর ব্যবস্থা
* “ফুড ডেলিভারী ফী” সীমিত করা।
এই সেইভ মেইনস্ট্রিট প্ল্যানসহ অন্টারিও এনডিপি’র আরও নানান প্রস্তাবনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে দল-মত নির্বিশেষে সবাইকে www.ONTARIONDP.CA ওয়েবসাইটের TAKE ACTION অংশটি দেখার জন্য এমপিপি ডলি বেগম সর্বসাধারণকে বিশেষ অনুরোধ জানান।