আহসান রাজীব বুলবুল, কানাডা : কানাডিয়ানদের স্বাভাবিক জীবন যাপনে জীবনের যত আকাঙ্ক্ষা, বুক ভরা স্বপ্ন, আর গতিময়তায় কোথাও কমতি ছিল না। ২০২০ এর বৈশ্বিক মহামারী হঠাৎ করেই সারা বিশ্বের সাথে যেন কানাডিয়ানদের জীবনের গতিও থামিয়ে দিয়েছে। যদিও করোনা মহামারীর প্রারম্ভ থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত কানাডা সরকারের নাগরিকদের জনস্বাস্থ্যর উপর এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের ব্যাপারে যে উদ্যোগ তা সারা বিশ্বে প্রশংসিত হলেও প্রকৃত অর্থে কানাডিয়ানদের মানসিক স্বাস্থ্যের উপর পড়েছে ব্যাপক প্রভাব।
এক গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্য মতে, করোনাকালীন সময়ে কানাডায় কমপক্ষে ৪০ শতাংশ নাগরিক মানসিক স্বাস্থ্য, আসক্তি বা অ্যালকোহল জনিত সমস্যার মুখোমুখি হয়েছেন। ইপসসের জরিপ অনুযায়ী, মহামারিকালীন সময়ে কর্মসংস্থান হারানো, সামাজিক বিচ্ছিন্নতা এবং ভ্রমণ সংক্রান্ত বিধিনিষেধের ফলশ্রুতিতে কানাডিয়ানদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।
এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, মহামারি শুরুর আগের তুলনায় এখন কানাডিয়ানদের মানসিক স্বাস্থ্যের অবস্থা খারাপ। এতে অ্যালকোহলে ব্যয় বেড়েছে। সমীক্ষায় প্রতি পাঁচজনে দু’জন কানাডিয়ান জানান করোনাকালীন তাদের মানসিক স্বাস্থ্য মহামারি শুরুর আগের চেয়ে খারাপ। এসময় কানাডিয়ানদের অ্যালকোহলে ব্যয় ২০ শতাংশ বেড়ে গেছে বলে উঠে এসেছে।
করোনাভাইরাসের বিস্তার পৃথিবীকে এক অনিশ্চিত অবস্থার মধ্যে ফেলে দিয়েছে। প্রতিনিয়ত সংবাদমাধ্যমে খবর প্রচার হচ্ছে কীভাবে একে ঠেকানোর নানা চেষ্টা সত্বেও নানা দেশে অবিশ্বাস্য দ্রুতগতিতে এই ভাইরাস ছড়াচ্ছে, হাজারো লোক আক্রান্ত হচ্ছে, অনেকে মারা যাচ্ছে, এক একটি দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থা রোগীর চাপে ভেঙে পড়ছে। এসব খবর দেখে, শুনে এবং পড়ে কোটি কোটি মানুষের মনে তৈরি হয়েছে তীব্র উদ্বেগ। কনাডাতেও এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে।
অন্যদিকে কানাডার বিভিন্ন প্রদেশে ইতিমধ্যেই ভ্যাকসিন বা টিকা নেয়া শুরু হয়েছে। যদিও অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ফ্রন্টলাইনার, স্বাস্থ্যকর্মী এবং বয়জৈষ্ঠরা আগে টিকা পাবে, তারপরও ধীরে ধীরে সবাই ভ্যাকসিন বা টিকা পাবে এমনটা প্রত্যাশা করাও কানাডিয়ানদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে বিরাট ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।