অনলাইন ডেস্ক : ভারতের কাশ্মীরের পেহেলগামে হামলার জেরে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বড় পাঁচটি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বুধবার (২৩ এপ্রিল) ভারতের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার নিরাপত্তাবিষয়ক কমিটির বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত হয়। পরে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি সিদ্ধান্তগুলো সাংবাদিকদের জানান।

এসব সিদ্ধান্তের মধ্যে রয়েছে ইন্দুস পানি চুক্তি স্থগিত। বিক্রম মিশ্রি জানান, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সিন্ধু পানি চুক্তি আপাতত স্থগিত করা হচ্ছে। এ ব্যবস্থা অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত বহাল থাকবে। এ সিদ্ধান্তের ফলে যে পরিমাণ পানি পাকিস্তানের পাওয়ার কথা, চুক্তি স্থগিত করায় আপাতত তা ব্যাহত হবে। অর্থাৎ চুক্তি অনুযায়ী পানি পাকিস্তান পাবে না।

নয়াদিল্লির দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হলো আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধ করে দেয়া। বুধবার থেকেই পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের এই গুরুত্বপূর্ণ স্থলসীমান্ত বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ওই সীমান্ত দিয়ে যারা ভারতে এসেছেন, তাঁদের সবাইকে ১ মের মধ্যে ফিরে যেতে হবে।

তৃতীয় সিদ্ধান্ত হলো দিল্লিতে পাকিস্তানের হাইকমিশনে নিযুক্ত সব সামরিক উপদেষ্টাকে বহিষ্কার। তাদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করা হয়েছে। একইসঙ্গে ইসলামাবাদে ভারতের হাই কমিশনে নিযুক্ত ভারতীয় সামরিক কর্মকর্তাদের ফিরিয়ে আনছে নয়াদিল্লি।

চতুর্থ সিদ্ধান্তে বলা হয়েছে, দুই দেশের হাইকমিশনগুলোতে কর্মরত কর্মকর্তাদের সংখ্যা ৫৫ থেকে কমিয়ে ৩০ করা হবে।

পঞ্চম সিদ্ধান্ত হলো সীমান্তচৌকি বন্ধ ও দূতাবাসে কর্মীর সংখ্যা কমানোর পাশাপাশি পাকিস্তানিদের ভারতে আসাও সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। সে কারণে সব পাকিস্তানির জন্য সার্ক ভিসা বাতিল করার কথা জানানো হয়েছে। এই ভিসায় যারা ভারতে রয়েছেন, তাদের ফেরত যাওয়ার জন্য ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেয়া হয়েছে।

এদিকে হামলার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের বিচারের মুখোমুখি করা হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। এছাড়া এ হামলায় যারা পেছন থেকে কলকাঠি নেড়েছে তারা শিগগিরই কঠোর জবাব পাবে বলে হুমকি দিয়েছেন তিনি।

রাজনাথ হুমকি দিয়ে বলেন, “পেহেলগামে কাপুরষিত হামলায় আমরা অনেক নিরীহ মানুষকে হারিয়েছি। এ ঘটনায় আমরা গভীরভাবে মর্মাহত। যেসব পরিবার প্রিয়জনকে হারিয়েছেন তাদের প্রতি সহমর্মিতা জানাচ্ছি। আমি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করছি। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমাদের জিরো টলারেন্স নীতি রয়েছে। আমি দেশবাসীকে জানাচ্ছি সরকার যথাযথ ব্যবস্থা নেবে। এ হামলার সঙ্গে যারা জড়িত শুধুমাত্র তারা নয়, যারা পর্দার আড়ালে কাজ করেছে… অভিযুক্তরা শিগগিরই কঠোর জবাব পাবে। আমি দেশবাসীকে আশ্বস্ত করতে চাই।”

কাশ্মীরের হামলা নিয়ে অফিসিয়ালি এখনও কোনো বক্তব্য দেয়নি ভারত সরকার। এমনকি এই ঘটনায় আহতদের সংখ্যাও প্রকাশ করেনি মোদির দেশ। তবে নিরাপত্তা সংস্থাগুলো হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহভাজন তিন বন্দুকধারীর স্কেচ প্রকাশ করেছে।

সূত্র : এনডিটিভি